কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Thursday, March 22, 2018

| তিন তালাক ছাড়া আরো প্রথা আছে: নিষিদ্ধ হোক |

| তিন তালাক ছাড়া আরো প্রথা আছে: নিষিদ্ধ হোক |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

তিন তালাককে ফৌজদারী অপরাধ হিসাবে মান্যতা দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আজ বিলটি সংসদে পাশ হল। ভালো কথা। যে পুরুষ মেরুদণ্ডহীন হয়ে একটা মেয়েকে তিনটে শব্দ উচ্চারণ করে ছেড়ে দিতে পারে, কোন ভরণপোষণ ছাড়াই, তার জেলেই পচা উচিৎ।

তালাকের পর স্বামী ও স্ত্রী আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে তবে তা শর্তসাপেক্ষ। শর্তটি এই যে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে অন্য কারো সঙ্গে যথাযথভাবে বিয়ে করে শুতে হবে এক রাত এবং নতুন স্বামী তালাক প্রদানের পর আগের স্বামীর সঙ্গে পুনর্বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

কিন্তু মুসলিমদের এই প্রাগৈতিহাসিক প্রথার মত আরো কিছু প্রথা আমাদের ভারতীয় সমাজে রয়ে গেছে যার ফলে কোটি কোটি মেয়ে আজও অবহেলিত, নিপীড়িত। এর সবটাই যে মুসলিম সমাজে ঘটছে না! এগুলোর সংস্কার কবে হবে?

মাথায় রাখবেন, তিন তালাকের ঘটনা ঘটে কেবল ২০লাখ মেয়ের সাথে। বাকি অজস্র মেয়ে অন্ধকার বুকে চেপে আছে।

১). অনেকেই জানে না, গোয়া সহ কোংকান- মালওয়ানী এলাকাতে আজ ও কোন হিন্দু পুরুষ চাইলেই তার স্ত্রীকে এক দিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে পারে যদি সে ২৫ বছরের পর ও সন্তানধারণ করতে অক্ষম হয়। বলা বাহুল্য, এই প্রথা আজ ও বহু সমাজে রয়েছে। কথা হয় না।

২). কোন পারসি মহিলা যদি তার সম্প্রদায়ের বাইরে কাউকে বিয়ে করে, তবে তাকে সব পারিবারিক সম্পত্তি, অংশীদারি থেকে বহিষ্কার করা হয়। কোন খুশি বা মৃত্যুর দিনে তাকে ডাকা হয় না।

৩). মনিপুর, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় এর মেয়েদের নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যেই বিয়ে করতে হয়। না হলে তাদের একঘরে করা হয়, অনেকক্ষেত্রে খুন ও হয়। হ্যা অনার কিলিং কেবল গো বলয়তেই হয় না।

৪).  হিন্দুরা নামেই একটি বিয়েতে বিশ্বাসী। আদপে একই সাথে বহুবিবাহ এর ঘটনার সাক্ষী আছে ইতিহাস। এখন ও একাধিক পুরুষ আছে যারা একই সময় দুই বউ এর সাথে ঘর করছে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।

৫). নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটে আজ ও আইনত রক্ষিতা রাখার চল আছে বিবাহিত পুরুষদের। গুগল করুন "মৈত্রী কারার" প্রথা। এই প্রথা অনুসারে পুরুষ তার পছন্দের শরীর সঙ্গীকে খাতায় কলমে সই করে নিজের সাথে রাখতে পারে। যতদিন তার ইচ্ছে। তার জন্য আলাদা ঘর বরাদ্দ থাকে ও তাকে ঝি এর কাজ করতে হয় একটু আধটু।

৬). ভারতে বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ কিন্তু বাল্য বিবাহ রীতি রেওয়াজের নামে হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আর তাই স্ত্রী এর বয়স ১৫ পেরোলেই তার সাথে যৌন মিলন করা যায় ও ১৮ হলেই পোয়াতি করা যায়। মনে রাখবেন অবিবাহিত কোন মেয়ে যার বয়স ১৮র কম, তার সাথে যৌনমিলন করা কিন্তু ধর্ষণ। সেই মেয়েই যদি বিয়ে করে ফেলে ওই বয়েসে ও রোজ রাতে তার বর জোর করে মিলিত হয়, তা ধর্ষণ নয়।

৭). আপনার প্রাক্তন স্ত্রীকে ধর্ষণ করলে আপনার সাজা কম। কারন আপনার তখনো তার শরীরে কিছুটা দাবী থেকে যায়। স্ত্রীকে ধর্ষণ খাতায় কলমে হয়। আদপে আমাদের সমাজ মেয়েদের একটা বয়সের পর থেকে এটাই শেখায় যে বর যখন চাইবে তখনই কাপড় খুলে বউকে শুতে হয়। বর যদি ফোরপ্লে ছাড়াই মিলিত হয়, সেটাকেই নিয়ম বলে রোজ ধর্ষিতা হতে হয়, মশারির নিচে।

এসব যে কেবল তিন তালাকের ফলেই হয়, তা তো নয়। আজ ও রাজস্থানে সতিদাহ প্রথাকে উজ্জ্বল ভাবে দেখানো হয়। আজ ও মেয়েদের শেখানো হয় যে তার জন্ম একটা অভিশাপ। তার যেন কোনমতেই মেয়ে না জন্মায়। আজ ও বিনা ভরণপোষণ অজস্র অস্বাক্ষর মেয়েকে ফেলে অন্য মেয়ের হাত ধরে পুরুষ।  অসহায় মেয়েটি হয় কোন বৃদ্ধ আত্মীয়কে বিয়ে করে বা বাপেরবাড়ির এক কোনে পরে থাকে।

মুসলিম বিশ্বের অনেক জায়গাতেই 'তিন তালাক' পদ্ধতি নিষিদ্ধ। কিন্তু কোন রাষ্ট্র নায়ক যদি অল্প বয়সে তার স্ত্রীকে ফেলে চলে যায় রাজনীতি করবে বলে, তাকে কোন ভরণপোষণ না দিয়ে, কোন সম্বল না রেখে, বিবাহবিচ্ছেদ না করে, সেই প্রথাকে নিষিদ্ধ করনে কোন মন্ত্রীসভা?

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment