কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Thursday, March 22, 2018

| রক্তমাখা প্যাড হাতে সেল্ফি নিক প্যাডম্যানেরা|

| রক্তমাখা প্যাড হাতে সেল্ফি নিক প্যাডম্যানেরা|

©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

কখনো সাদায় রক্তমাখা, লালচে কালো ছোপ ছোপ ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন হাতে নিয়ে দেখেছেন? ছবি তুলেছেন?

PadMan কে বাণিজ্যসফল করতে হবে, তাই ধোপদোরস্ত স্যানিটারি ন্যাপকিন হাতে গোটা দেশের নক্ষত্রসমূহ সেল্ফি তুলছে। নাম দেওয়া হচ্ছে সচেতনতা। অর্থাৎ অব্যবহৃত এক প্যাড হাতে জনসমক্ষে এলেই আঁড় ভাঙবে সমাজের। তারা ও এ সত্য অনুধাবন করবে যে চাল ডাল তেল নুন কানের দুল বা সিঁদুরের মতই এটি একটি দ্রব্য যা মহিলারা ব্যবহার করে।

বটেই তো। বৃহত্তম গনতন্ত্রের অধুনা কর কাঠামো জিএসটিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন একটি সৌখিন দ্রব্য। অর্থাৎ দুধ, ওষুধ বা সিঁদুর এর মতো এটি নিত্য প্রয়োজনীয় বা আবশ্যক জিনিস নয়।

অর্থাৎ সরকার বলতেই পারে মেয়েরা যেভাবে ছোট জামা পরে, ফ্রিল লাগানো অনলাইন এ অর্ডার করা একটুকরো কাপড় পরে বা মায়াবী সুগন্ধি কেনে, সেরকম।

সাদা এক টুকরো প্যাড হাতে নেওয়াই যায় নিউজপ্রিন্টের জন্য, বাজারে ও বিক্রি করে পুরুষ, বিশাল কোম্পানি ও খোলে প্যাড বানানোর। অর্থমন্ত্রী ও তো এক পুরুষ। ট্যাক্স লাগিয়েছেন প্যাডে। কিন্তু এতে কোন বীরত্ব নেই।

অক্ষয় কুমার, ক্যাটরিনা ও ধামা ধরা বলিব্রিগেড যদি ছুৎ মার্গ হটাতেই চান, ভাঙতেই চান ঘেন্নাপিত্তির পাঁচিল তবে রক্তমাখা কালচে একটা প্যাড হাতে আসুন। ছবি তুলুন, মিডিয়াকে বাইট দিন, পুরুষ সিংহদের বোঝান যে এ সময় মেয়েদের পাশে থাকতে হয়।এ সময়টা মাসে মাসে আসে। এক দু দিন খুব কষ্ট হয়, ব্যাথা হয়। তখন একটু হট ওয়াটার ব্যাগ এগিয়ে দেওয়াই যায়, বিশেষ ময়লার প্লাস্টিক টা ফেলতে যেতে সম্মানহানি নেই। বীরত্বই আছে।

অর্থাৎ সাদা এক প্যাড হাতে ছবি না দিয়ে ছবি দেওয়াই যায় রক্তওয়ালা এক প্যাডের। দাবী জানানোই যায় কেন ঋতুস্রাবে কর বসবে? গোটা বলিউড সেল্ফি তুললে, #BleedFree #PadsForAll হ্যাশট্যাগ বিপ্লব করলে নিশ্চই কিছু একটা হবে। হবেই। সিনেমার অনেক জোড়। দেশে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে, রাজপুত গৌরব টলিয়ে দিতে পারে। সিনেমা ঠিক গ্রামে গ্রামে স্যানিটারি ন্যাপকিন ছড়িয়ে দেবে। বিনামূল্যে স্কুলের মেয়েটা পেয়ে যাবে এক প্যাকেট "পাশে থাকা"।

mayukhrghosh.blogspot com এ আমার এক লেখায় লিখেছিলাম, এই মেয়ে তোর কাপড়  কোথায় প্রশ্ন করিস নি। যে রাষ্ট্র ট্যাক্স বসায় ঋতুস্রাব এ তাকে ছুঁড়ে মারিস নি 'সৌখিন' কাপড়খানা, ঘিনঘিনে তবে জবর হবে। সাদা পাঞ্জাপবি রঙিন হবে। হাল্লা বোলবে অর্ধেক আকাশ।

বাজার কবে চিৎকার করে ন্যাপকিন বিক্রি করবে? কবে ব্রান্ড এর নাম Whisper এর বদলে Shout out হবে!

কবে নেতা ন্যাপকিন বিতরন করবে ভোটের দায়ে? অবশ্য যেভাবে সাংসদ বিধায়ক পায়খানা বানিয়ে ও তাতে নিজের নাম খোদাই করে দেয়, তাতে এখানেও তাই হতে পারে। ক্ষতি নেই। রক্ত নাম ধুইয়ে দেয়। থেকে যায় যন্ত্রণা।

এটা লজ্জার নয়। এটা স্বাভাবিক। যেভাবে বমি হয়। যেভাবে আপনি প্রাতঃক্রিয়া করেন। স্বাভাবিক। প্রয়োজনীয়। এটা জানাই চলুন।

যে দেশে এখনো ১০% নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারে আর বাকিরা খোঁজে এক টুকরো কাপড় ইনফেকশন হওয়ার আগে, সেখানেই তো সিঁদুর করমুক্ত হবে। সেখানেই তো সিনেমাওয়ালা সাদা আর লাল ন্যাপকিনের মাঝে সাদা বেছে নেবে। সচেতনতার রঙ সাদা নয়। সচেতনতার রঙ হোক লাল।

ঋতুস্রাব এর রক্ত কবেই বা পুরুষ সিঁথিতে মাখিয়েছে? ক্যামেরার সামনে এসেছে? #PadChallenge না ছাই। ওরকম মনে হয়! 

©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment