| সত্যজিৎ |
----- © ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
মুকুল এর আজ ও হাসি পায়না। তপেশরঞ্জন মিত্র ও সেই কবেই লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। জটায়ুর সবুজ এম্বাসেডর বাতিল। ১০০, গড়পার রোডের বাড়িটা শুনেছি প্রোমোটারদের কবলে চলে গেছে। রজনী সেন রোড আছে এখনো?
ফেলুদা এখন বাতের ব্যাথার তেল এর মডেল। তোপসে নামী বাঙালি হেঁসেল এর মালিক। দুষ্টু লোকেরা অমিত শাহকে মগনলাল মেঘরাজ বলে গুলিয়ে ফেলে।
গুপি শেষ বয়সে গড়িয়া অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে ঘাম মুছতো। বাঘা ও মৃত। মন্দার বোস বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। খুচরো ভেল্কি বা গ্লোবট্রটার, কেউই খুব একটা সাহায্য করেনি শেষ দিকে।
যেভাবে অরিন্দম মুখার্জী কে টাকার চোরাবালি থেকে তুলতে কেউ সাহায্য করেনি। তবে অত টাকা প্রথমবার চোখে দেখে দিব্যি লেগেছিল। যেরকম দিব্যি লেগেছিল চারমিনার, চা এর সাথে নিউ মার্কেট থেকে কেনা ডালমুট।
তালি দিয়ে আনানো ভূতের রাজার ভোজ এর ওই ইয়া বড় রাজভোগ বা মাছের মুড়োটা আর পাতে পরেনা। কুকুর ও পায় না। ভূতেও খায় না।
ভূত যে নাচে, তখন জেনেছিলাম। যখন ছোট ছিলাম। তখনি প্ল্যানচেট শেখা। এলকেমি জানা। ইয়েতি, সোনা তৈরির ফর্মুলা, দড়ি ধরে টান মারার প্রতিস্পর্ধা, বোমযাত্রীর ডাইরি, বিনেপয়সার ভ্রমণ। সোনার কেল্লা।
তারপর কখন যেন সব বড় হয়ে গেলাম। ইন্দির ঠাকুরান বা দুর্গার গল্প কিরকম অবাস্তব লাগতে শুরু করলো। এত গরীর কেউ হয়? আমার তখন হতাশা নতুন সিরিজের আই ফোন না পাওয়ার। আমার দারিদ্র্য রোজ উবের না চড়তে পারার। সৌখিন পানশালাতে মেহেফিল নেই এর পাঁচালি।
আমি তখন বোমকেশ, আমি তখন কর্নেল, কিরীটী। প্রখর রুদ্রের থেকে ও দ্রুত দৌড়। উচ্চাশার ইমারত।
কখন যেন পিকু দেখতে দেখতে পিকুর মা বা রোজ দুপুরে আসা কাকুটার বয়সি হয়ে গেল। এখন রোজ দুপুরবেলা পিকুকে পোকেমন চালিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করি। দুজনে।
আমরাও তো কখন যেন বড় হয়ে উঠলাম। সোমনাথ এর মত। মিডিলম্যান হয়ে। বস কে খুশি করে। ক্লায়েন্ট কে পছন্দসই 'মাল' সাপ্লাই করে। প্রাক্তন প্রেমিকার বিয়ের নিমন্ত্রন পেয়ে। বড় হলাম।
না ভান করলাম হওয়ার? আদপে কৈশোর পুষে রাখা কোটের পকেটে। ফর্মাল শার্ট এর কলার এ। আপিসের ফাইলের ভাজে। হাই হিল এ।
ধন্যবাদ সত্যজিৎ বারবার টাইম মেশিন এ চাপিয়ে আমার ফেলে আসা রংপেন্সিল, গরমের ছুটির ১টাকার পেপসি, দূরদর্শন এ ছুটি ছুটি, পাড়ার লাইব্রেরি, খেলার মাঠ, তিন বর পাইয়ে দেওয়ার জন্য।
জন-অরন্যে আশা আকাঙ্ক্ষার না পাওয়া অনেক কিছুর মাঝেও সব পেয়েছির নাম, সত্যজিৎ।
আজ মাষ্টারের জন্মদিন।
পুনশ্চ : এই লেখাটা আগের বছর লিখেছিলাম। মগনলাল মেঘরাজের মত কিছু দুর্ধর্ষ দুশমন লেখাটা চুরি করেছিল। কেউ কেউ আমার নাম লেখকের জায়গা থেকে বাদ দিয়ে পোষ্ট করেছিল নিজের নামে। কোন পরোয়া নেই। আমিও ফেলুদার চ্যালা। মগজাস্ত্র লাগিয়ে আরো বেশি করে লেখা লিখতে শুরু করলাম। ছড়িয়ে দিলাম আপনাদের মাঝে ময়ূখ এর নামে। ওদের ভবের খেলা ঘ্যাচাং!
©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
#SatyajitRoy
No comments:
Post a Comment