কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Sunday, October 15, 2017

এন্ড্রুজ কলেজ আমারও

| এন্ড্রুজ কলেজ আমারও  |

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

আমি দীনবন্ধু এন্ড্রুজ কলেজের ছাত্র ছিলাম। যে কলেজে ফাস্ট ইয়ারের এক ছাত্রীকে র‍্যাগিং এর টাস্ক দেওয়া হয়, কমন রুমে সিনিয়রদের সাথে মদ খেতে হবে। মেয়েটি না বললে মুখে এসিড ছুঁড়ে মারার হুমকি দেয় দাদারা। আমরা শান্ত হয়ে বসে আছি এখনো ।

এই ঘটনার কিছু মাস আগেই এক ফোন এসেছিল এক পরিচিতের। দাদা বিপদে পরেছি। ভাইকে ভর্তি করতে চাই এন্ড্রুজ কলেজে কিন্তু অত টাকা ম্যানেজ করতে পারছিনা। একটু দেখে দেবে? আমি বললাম অনেকদিন যোগাযোগ নেই তবে কথা বলতে পারি ফি মুকুব করার। পরিচিত হেসে বলে, কলেজ ফি নয় দাদা, ইউনিয়ান ফি। ইউনিয়ান কোটায় এডমিশন করিয়ে দিলে ৪০,০০০ মত পরে। কম বেশি দরদাম করা যায় স্ট্রিম অনুসারে। আমরা শান্ত হয়ে বসে আছি এখনো।

এন্ড্রুজ কলেজে ভর্তি হতে গেলে ঘুষ দিতে হবে ইউনিয়ান বা শিক্ষকদের, কল্পনাও করতে পারতাম না। আমাদের সময় সিটি, চারুচন্দ্র, যোগেশচন্দ্র সহ কিছু কলেজে যখন সিটের নিলাম হত, গড়িয়া কলেজ বুক চিতিয়ে বলতো এই কলেজে টাকা দিয়ে এডমিশন হয় না। ক্যাম্পাসে মদ গাঁজা খাওয়া হয়না, শিক্ষক পেটানো হয় না।

গড়িয়া কলেজের প্রতিটা কোন আমি, আমরা হাড়ে হাড়ে চিনি। স্কুল জীবন থেকে আড্ডা মারা, ছাত্র হওয়া, স্লোগান তোলা, নাটক করা, সোশ্যাল এ গান গাওয়া, ব্যাবস্থাপনা- প্রায় সবই করেছি এই ক্যাম্পাস এ। কোন দিন এই ঘটনা ঘটে নি।

এক বার এক ছাত্রকে ভর্তিতে সাহায্য করেছিলাম বলে তার বাবা একটা খাম আমার হাতে গুঁজে দিতে চেয়েছিল, চরম খিস্তি করেছিলাম ছেলের সামনে। এক মেয়ের বাবা অনেক সাধাসাধির পর কিছু না পেয়ে এক প্যাকেট দামী সিগারেট গছিয়ে দিয়ে ছুট্টে পালিয়েছিল। অনেকটা অপরাধবোধ নিয়ে সবাই মিলে খেয়েছিলাম। ব্যাস ওই অবধি। ভর্তি করিয়ে দিলে যে মোটা টাকা কামাই করা যায় তার ফান্ডা আয়ত্ত করতে পারিনি। পারলে এত দূর যেতে পারতাম না হয়তো জীবনে।

মদ নিয়ে কলেজে বড্ড নেকুপুসুপনা ছিল দাদা দিদিদের মধ্যে। আমিও চে থেকে জ্যোতি বসুর রেফারেন্স মেরে দিতাম পাল্টা কিন্তু কোনদিন ক্যাম্পাসে এক ড্রপ ও খেয়ে ঢুকিনি, খেতে দিয়িনি। যা ফোয়ারা পাঁচিল টপকে।

সিনিয়র হিসেবে সামান্য হলেও জনপ্রিয় ছিলাম। কোনদিন র‍্যাগিং করতে হয়নি। এমনিতেই বন্ধু পাতিয়েছি অনেক।

কলেজ এমনই হওয়া ভালো। ছাত্রীর মুখে এসিড মারার কথা বলে যে সিনিয়র, তার মুখে গণ-মুতে দেওয়া উচিৎ। ৪৫ নম্বর রুমে নিয়ে গিয়ে।আমাদের স্বার্থসাধনেই।

কারন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যারা এই কলেজ থেকে পাশ করবে, তারাও আমাদের এইরকমই ভাববে।

মাইরি বলছি। আমরা ওরকম ছিলাম না। ওই পচা মাল গুলোর হয়ে আমরা ক্ষমা চাইছি। এন্ড্রুজ কলেজ আমার ও। একে পুরনো কলেজের পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়ার শপথ ও আমার।

দীনবন্ধু এন্ড্রুজ কলেজ, পাশে আছি যাতে আগামী আগের মত সুন্দর বন্ধুপ্রবন হয়।

#এন্ড্রুজকলেজআমারও

©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment