| আজকের দিন, ধন্যবাদের দিন |
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকার আজ ১৩৫তম দিন। লিপইয়ার বলে। অন্যবছর হলে ১৩৪তম দিন হতো। আজ আমার থেকে ঠিক ৪বছরের বড় মার্ক জুকারবার্গ থেকে ৬৫ বছরের বড় মৃণাল সেনের জন্মদিন। আজ ইজরায়েল স্বাধীনতা পায়, আজ ৯৯৮জন নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয় ও ২৫জন মারা যায় ভারতে। আজ ও বিভিন্ন কমিউনিটি কিচেন থেকে কয়েক হাজার খাবারের প্যাকেট বিভিন্ন হাতে পৌঁছে গেছে, আজ ও অনেকে পায়ে হেঁটে ঘরের আরো কয়েক কিলোমিটার কাছে পৌঁছেছে। আজ ও সরকারগুলো ভাবছে! ভাবছেই।
এরকম একটা ঘটনাবহুল দিনে অন্য এতাকিছুর মাঝে ও যারা আমাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, কবিতা লিখেছেন, ছবি পোস্টিয়েছেন, আমার বিভিন্ন ছবি নিয়ে ভিডিও বানিয়েছেন তাদের অন্তর থেকে ভালোবাসা রইলো। আমি আর বোধহয় তথাকথিত Man হতে পারবো না। আর বোধহয় বয়স নেই৷ অগত্যা সিনেমা হলে কাঁদবো, ভালো লেখা পড়লে গলার কাছে দলা পাকাবে, এতো ভালোবাসা পেয়ে খুব খুব আনন্দে চোখ দিয়ে জল বেড়োবে৷ এবার ও হয়েছে!
শেষবার জন্মদিনে দিল্লির অফিসের বন্ধুরা আমার জন্য কেক এনেছিল। কেক এ লেখা ছিল, NRC For MRG। আমার এনআরসি নিয়ে চুড়ান্ত সমালোচনার কারণে। এনআরসি হলে প্রথমে আমাকে বাংলাদেশে পাঠানোর খুনসুটি ছিল৷ গুলশন এলাকা ছাড়া ফ্ল্যাট নেবো না বলেছিলাম। তার ও আগের বছরের ছবি জানালো ২০১৮ সালে আমরা আকন্ঠ পান করে, পরেরদিন অনেক দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। তার আগের বছর খুব প্রিয় কিছু উপহার পেয়েছিলাম। তার ও আগে ভোট ছিল এই দিনে, তার ও অনেক আগে দাবদাহ! মে মাসে যেমন হয়!
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকগুলো মিসড কল আর মেসেজ পেয়েছি৷ কাউকে আলাদা করে জানানো হয়নি। জানাতে হবে। যে মেয়েরা কয়েক বছর আগে ও দাদা বলতো তারা কাকু বলে, আয়নায় কয়েকটা পাকা চুল নজরে এসেছে। মুখ? না কোঁচকায়নি।
ব্রাশ করে, ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নরম তোয়ালে তে মুখ মুছে ফের আয়নায় দেখলাম। কই? আমার চোখ তো সেই কৈশোরেই পরে। ওই তো স্কুলের বাস থেকে কেউ প্রেমপত্র ছুঁড়ে দেবে, কেউ কলেজের সিঁড়িতে চা রেখে যাবে অনন্ত আড্ডার মাঝে, কেউ প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ নেবে, প্রথম কিনে খাবো একটা লম্বা সিগারেট, ফের ভবানীপুরের তৃপ্তি বারে যাবো সস্তায় পুষ্টিকর মৌতাতে। আমার বয়স একই আছে। ২০২০ এর জন্মদিনে ও ছাড় দিয়েছে সরকার! এ বছর বয়স বাড়ছে না। এই বছরটা জীবন থেকে বাদ।
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment