| দুনিয়ার মত্ত এক হও, হিপোক্রেসি ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও |
---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
২,৪৮,০০০,০০০,০০০০ টাকা প্রতি বছর। মাল না খেয়ে চোখে ধাঁধা লেগে গেল নাকি? বেশ! গোটা গোটা করে লিখছি। দু’লক্ষ আটচল্লিশ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর এক্সাইজ ডিউটি থেকে ঠিক এই টাকাটাই ভারত সরকার পায়। একদিন দেশে মদ বন্ধ থাকলে ৭০০ কোটি টাকা লোকসান হয়। মহারাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি দামে মদ বিক্রি করে, আসলে ৩০০% এক্সাইজ ডিউটি নিয়ে মদ বিক্রি করে। ব্রহ্মান্ডের জেঠু আর সমাজের জেঠিমারা নিশ্চিত জানেন এই সংখ্যাগুলো?
সরকার খুব বেশি দিন মদের দোকান বন্ধ রাখতে পারে না। সবচেয়ে বেশি অর্থ কোষাগারে আসে এর থেকে। এবার যদি বিহার, গুজরাটের মতো একেবারের বন্ধ করে দিতে হয়, সে এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু যারা একটা মদের দোকানের ভীড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে তারা গোটা দেশে মদ্যপান বন্ধ করবে হুজুর?
যদি মদই যতো নষ্টের গোড়া হয়, তবে মদটা নিষিদ্ধ করা হোক না। সেটা করলে কি হতে পারে তা এই কয়েকদিনে কালোবাজার দেখে মানুষ বুঝুক। ৩৫০টাকার মদ ২০০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দোকানদার নিজে কালোবাজারিদের মদ বিক্রি করে বলছে দোকান লুঠ হয়ে গেছে। বাড়িতে সব্বাই মদ বানানোর চেষ্টা করছে! ধন্যবাদ প্রশাসনকে দোকান খোলানোর জন্য। এরপর ফের বিষ মদ বাজারে ফিরতো।
সবকিছুতে মত্তদের দোষ দেন কেন? দেন কারণ আপনার হয় প্রিভিলেজ আছে নয় হিপোক্রেসিতে ঠাসা। প্রশাসনকে দোষ দেন না কেন? তাদের প্ল্যান করার দরকার ছিল না? তাদের নজরদারির প্রয়োজন মনে হয়নি? তাদের এটা মনে হয়নি যে এতো কম সময়ের জন্য দোকান খুললে ঠিক এতোটাই ভীড় হতে পারে? তাদের বেতনের একটা বড় অংশ ও তো এই টাকা থেকে আসে।
অনেকে ভীড় নিয়ে হাহাকার করছেন। এরা হাল্লারাজার সেনার মিষ্টির জন্য কাড়াকাড়ি দেখলে ও একই জিনিস করতেন। আসলে হাগরে হাবাতে সেনার মন্ডা মিঠাই দেখে ঝাপিয়ে পরা দেখে সমালোচনা করা সহজ, হিরক রাজার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা কঠিন। দুম করে যন্তরমন্তর ঘরে ঢুকিয়ে দেয় যদি রাষ্ট্র!
আর সব কথাতে মদ্যপ মদ্যপ করবেন না। মদ্যপায়ীরা ওদের টিমে নেয় না। ওরা মত্তদের কলঙ্ক। বাংলা আর ইংলিশটা ঠিক করে জানুন। মদ্যপ, মত্ত আর মদ্যপায়ীদের মধ্যে তফাতটা বুঝতে শিখুন। Drinker আর Drunkard এর ব্যবধানটা। চললাম।
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment