কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Sunday, May 24, 2020

বাংলার বাইরে ওদের খবর পাঠান, ওদের বাংলা ভালো নেই

| বাংলার বাইরে ওদের খবর পাঠান, ওদের বাংলা ভালো নেই |

#এটাবিপুলশেয়ারকরুন

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

যে এক বর্ণ বাংলা বোঝেনা, আলটপকা টুইট করে, কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করছে বাঙালির সাথে মিশে যেতে, সে মানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার ৫০লাখ টাকা ব্যক্তিগতভাবে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে দিয়েছেন। রাজ্যের মারোয়ারী সমাজ ও নেমে পরেছে অর্থ সংগ্রহে। শেফ বিকাশ খন্না এক লাখ খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দেবেন ঠিক করেছেন বাংলার বিভিন্ন এলাকায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাঁচ কোটি টাকা দান করছেন৷

কিন্তু এবার আমাদের হাত পাততে হবে বাকিদের কাছে। মোবাইলের কনট্যাক্ট লিস্ট দেখুন। গোটা পৃথিবীতে বাঙালি ছড়িয়ে।বাঙালি নয় কিন্তু বাঙালি হয়ে গেছিল ভাতে মাছে এরকম তামিল তেলেগু, বিহারি, মারোয়ারী যারা ছড়িয়ে। যারা বাংলাকে আজীবন ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ওদের কাছে পৌঁছতেই হবে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিয়ে। মমতা বন্দোপাধ্যায় একা এটা পারবেন না। দিলীপ ঘোষ, মোহাম্মদ সেলিম, অধীর বাবুরা এগিয়ে আসুন। বাংলার তারকারা এগিয়ে আসুন। সৌরভ দাদা এগিয়ে আসুন।

অমিতাভ বচ্চন কই? যে কলকাতার জামাই আর যে উদ্দাত্ত কন্ঠে গেয়েছিল "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে"। উনি ব্যস্ত থাকেন কিন্তু ওনাকে বলতেই হবে ওর প্রিয় শহর তছনছ হয়ে গেছে। শাহরুখ খানের কাছে পৌঁছাতে হবে। খান সাহেবের হৃদয় অনেক বড়। ইনসাল্লাহ এই ঈদে উনি বাংলার জন্য নিশ্চিত কিছু ঘোষণা করবেন।রানাঘাটের মেয়ে রাখি, শর্মিলা ঠাকুর,বিদ্যা বালান, গুলজার, সুজিত সরকার, সুজয় ঘোষ, দিবাকর ব্যানার্জি, অরিজিৎ সিংহ, কুমার শানু, অভিজিৎ, রানী মুখার্জি, কাজল, বিপাশা বসুর কাছে খবরটা পৌঁছে দিতে হবে। বাংলা ভালো নেই। ধুঁকছে। পাশে চাইছে। হাত ধরুন। 

নম্বর থাকলে মেসেজ করুন, খবর পাঠান অনুস্কা শংকর আর নোরা জোনসকে। ওদের বাবার শহর ভালো নেই৷ খবর পাঠান অমিতাভ ঘোষকে। হাংরি টাইড ভালো নেই, সুন্দরবন ভালো নেই৷ যাদবপুরে যার পৈতৃক ভিটা সেই ঝুম্পা লাহিড়ীকে জানান, বাংলার ক্ষত এখন ঠিক কতখানি। প্রবাসী মনকাতর বাঙালিকে জানান ওদের প্রয়োজন এখন ঠিক কতোখানি৷ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় আরো কয়েকজন নোবেলবিজয়ীকে আপিল করতে বলুন না। 

আচ্ছা গোটা পৃথিবীর যে বিশাল বিশাল কোম্পানির সিইওরা বাঙালি, তাদের কাছে মলিন রাজ্যবাসী হয়ে যাওয়া যায় না? বলা যায় না, " চিনতে পারছো বাবু, আমি তোমার শিকড় বলছি। তুমি দুর্গা পুজোর সময় আসতে আমার কাছে। বুড়ির চুল আর এগরোল খেতে ঠাকুর দেখে। ওই চারদিন মা ও কিচ্ছু বলতো না। চিনতে পারছো? আমি খুব অসুস্থ বাবু"।

বিশ্বাস করুন বাংলার বাইরে কাজ করে আমি বুঝেছি বাংলা নিয়ে অবাঙালিদের ও আবেগ কতোখানি৷ দিল্লিতে বাঙালি শুনে পাঞ্জাবী ট্যাক্সি ড্রাইভার বলেছিল ভাড়া নেবো না। কারণ আমি নাকি সেই রাজ্যের লোক যেটা ওর সেকেন্ড হোম। মুম্বাইয়ে ঘোষ পদবি শুনে এক এক আগ্রওয়াল চোস্ত বাংলাতে বলেছিল, "দাদাভাই আমি ও বাঙালি তবে নিরামিষাশী। আমি ওল্ড মংক আর আলুভাজা খাই"। বিশ্বাস করুন আমি এরকম আইয়ার ব্রাহ্মণকে চিনি যে প্রতিবছর অপেক্ষা করে থাকে কবে অষ্টমির অঞ্জলি দিয়ে আরসালে বিরিয়ানি প্যাদাবে। ওরা আসবে, অঅভিমানিনীকে মানাতে ঠিক আসবে ওরা। অনেকে তো বাংলা পড়ে ও৷ ঠিক গলার কাছে দলা পাকাবে। ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে পরবে। 

বাংলা কি মুখার্জি ব্যানার্জি ঘোষ বোস মন্ডল সাহার নাকি? এই বাংলা সিরাজুদ্দৌলার, এই বাংলা আন্টনি ফিরিঙ্গির, মাদার টেরিসা আর রোনাল্ড রসের। এর শ্বাস প্রশ্বাস জুড়ে আছে পাঞ্জাবী আর বিহারির সহবস্থান। এর শিরায় শিরায় আফতাব আর অনাদির নকশিকাঁথা। এই বনস্পতির ছায়াতেই তো কতো হাজার জ্যোতিস্ক বেড়ে উঠেছিল তারপর উড়ে গেছিল। বাংলা বৃদ্ধাশ্রম হয়ে ঠিক অপেক্ষারত ছিল মায়ের মতো। " এসেছিস বাবা। আয় ফ্যানের তলায় বোস। সরবত এনে দিচ্ছি ঘামটা শুকোক। দুপুরে তোর প্রিয় মাছটা রাঁধা। বাবাকে বলেছিলাম সকাল সকাল বাজার করতে। বিকেলে কিন্তু একদম টইটই করে ঘুরবি না"।

বাংলা মা ভালো নেই৷ খুব খুব অসুস্থ। আমার এই লেখাটা দিল্লি দুবাই স্যানফ্রান্সিস্কো বা সোভিয়েত, সন্তানদের প্লিস বলুন পাশে দাঁড়াতে। অনেকগুলো মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাচ্ছে। লজ্জায় মাথা খেয়ে বলছি, টাকাটাই লাগবে আসলে এই সময়। নয়তো প্রিয়তমা কবেই বা টাকার কথা ভেবেছে। ওর হৃদয় তো দীঘির মতো গভীর, ভূবনডাঙার মাঠের সমান প্রায়। 

©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment