কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Sunday, May 24, 2020

দিনে হোক বা রাতেরবেলা, পোঁছে যাচ্ছে ভাতের থালা, দাঁড়িওয়ালার তত্ত্বতে

| দিনে হোক বা রাতেরবেলা, পোঁছে যাচ্ছে ভাতের থালা, দাঁড়িওয়ালার তত্ত্বতে |

#KarlMarx202

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

রোজ গরম ভাত, ডাল, বড়া, সব্জি ১২০০ লোকের জন্য কয়েকটা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো ছেলেমেয়ে পোঁছে দিচ্ছে। কিছু মানুষকে রিলিফ দেওয়ার ফন্দি। এইরকম হাজার হাজার মানুষকে কয়েক ডজন হেরো মানুষ বিভিন্ন পাড়াতে একবেলা খাওয়াচ্ছে।নৈহাটির কমিউনিটি কিচেনে রোববার দেখে আবার মাংস ভাত ও খাওয়ানো হয়েছে। হাজার লোককে রুই মাছের ঝোল আর ভাত খাওয়াবে বলে বেচুবাবুর মতো টাকা ও চেয়ে যাচ্ছে। এই উন্মাদদের নিয়ে লিখবো না আমরা? আমরা লিখবো না?

এই কাজগুলো বেশীদিন চালাতে পারবে না এরা। এনজিও র মতো টানা অর্থ সাহায্য না পেলে কেউ পারে না৷ এই কাজটা ওদের করার ও কথা না। যাদের কথা তারা মন্দির মসজিদ নিয়ে বেশি ভাবিত, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মূর্তি বানিয়েছেন ৩০০০ কোটি টাকায়, আকাশপথে ফুলের পাপড়ি ছড়াতে বলেছেন।

বিগত অনেক দশক ধরে দাঁড়িওয়ালার মুখ নিয়ে সেমিনার, সেশন, সাধ্যমতো ধুমসো বই পড়া, না না আঙ্গিকে বক্তৃতা কপচানো চলছে আজকের দিনে। যেরকম আগের দিন গোটা পাড়া হুলিয়ে কাঁদলো ইরফান আর ঋষির মৃত্যুতে। এদের ভাব বিকার নেই। একবগগা হয়ে খালি টাকার জোগাড় করে চলেছে, খাবার প্যাকেট বানিয়ে চলেছে, ক'জনকে খাওয়াতে পারলো তা জাহির করে চলেছে। 

"Philosophers have all interpreted the world in various ways, the point however is to change it"। আমরা অনেকগুলো এনগেজমেন্টের মাঝে একটা এনগেজমেন্ট রেখেছি সময় সময় পরিযায়ী শ্রমিক, কাজ হারানো মানুষ আর খেতে না পাওয়া সহনাগরিকের জন্য রোদনের৷ কিন্তু আমাদের সমব্যথী হয়ে বা চোখের জলে তো ওদের পেটটা ভড়বে না। Point however is to change it! ওই Change টাই এই কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছে যারা, তারা আনছে। বাকি কিচ্ছুর কোন মূল্য নেই এখন। 

যারা দুমুঠো ভাত এগিয়ে দিয়ে, বিশাল কিচ্ছু করছি না এমন ভাব করে ফিরে যাচ্ছে, তারা স্রেফ খাওয়াচ্ছে না নিরন্ন মানুষদের বরং তাদের আত্মসম্মান ও অক্ষুণ্ণ রাখছে। ওদের জিজ্ঞেস করুন, চারপাশে কতো মধ্যবিত্ত পরিবার আছে, ব্যাংকের টাকা শেষ এদিকে একবেলার খাওয়া চাইতে ও লজ্জা।

কার্ল হাইনরিশ মার্কস খুশিই হতেন আজকের দিনে সেই এক দস্তাবেজ, পুঁথি না পড়ে, বক্তৃতা না শুনে টানা কমিউনিটি কিচেনের জন্য যারা সকাল থেকে সন্ধে খেটে চলেছে তাদের দেখলে। হয়তো দাঁড়িবুড়ো নিজে ও পরিবেশনের কাজে লেগে পরত। Point however is to change it যে! 

এই আশেপাশের কমিউনিটি কিচেনগুলোর কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্যে অর্থ দরকার। ক্যাপিটাল! প্লিজ যে যতোটা পারেন দিন। দুটো সিগারেট প্যাকেটের খরচ বা সুইগি থেকে অর্ডার না দিয়ে সেই টাকাটা। এই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর অভ্যেসটা জিইয়ে রাখুন, এই অসময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে পরাটা বাঁচিয়ে রাখুন। কাল আমার আপনার কাজটা গেলে,  সব্বার প্রথম দেখবেন ওরাই ভাতের থালা এগিয়ে দিচ্ছে। এদের শৃঙ্খল ছাড়া হারানোর কিছু নেই আর জয় করার জন্য আট কোটি বাঙালির হৃদয় পরে রয়েছে!

পুনশ্চঃ নৈহাটি, যাদবপুর, টালিগঞ্জ সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে কমিউনিটি কিচেনগুলো চলছে সেখানে টাকা পাঠানোর নম্বর গুলো কমেন্ট বাক্সে দিচ্ছি। যার যেখানে ভালো লাগে ওখানে টাকা পাঠান। যতোটা পারেন৷ মানুষকে রিলিফ দেওয়ার চেয়ে বড় কোন কর্মসূচি থাকতে পারেনা। 

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment