| কালো টাকার খবর:সুইস ব্যাংকে ভীড়, টাকার আইসিইউতে যাওয়া |

| কালো টাকার খবর:সুইস ব্যাংকে ভীড়, টাকার আইসিইউতে যাওয়া |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

ব্রেকিং ব্রেকিং ব্রেকিং নিউজ। না জার্মানির পর অন্য কোন ইন্দ্রপতন-সংবাদ নয়। এ খবর আপনার মানিব্যাগের। বিমুদ্রাকরণের আগে ওই যে সামান্য কিছু নোট আপনার মা আলমারির কোন খাঁজে রাখতো, হ্যা তা নিয়ে। তাই পছন্দ না হলে যান গিয়ে খেলা দেখুন। হলে শেয়ার করুন।

বন্ধু, জানি নেইমার, মেসি, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা, ভারত আইসল্যান্ড  নিয়ে আপনি মারাত্মক ব্যস্ত। আপনার দুসরা দেশের তিসরা শ্রেণীর নাগরিক এখন আপনি। রাত জেগে দেশের জন্য গলা ফাটিয়ে  আপনার শিরা উপশিরা জুরে এখন ২২জন ফুটবল খেলছে। এসব সময় অন্য কিছু বলা অর্বাচীনতা। তবু শুনুন। খবরটা হাতে গরম এলো।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক, মানে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং সংস্থা আজ তার বার্ষিক অর্থ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সুইজারল্যান্ডের সমস্ত ব্যাংক এই সংস্থার আওতাধীন। মানে ওই কালো টাকা যেখানে নিশ্চিন্তে রাখা যায় আরকি। যেখানে কে কত হাজার কোটি রাখলো তার জবাবদিহি করতে হয় না। কোন সরকারের বাবার সাধ্য নেই জানার।

কিন্তু এতকিছুর পর ও সুইস ব্যাংক একটা তথ্য প্রকাশ করে প্রতিবছর। কোন দেশের থেকে কত টাকা ঢুকলো এসব ব্যাংকে। এটা প্রধানত সাম টোটাল ওফ টোটাল এসেট। মোটেও ভাববেন না ব্যাক্তিগত একাউন্ট ফাঁস করবে এরা। যা ফাঁস করবে তা হলো ভারতে বসবাসকারী মানুষ মোট কতটাকা সুইজ ব্যাংক গুলোতে জমা রেখেছে।

খবরটা এখানেই। রিপোর্ট বলছে ২০১৭ সালে ভারত থেকে মোট ৭,০০০ কোটি টাকা সুইজ ব্যাংকে জমা হয়েছে। যা ২০১৬ সালের তুলনায় ৫০% বেশী। একদম ঠিক বলছি। ৪,৫০০ কোটি জমা পরেছিলো ২০১৬ সালে। ২০১৭ তে তা হয়েছে ৭,০০০,০০০,০০!  কালো টাকা।

এই পুরো টাকাটা একাধিক ভারতীয় ব্যক্তি জমা করেছে ভারতের আইন ও ট্যাক্স কাঠামো থেকে বাঁচতে। মানে কালো টাকা বিদেশ পাঠিয়েছে।

আমি আপনার বিশ্বকাপের নেশার মাঝে এতকথা বলছি কারণ মনে করে দেখুন, ২০১৭ সালে দেশে বৈপ্লবিক এক সংস্কার হয়েছিল। বিমুদ্রাকরণ। ডি মো নে টাই জে শন!!!! 

এর ফলে নাকি কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। যারা কালো টাকা রেখেছিলো তারা বাপ বাপ করে সারেন্ডার করবে। টাকার জোগান বাড়বে, এতে অর্থনীতি পোক্ত হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করলে প্রথম সারির দেশ হওয়া যাবে, টাকার মূল্য বারবে, ভারত আবার জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে।

২০১৭ সালে গোটা সুইজ ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গড়ে ২% জোগান বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র। সেখানে ভারতে ৫০% গচ্ছিত অর্থ পরিমান বৃদ্ধি।  আপনার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বা বোমকেশ বক্সি না হলে ও চলবে এটা অনুমান করতে যে কিছু একটা বড় ঘটনা ভারতে হতে চলেছিল বা হচ্ছিল তাই হিড়িক পরেছিল সুইজ ব্যাংকে কালো টাকা পাচার করার।

এই অবধি বলে শেষ করছি। এরপর কিছু অনুমান করা, যোগসূত্র খোঁজা বা প্রশ্ন তোলাতে গুরুর বারণ আছে। বিশ্বকাপ চলছে, যোগা দিবস পালন হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি ও নিশ্চই শবাসন শেষ হলে জেগে উঠবে। ও আর একটা খবর হল, আজ টাকার দাম ডলারের তুলনায় ৬৯ টাকা।  সর্বকালীন বেশী। সহজবোধ্যতা বলে এর সাথে মূল্যবৃদ্ধি ও জড়িয়ে আছে। বাদ দিন এসব।

আনন্দ সংবাদ হলো, এবার আমার আপনার ব্যাংক একাউন্টে ১৫লাখ না সারে ২২লাখ ঢুকতে চলেছে। আচ্ছা আজ পেট্রোলের দাম কত ছিলো যেন ?

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ