| কলেজের সিট নিলাম করে বাণিজ্যপথে বাঙালি |
--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
কে বলছে বাঙালি বানিজ্যমুখী নয়? শিল্প কি আর কেবল কারখানার চিমনি, হাইড্রলোকিক, ইঞ্জিন, মেশিনে হয়? কলেজে ও হয়।
এ বছর আগে ফোন এসেছিল এক পরিচিতের। দাদা বিপদে পরেছি। ভাইকে ভর্তি করতে চাই কলেজে কিন্তু অত টাকা ম্যানেজ করতে পারছিনা। একটু দেখে দেবে? আমি বললাম অনেকদিন যোগাযোগ নেই তবে কথা বলতে পারি ফি মুকুব করার। পরিচিত হেসে বলে, কলেজ ফি নয় দাদা, ইউনিয়ান ফি। ইউনিয়ান কোটায় এডমিশন করিয়ে দিলে ৪০,০০০ মত পরে। কম বেশি দরদাম করা যায় স্ট্রিম অনুসারে। আমরা শান্ত হয়ে বসে আছি এখনো।
কলেজে ভর্তি হতে গেলে ঘুষ দিতে হবে ইউনিয়ান বা শিক্ষকদের, কল্পনাও করতে পারতাম না। আমাদের সময় কিছু কলেজে সিটের নিলাম হত বটে কিন্তু সেটাও ন্যক্কারজনক বলেই ধরা হতো।
এক বার এক ছাত্রকে ভর্তিতে সাহায্য করেছিলাম বলে তার বাবা একটা খাম আমার হাতে গুঁজে দিতে চেয়েছিল, চরম খিস্তি করেছিলাম ছেলের সামনে। এক মেয়ের বাবা অনেক সাধাসাধির পর কিছু না পেয়ে এক প্যাকেট দামী সিগারেট গছিয়ে দিয়ে ছুট্টে পালিয়েছিল। অনেকটা অপরাধবোধ নিয়ে সবাই মিলে খেয়েছিলাম। ব্যাস ওই অবধি।
ভর্তি করিয়ে দিলে যে মোটা টাকা কামাই করা যায় তার ফান্ডা আয়ত্ত করতে পারিনি তখন। ব্যাবসাটাও তাই আর করতে পারিনি। এই বভাবে ব্যবসা পারলে এত দূর যেতে পারতাম না হয়তো। কলেজের সামনে আজ ও গাড়ি বাগিয়ে আসতাম, সোনার চেন, দশ আঙুলে দশটা পাথর আর মুদ্রাদোষে 'অনুপেরনা' নিয়ে বাণিজ্যমুখী হতাম।
©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment