| মাম্মিস উইল রিম্যেইন মাম্মিস ! |
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
মায়েদের উদযাপনের আবার দিন হয় নাকি? আমার যখন নাক টিপলে দুধ বেরোয় তখন ওই ভোরবেলা গুলোতে আমার প্রবল চিলচিৎকার তো মাই শুনতো। শান্ত করার ফর্মুলা নিয়েই মায়েরা জন্মায়।
ওই যে প্রবল জ্বরে কাঁপছিলাম যখন বসন্তরোগের পরে ছোটবেলায়, সেই গোটা রাতটা তো মায়ের ছিল। বা ওই যে মাধ্যমিকের দুপুরবেলা গুলো। আমি পরিক্ষা হলে আর মা কোন এক গাছের নিচে বা বাড়ির ছায়ায় বই, ডাবের জল, খুচরো খাওয়ার নিয়ে তিন ঘন্টা ঠায়। ওটাও মায়ের দুপুরই ছিল।
আর মায়ের বিকেলগুলো? রিক্সা করে টিউশন ক্লাসে নিয়ে যাওয়া, পাড়ার মাস্টার মশাইদের গুরুগম্ভীর সব অভিযোগ শোনা। ছেলে কি কি কারণে ঠিক উচ্ছন্নে গেছে আর কি কি কারণে এর আর কিছু হবে না তার লিস্ট শুনে নেওয়া কোন এক বসন্ত বিকেলে। ওটাও তো মায়ের বিকেল।
মধ্যরাতে জানালার ধারে বসে থাকাটা ও তো মায়েরই অপেক্ষা । বাজখাঁই চিৎকার করে যাওয়াটাও তো মায়েরই। শুধরে যা, মা করছে বউ কিচ্ছুটি করবেনা বলার দৈব্য বাণী ও তো মায়েরই।
আসলে মায়ের জন্য যে কোন একটা গোটা দিন বেছে সেটাই 'মাদারস ডে' বলা টা কিরকম একটা এ.আর রহমানের যে কোন একটা গান বেছে তার ভারতীয় সংগীতে অবদান বোঝানোর মত। মায়েরা নির্ঘাত আরো লিস্টি দিয়ে বলবে, অমুক দিনে তমুক করেছিলাম, তখন কেউ ছিল না রে, এসবের মূল্য দিলি না, তুই ও না তোর বাবা ও না!!!!!!!
মায়েরা মা ই থেকে যায়। আজীবন ছেলের অন্ধভক্ত, অনন্ত অনুযোগকারী, বয়ঃসন্ধিকালের সবচেয়ে বড় শত্রু, কোন এক অতিজাগতিক শক্তিপ্রাপ্ত মন-পড়ুয়া যারা কি চলছে মনে সব স্ক্যান করে নেয়।
একদিন এই মাম্মি দিবস পালন মন্দ না। এসব দিনেই তো ভালো রেস্টোরেন্টে নিয়ে যেতে হয় মায়েদের। চাইনিস, কন্টিনেন্টাল, মেক্সিকান, মোহিতো, লাইম সোডা অর্ডার দিতে হয়, বিল মেটাতে হয় তারপর গাড়িতে উঠে ফিসফিস শুনতে হয়:
" কি সব ছাইপাঁশ আদ সেদ্ধ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে দিয়ে গন্ডা গন্ডা টাকা নিয়ে নিলো। লেবুর জল সোডা মেশানো নাকি ৯০টাকা। তিন পিস মাংস নাকি ২০০টাকা। এরচেয়ে বাড়িতে এক কেজি মাংস কিনে ভালো করে রান্না করে দিতাম।"
অনন্ত নিস্তব্ধতা। ফের...
"তা ভালোই হয়েছে। একদিন রান্নাবান্না না করে এসব ভালোই লাগে খেতে। বাড়ি চল তাড়াতাড়ি। স্টার জলসায় 'ইচ্ছেনদী' তে আজ ক্রুশিয়াল দিন।"
মাম্মিস উইল রিম্যেইন মাম্মিস !
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
#HappyMothersDay
No comments:
Post a Comment