| বিপ্লবী ছিঁচকাঁদুনে, সংগ্রামী আবোদা আর খিলজি |
---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
খিলজি যেন তেন ভাবে যুদ্ধ জয় করবার কথাই বুঝতো। যেখানে ছল প্রয়োজন, ছলনা করতো, যেখানে বল প্রয়োজন, জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিত। কিন্তু জিততো। ইতিহাস আলাউদ্দিন খিলজির কথা মনে রেখেছে।
রাজা রতন সিং ফিকে হয়ে গেছে। যে রতন সিং সৎ ছিল, সজ্জন ছিল, রণনীতি মেনে চলতো, ভদ্রতা দেখাতো, Integrity ছিল, একটা দিন বদলের আদর্শ ছিল। ইতিহাস সাক্ষী থেকেছে তার অতি ভদ্রলোক হতে চাওয়ার। কিছু বুঝলেন?
অর্থাৎ ভালো ছেলে, সৎ পাত্র, গরীব নেতা, পলিটবুরো কবি মেয়ের বিয়েতে ভালো কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে লাগে এমন কিছু লোক যারা ফুলটাইম পার্টিটা করে, এগ্রেসিভ- ছিন কে লেংগে মানসিকতার পরিচয় দেয়। হাফ-টাইম ইটালি ঘোরা কংগ্রেসি বা ৫০০০ মাসে দেওয়া হোলটাইমার নয়।
মানিক বাবু সত্যি খুব সৎ। বুদ্ধবাবু হেব্বি অমায়িক, বিমানবাবুর শিশুর মত মন- তাতে কার কি হল? আমাকে লিড করতে পারছো কি? না চায়ের কাপ বাঁদিক থেকে ডানদিক করতেই চারটে পিসি মিটিং করতে হচ্ছে। সবকিছুর মিনিটস লিখতে হচ্ছে গাঁড় বাঁচাও আন্দোলন করতে।
আপনার দলে যে টাকাটা আপনি অফার করেন মেধাবী ছাত্র, তুখড় বক্তা, দারুণ সংগঠককে, সেই টাকা আপনার দলের অনেক মুখ্যমন্ত্রী বা সাংসদের মাসিক সিগারেট এর খরচ ছিল। ভাবুন!
এরকম অনেক ছেলে আছে যারা দল টা ফুল টাইম করতে পারেনা কারন আপনি এখনো ভাবেন, ৫০০০ টাকায় সংসার চালানো, ইস্তিরি করা সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরা, ছেলে মেয়ের স্কুলের ফি দেওয়া সম্ভব!
সবাইকে মিডিয়া ফ্রেন্ডলি হতেই হবে আর অসুস্থ মানুষ কে টেনে স্টেজে তুলতেই হবে কেউ দিব্বি দেয়নি কিন্তু একই মানুষ যদি একই ভুল বারবার করে?
আপনারা নিজেরা একে কনফিউজড টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি, তার উপর স্থবির, হাম্বড়া, গোহারা হেরে ও সব বোঝেন আর মিনিটে মিনিটে স্বীকার করেন নিজেদের ভুল। বাকিটা খতিয়ে দেখেন আশেপাশে মধ্যমেধা কতটা ইয়েস কমরেড বলতে পারবে।
বুকে হাত রেখে বলুন তো ফিদেল বা লেনিন এরকম লিডার হলে বিপ্লব কি হত? জ্যোতি বাবু যদি সিদ্ধান্তহীন হতেন ২৫ বছরভর লাল পতাকা
থাকতো? মানিক বাবু একা বুঁদির কেল্লা রক্ষা করতে সক্ষম তা যে চুদির ভাই ভেবেছিল, তারই প্রাপ্য সদর দপ্তরে বসা।
এরপর ও বন্ধু বলবেন কেন মোদি হিট?লিডারশীপ বাওয়া! আর ডেডিকেশন। সংগঠনটা ও করছেন, মাঠে ও নামছেন, প্রচার আর জুমলা ও দিব্বি চালাচ্ছেন। আপনি কোথায়?
দেওয়াল লিখন পরিস্কার! মায়োপিয়া থাকলে চশমা পাল্টান আর পারলে ধারনা। দুনিয়া বদলেছে, আম্বানিরা এখন অনেক ক্ষমতাশালী, আপনি রিপ ভ্যান উইংকিল বা ওই বাঁশিওয়ালা যে কঠিন কঠিন শব্দ বলে ঘুমিয়ে পরেন নতুন এক বিপ্লবী ভোরের খোঁজে। সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যাচ্ছেতাই আর তাতেই ইদুঁরের দল পিল পিল করে গা এ গা ধা এ ধা মেলাচ্ছে। কেউ মাথা খাটাচ্ছে না। কেউ অন্য সুর এ কথা বলছে না। গা ধা!
আপনারা হয়তো ডিডি গেঞ্জির মত ভরসাযোগ্য, কষ্টি পাথরে যাচাই করা সৎ, অনাড়ম্বর কিন্তু বাস্তব থেকে ৩৪ কিমি দূরে বসবাসকারী। এখনো বুর্জুয়া সংবাদমাধ্যম, কালো হাত, আর সাম্রাজ্যবাদের জুজু দেখেন।
সবাইকে খিলজি হতে হবে বলছি না, কিন্তু সব খেলার গেমপ্ল্যান আছে। সেটা না আয়ত্ত করতে পারলে নেকুপুসু কান্না জুড়বেন না। মানতে শিখুন সেই কাচ্চি ঘানির ঝাঁঝ আর আপনাদের নেই। রেজিমেন্টেড দল এখন একটাই। বিজেপি। যার এলাকা চেনা, রণনীতি তৈরি করার ধারে কাছে আপনারা নেই।
এখনো বলবেন কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপি বড় শত্রু নয়? এখনো সমদুরত্ব তত্ত্বকে শিলমোহর দেবেন? এখনো গুরুগম্ভীর কিছু Lexicon আর ইয়া মোটা কিছু বই এর কসম খেয়ে মাঠে নামবেন? তারপর দু ফোটা সিরিয়া কান্না, এক ডজন পুঁজিবাদী জুজু, তিন কাপ হনুলুলুর জিডিপি নিয়ে সভা করবেন?
লেনিনগ্রাদে অমরত্ব লাভ হোক আপনার। দোহাই কচি ছেলেগুলোকে মিসগাইড করবেন না। বড় জান দিয়ে পার্টি টা করছে, সোশাল মিডিয়াতে আক্রমণ করছে, বুক চিতিয়ে লাল পতাকা ধরছে। এদের আলাউদ্দিন খিলজি হতে দিন।
পুনশ্চ: আমি শ্রেণিশত্রু, পাতিবুর্জোয়া, তিনোমূলি বা চাড্ডী নই। আরো খারাপ। আপনারা অযাচিত ভালো। হবেন না। প্লিজ। খেলার রেজাল্টটাই শেষমেশ মাথায় থাকে, ছিঁচকাঁদুনে বা আবোদাপনা নয়।
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment