কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Sunday, October 15, 2017

জিয়া নস্টাল হাঁপিয়ে গেলে

| জিয়া নস্টাল হাঁপিয়ে গেলে |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

আমাকে কেউ মামলেট বানিয়ে আর খাওয়ায় না। আগে খাওয়াতো। সন্ধ্যাবেলা কোন মধ্যবিত্ত বাড়ি গেলেই চা আর সাথে মামলেট আসতো।

যেরকম রোববার মানেই গরম লুচি আর সাদা আলুর তরকারি ছিল। হালখাতার মিল্কোস ছিল, স্বাধীনতা দিবসের শিঙারা লাড্ডু ছিল। শীতকালে হাঁক মুরির মোয়া, চিড়ার মোয়ার।

তখন স্টার জলসা ছিল না, ব্লু হোয়েল ছিলনা, ওয়াটসআপ ও গবেষকের মস্তিস্কে। থাকার মধ্যে জন্মভূমি, খাস খবর।

আগে হাঁক দিয়ে জুঁই ফুল মালাও তো সন্ধেবেলা যেত। পিছন পিছন ঘটি গরম, বেশ রাত হলে কুলফি। এখন কেউ হাঁক সচারচর দেয় না। ইন্ডিসেন্সি বলে। শীততাপনিয়ন্ত্রিত শুরিখানায় ফিসফিস করে লোকে কথা বলে।

কোন রেস্তোরাঁ কবিরাজি কাটলেট, মোগলাই পরোটা, তেলওয়ালা কাতলা মাছের ফ্রাই বিক্রি করেনা। লম্বা বেগুন ভাজা, শালপাতায় ভাত,  ছোলার ডাল আর হিং এর কচুরি ও নেই। থাকার মধ্যে সেজওয়ান সস।

ছাদে হারমোনিয়াম রোদে দিত যে আকর্ষণীয় দিদি, তার বিয়ে হয়ে গেছে। অনেক বছর এ পাড়ায় আসেনা। শুনেছি বর বড় কাজ করে বিদেশে আর ও ঘর সামলায়। মানে প্রবাসে পুঁই শাক বানাতে চেষ্টা করে আরকি নিঃসঙ্গতা কাটাতে।

ছাদে তো আচারের বয়াম ও থাকতো। দিদা বানাতো। শীতকালে পিঠে রোদ লাগিয়ে উকুন বেছে দিত কাজের মেয়েটি। ঠাকুমার।

ফোনও তো একটাই ছিল গোটা বাড়ির। তিনবার রিং হয়ে কেটে যাওয়া মানে ওর ফোন আসবে। স্কুলবাস থেকে ছুঁড়ে দেওয়া হবে কাগজের মন্ড। আই লাভ উই। প্রেমের খেলা মা বাবাকে ডজ করে।

বিকেলে খেলার মাঠ ও তো ছিল। ক্যাম্বিস বল, কালো রাবার বল, বুম বুম বুমার। বিগ ফানের হাজারো ক্রিকেটারের ছবি জমানোর হিড়িক। কফিটোসের লাভ কার্ড মনে পরে? ছেলে মেয়ে দুজন ছুঁলেই কত শতাংশ প্রেম ফূটে উঠতো। তখন টেস্টনি বা সারাহা ছিল না।

অষ্টমীর অঞ্জলির ফুল ও তো ওকে তাক করেছিল। বাড়িতে মোচা ঘন্ট থাকতো যেমন ওহ! ক্যালকাটা খোলার আগে।

ফেলুদা তোপসে আর কোন অভিযানে যায় না, সন্দীপ রায় পুরনো পচা চলচ্চিত্র ঢেকুর তোলে, ঋতুপর্ণ ঘোষ আর রোববার পত্রিকার ফার্স্ট পার্সন নয়, পিসি সরকার ও আর সিংহ পোষেনা।

আমরা উন্নয়নের রাজপথ ধরে কেবল দৌড়চ্ছি। আশা আকাঙ্ক্ষা আকাশ জুরে। শপিং মল আর দারুণ আধুনিক রেস্টোবার রাস্তার দুপাশে। হাঁপিয়ে গেলে এনার্জি ড্রিংক আছে। রান লোলা রান।

বৃদ্ধির এস্কালেটার,আমরা দৌড়চ্ছি দিক্বিদিকশূন্য  অন্ধকূপে।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment