| বোম্বাই এখন ফ্যাতাড়ুদের কবলে, লাল রঙ চারদিক |
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
আকাশছোঁয়া ফ্ল্যাটবাড়ি পেরিয়ে মেরিন ড্রাইভে ‘ফ্যাঁত ফ্যাঁত, সাঁই সাঁই’৷ ইতিহাসে দেখবে কত মহাপুরুষ, মানুষকে নতুন করে বানাবার জন্য কত ফন্দি বাতলেছে। আসলে ঘেঁটেঘুঁটে শেষমেশ এই ফ্যাতাড়ুই তৈরি হয়েছে।
ওনার নাম ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিন। মহারাষ্ট্রের কৃষক ইনি। ২০০ কিলোমিটার হেঁটে বোম্বে শহরে পা ছড়িয়ে বসে। যে শহরে পৃথিবীর সবচেয়ে আলিশান বাংলো বাড়ি আছে। আবার সে শহরেই বস্তিতে থাকতে লাগে ৬০০০ টাকা। সুপারস্টার গাড়ি চাপা দিয়ে ফুটপাথবাসীকে মেরে দেয়। আইনজীবী সওয়াল করতে এসে বলে, মরে যাওয়াই তো উচিৎ। ফুটপাথ হাঁটার জন্য। শোয়ার জন্য না। এই শহরেই।
কথাই তো ছিল এক ইঞ্চি জমি না ছাড়ার লড়াই এর। শ্রেণী শত্রু চিনে নিয়ে শেষ যুদ্ধ শুরু করার। আর একটা ধাক্কা দিয়ে ব্যারিকেড ভাঙার। এই আকালেও স্বপ্ন দেখার। অগত্যা রাতেই আবার পথ হাঁটা শুরু হবে। হ্যাঁ, মুম্বাই ঢোকার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েই আবার এগিয়ে যাওয়া আরবসাগরের খুব কাছাকাছি। সাতমহলা আর প্রাচুর্য এর মাঝামাঝি যেখানে বিধানসভা আছে। ওখানেই আছড়ে পরবে লাল ফৌজ কাল।
লেনিনের রক্ত, মাংস, প্রাণহীন পাথরস্তম্ভ নিধন করুক শ্রেণীসশত্রু। আমাদের লেনিন লড়াই এর ময়দানে বাঁচুক। লেনিন মানে স্রেফ ফ্রেঞ্চ কাট আর ওভারকোট নয়, আমার লেনিন লং মার্চেও হাঁটে।
স্থবিরতা বাসা বেঁধেছে সেরিবেলামে। ভেঙে ফেলতে হবে তাও ব্যারিকেডের মত। নতুন লেনিন, নতুন আইডল খোঁজা শুরু হোক। আমাদের কি আইডল কম পরিয়াছে?
যে লোকটা ২০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এলো গান করতে করতে, বাকিদের পিঠ চাপরাতে চাপরাতে, ভন্ড বাবাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ও বিজ্ঞানমঞ্চ আন্দোলনটা করছেন তার পাশে থাকুন, যে কয়লা খাদানের শ্রমিকদের এক ছাতার তলায় এনে দারুণ রাগে ফেটে পরার কথা বলছেন, তার পাশে থাকুন। পাশে থাকুন যে গণশক্তি টা ঝড় জল বৃষ্টিতে ও আপনার বাড়ি এসে দিয়ে যাচ্ছে। পাশে থাকুন যে কমরেড আদিবাসী মানুষদের নেতা হয়েছেন।
সূর্যাস্ত হলে এদের কাছেই ফিরে যেতে হয় লাল পতাকার, দুমুঠো খেয়ে এক দিনবদলের গল্প বলতে । এরাই রক্ষা করবে শেষমেশ লেনিন এর উত্তরাধিকার।
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment