---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
দাদু ছোটবেলায় বলতো বন্ধুত্ব দেখে করবে। কেন বলতো বুঝিনি। এখন বুঝছি৷ টিফিন খেয়ে, নোটস নিয়ে, নিজের প্রেমিকার চিঠি লিখিয়ে নিয়ে, পরীক্ষার হলে সব টুকে নিয়ে ও যদি কম নম্বর পেতো, সে বলতো সব তোর জন্য হয়েছে। ট্রাম্প ও সেরকম এক বজ্জাত ছেলে৷ পাল্টিবাজ আর বেইমান শিরোমণিরা ও লজ্জায় মুখ লোকাবে ট্রাম্পকে দেখে।
শালা তোর জন্য কি না করা হলো৷ আমেরিকার সব গুজরাতিকে এক ছাতার তলায় আনলো দেশের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট ম্যানেজার। ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোর গু এর মতো এজেন্ডা গুলোকে গুজিয়ার রোম্যান্টিকতা মাখিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হলো৷ নিজে যেচে যেচে বুথ এজেন্টের মতো সব্বাইকে বললো ভবিষ্যৎটা আমাগো আর তেনাগোর, আর তুই আমাদের চোখ রাঙাচ্ছিস ব্যাটাচ্ছেলে কুইনাইন দেবো না বলে? প্রফুল্ল রায় বোতল ছুঁড়ে মারতো রে কমলা লেবু তোর ত্যাঁদড়ামো দেখলে!
আ মোলো যা, কুইনাইন দেবে না বলে নাকি প্রতিশোধ নেবে! রোজ হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, নিউইয়র্ক শহরে গণ-কবর দেওয়া হচ্ছে, বেওয়ারিশ লাশের মতো ফেলে রাখা হচ্ছে স্বজনের দেহ আর এখনো কমলালেবু ভাঙবে তবু মচকাবে না। এখনো অন্য দেশকে ধমকাচ্ছে চমকাচ্ছে। এখনো বলবে না ওদের ভুল হয়েছিল স্বাস্থ্য খাতে খরচ কমিয়ে, ওদের এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ভুল ছিল।
প্রতিশোধ নিবি কেমনে শুনি? যুদ্ধ জাহাজ পাঠাবি? মানুষ বাঁচলে তো প্লেন উড়বে, মিসাইল হামলায় নিহত হবে শিশু, অমানবিক অত্যাচার চলবে আবু গ্রাইবে। মিনশে বুড়ো সব সেনা দিয়ে জয় করা যায় না। হোয়াইট হাউসের ফাইলগুলো পড়লে জানতি ভিয়েতনামে কি হয়েছিল৷ এবার ভিয়েতনামকে আবার ভিভেকামুন্ড বলে দিস না!
মোদিজী এসব ছিঁচকাদুনের কথায় একবার কিছু দিলে বারবার দিতে হবে। এদের কাঁধে চাপালে কাল মাথায় বসে চুল ঝাকাবে। আজ কুইনাইন নিলো কাল যখন জানবে যে টয়লেট পেপারের জায়গায় জল দিয়ে আমাদের কায়দায় শৌচকর্ম করলে অনেক কাগজ, গাছকাটা বাঁচে আর হাইজেনিক ও,কমলা লেবু না ছুচু করিয়ে দেওয়ার লোক চেয়ে বসে। স্যামচাচার চাহিদার শেষ থাকবে না। কড়া চোখে দরদাম করুন।
আমরা সবাই এক্কাট্টা হয়ে নিন্দা করছি আমেরিকার রাষ্ট্রপতির। পারলে ওই যে মহিলা রাস্তায় নেমে থালা বাজিয়ে গো কোরোনা গো চিৎকার করছিল তাকে আর যে গোটা বাড়ি জ্বালিয়ে দিলো প্রদীপের জায়গায় বাজি ফাটাতে গিয়ে, তাকে ছেড়ে দিন। ওরাই বুঝে নেবে।
কুইনাইন, হামি সব পাবেন প্রতিবার। বদলে কিছু আমাদের ও ছাড়ুন। ক্যান্সারের ওষুধ সস্তায় দিন ভারতকে। আগে ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে ছাড় দিন আমেরিকায় ব্যবসা করতে, কোন প্রতিবন্ধকতা যে ভারতীয় কোম্পানির না হয়, US FDA যে ব্যানগুলো ভারতীয় বানিজ্যিক সংস্থার বিরুদ্ধে করে রেখেছে সেগুলো তুলে নিক। ট্রাম্প নিজে দেখুক যাতে আমেরিকায় ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা না হয় ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি গুলোর।
মোদিজী আমাদের সংবিধানে এখনো সার্বভৌমত্ব শব্দটা আছে। ওটাকে বেচে ট্রাম্প টাওয়ার বানিয়ে দেবেন না। এসব লোক কারোর বন্ধু হয়না। আজ কুইনাইন চাইছে কাল স্ট্যাচু অফ ইউনিটি চাইবে। পরশু বলবে তাজ মহলের জমিতে ফ্ল্যাট বাড়ি বানাবে। দেশ না ট্রাম্প পরিবারের ফার্ম হাউস এটা। ভাগ!
©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment