কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Friday, July 6, 2018

নিলামে বাজারি হল লাল কেল্লা: এবার দেশের পালা

| নিলামে বাজারি হল লাল কেল্লা: এবার দেশের পালা |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

আজ্ঞে! জবর খবর। ভারতের ইতিহাসে এটাই প্রথমবার। ইউনিয়ান জ্যাক সরিয়ে দেশের পতাকা যেখানে উত্তোলন হয়, নেহেরু যেখানে স্বাধীন ভারতের প্রথম ভাষণ দেন, পাকিস্তান যেটা দখল করে নেবার হুমকি দেন যুদ্ধ হলেই, সেই লাল কেল্লা পাঁচ বছরের জন্য নিয়ে নিল ডালমিয়া গ্রুপ। প্রথম বিশ্বে যেমন হয়। বদলে সরকার বাহাদুরকে ওরা ছুড়ে দেবে ২৫ কোটি টাকা। এই টাকায় পর্যাপ্ত গরুর আধার কার্ড, মন্দির নির্মাণ, গোলওয়াল্কার সাহেবের মূর্তি স্থাপন হবে অথচা স্রেফ ব্যাংকে রেখে দেওয়া হবে টাকাটা, যাতে কোন এক সময় নীরভ মোদি গোটা টাকাটা নিয়ে কেটে পরতে পারে। হয়তো।

ঠাকুর বলেছেন, মনই গুরু। মনের কথা শোনো। মন যা চায় তাই করো। সাহেব বলেছেন মন কি বাত করো। মন চাইলে দেশ কিনে নাও। দেশ বেচে দাও। প্রশ্ন করলে Anti National তকমা দেগে দাও।

এরপর লাল কেল্লাতে বিয়ের মন্ডপ হবে। ডিজে মিউজিক বাজাবে যেখানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেয়। গাঁকিয়ে লোক আসবে চিড়িয়াখানার মত পিকনিক করতে, দেওয়ালে Bittu Love Tittu লিখে রাখতে।  বাগানে গলা অবধি খেয়ে বমি করে পরে থাকবে বরযাত্রী। হানি সিং সংগীত সন্ধ্যা হবে। আমরা গদগদ হবো নয়া উদারবাদের প্রসাদে।

আমরা শুনবো মোটা টাকা দিয়ে লাল কেল্লা বুক করছে বজরং দল। সেখানে ভারতের অন্য ইতিহাস শোনানো হবে। তাজ মহল ছিল তেজো মন্দির। লাল কেল্লা ছিল কোন হিন্দু দেবের পিকদানি যা রেনোভেট করে নিজের বলে চালিয়ে দেয় মোঘল সম্রাট।

এরপর একদিন দেখবেন তাজ মহল এক মাসের জন্য নিলামে উঠেছে। তাতে রিসোর্ট বানানো হবে। জোছনা রাতে মমতাজ মহলের পাশে শুতে পারবেন এক রাত। ওই যে নির্বাক ছবিতে ঋত্বিক শুয়েছিল না মৃত সুস্মিতা সেনের পাশে।

আপনি খাজুরাহো মন্দিরে মধুচন্দ্রিমা করতে পারবেন, পয়সা থাকলে মুতে ও আসতে পারবেন ওর দেওয়ালে যেখানে স্তন খোদাই করা আছে।

আচ্ছা আপনার শখ হয়েছে NSG কম্যান্ডো ভাড়া করে আপনার বাড়িতে দারোয়ানি করাবেন? তাই হবে। কিংবা একদিন আপনি ভাড়া করে যুদ্ধ জাহাজ ধানক্ষেতে ও ল্যান্ড করাতে পারেন। পয়সা ফেকো তামাশা দেখো।

গোটা দেশ খোলা বাজারে সাজানো। আপনার রেস্তো থাকলে কিনে নিন। মাথায় রাখুন রেল, কয়লা, তেল,জল সেনাবল, সন্ত্রী সব আপনার মানিব্যাগের অপেক্ষায়। আপনি ক্রেতা হয়ে আসুন, দামী টয়লেট পেপারে ইতিহাস মুছে ফেলুন, ফ্লাশ করে দিয়ে মুখ মুছুন পর্যটনের মুনাফায়। মুনাফাই রাষ্ট্র গঠন করে। ইতিহাস তো ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ও লিখতে পারেন।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment