কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Sunday, October 15, 2017

সতর্ক হন আপনার সন্তান আত্মহত্যা করার আগে

| |

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

বিষয়টা গুরুতর। শেয়ার করা জরুরি। 'ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ ' এর নাম শুনেছেন নিশ্চই। টিভি, রেডিও, পেপারে লেখালেখি হচ্ছে। এখনো না শুনলে আপনার দৈনন্দিন ব্যস্ততার মাঝে কিছুটা সময় নিয়ে এই লেখাটা পড়ুন।

আপনি নিশ্চিত কি আপনার সন্তান মাঝরাতে ঘুমের মধ্যে আঁতকে ওঠে না বা ভোর রাতে জাপ্টে ধরতে চায় না আপনাকে? শেষবারের জন্য? ছাদের পাঁচিল থেকে খালি পাএ নিচে ঝাঁপ দেওয়ার আগে?

আপনার প্রানের চেয়ে প্রিয় সন্তান, যার হাতে আদর করে আপনি স্মার্ট ফোন, আই প্যাড, ফোর জি ইন্টারনেট উপহার দিচ্ছেন, কেবলমাত্র আপনাদের সময় কম বলে, বা তারা মেতে থাকবে বলে, এই লেখাটা তাদের জন্য। ব্যস্ত জীবন। বর বউ দুজনেই কাজ করেন। পিপিটি,আর পয়েন্টার এ অভ্যস্ত। সুতরাং পয়েন্ট এ জানাচ্ছি।

১).১৩০ জন কিশোরের আত্মহত্যার জন্য দায়ী এই অনলাইন গেম! অধিকাংশই ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স। অর্থাৎ Vulnerable Age Group। যে বয়সে মা বাবার সাথে মারপিটটা বেশী হয়।

২). বিশাল ফ্ল্যাট বাড়ির এক চিলতে বারান্দা যখন আপনার সন্তানের ফুটবল মাঠ হয়ে যায়, ঠাকুমা নেই, দিদা নেই,গল্প দাদু নেই- থাকার মধ্যে ইন্টারনেট আর অনলাইন গেম এর নেশা, আপনাকে সজাগ থাকতে হবেই।

৩). গেমের ইনভাইট মূলত স্কুলের ওয়াটসএপ গ্রুপে, যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া সাইট বা ফেসবুকে আসে। স্কাইপে সল্পবসনা নারী সদ্য নাইটফল শেখা কিশোরকে আদেশ করে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করতে, পুরুষত্ব প্রমাণের চ্যালেঞ্জ জানায়।

৪). গেমে প্রতিযোগীদের মোট ৫০টি লেভেল কমপ্লিট করতে হয়। গেমের শুরুর টাস্কগুলি অবশ্য তেমন ভয়ঙ্কর নয়। বরং বেশ মজারই। যেমন ট্রুথ ও ডেয়ার এ থাকে। আর সেই কারণেই এই গেমের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হওয়া যায়। কিন্তু গেমের লেভেল যত এগোয়, ততই ভয়ঙ্কর হতে থাকে টাস্কগুলি।

৪). যেরকম নিজের শরীরে ব্লেড দিয়ে ব্লু হোয়েল আঁকা। বা রোজ ভোর ৪.২০ তে উঠে হরর মুভি বা খুনোখুনির ভিডিও দেখা। সব শেষে ৫০তম টাস্ক হল উঁচু বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়া।

৫). এই গেমিং অ্যাপ মোবাইলে একবার ডাউনলোড হয়ে গেলে তা আর কোনও ভাবেই ডিলিট করা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, ওই মোবাইলে ক্রমাগত নোটিফিকেশন আসতে থাকে যা ওই মোবাইলের ইউজারকে এই গেম খেলতে বাধ্য করে।

৬). খেলাটা রাশিয়াতে শুরু হয়। ২১ বছর বয়সী ফিলিপ ভিকোন্তাক্তে নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’ নামের এই সোশ্যাল গেমিংটির পেজের অ্যাডমিন ছিল। স্বভাবতই, পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পরে তার উপর। শেষমেশ বেশ কিছুদিন তদন্ত চালিয়ে ফিলিপ-কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

৭). পুলিশের তীব্র জেরায় এই গেম চালানোর কথা স্বীকার করে নেয় ফিলিপ। তার বক্তব্য, সে তার খেলার মধ্য দিয়ে সমাজের ‘শুদ্ধিকরণ’ করছে। সে গর্বের সাথে বলতে থাকে, সমাজে যাদের বেঁচে থাকা উচিত নয়, তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়াই ছিল তার লক্ষ্য।

৮). ভয়টা এই জন্য কারন ভারত ডেটা পরিষেবা গ্রহনে এখন পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থানে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল। অনেকটা সময় একা থাকা। ফেলুদা নেই, এস্টেরিক্স নেই, টিনটিনের নাম ও অজানা। থাকার মধ্যে ডাব্লু ডাব্লু ই আর ডেথ মেটাল।

৯). ভয়টা এই জন্য কারন মুম্বাইতে এক ১৪ বছরের কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে। কতজনের সাথে সে এই খেলা খেলতো জানা যায়নি। মা বাবা কোনদিন খোঁজ নিতে যায় নি ওর অনলাইন হ্যাবিট। মায়ের ঘামের গন্ধ থেকে পরিচিত ছিল ব্রাউজার।

১০). আসুন একটু কথা বলি নিজের ছেলে মেয়েদের সাথে। সামান্য ইয়ার্কি। বন্ধুত্ব পাতাই, গল্প করি, ঠাকুরমার ঝুলির ঝুল পরা গল্প বলি। লাগুক না আর একটু বেশী ক্লান্ত। অনু-পরিবার আরো ছোট যেন না হয় দুর্ঘটনায়।

©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment