জজ সাহেব বলেছেন ময়ূর এর চোঁখের জল আসলে বীর্য। যেরকম গরু আসলে মা আর পীঠস্থান এ অর্ধ শিক্ষা লো জিডিপির কারন।
জজ সাহেব রক্ত মাংসেরই মানুষ। উনি টিভি সিরিয়াল দেখেন, বউ এর খ্যাদানি খান, মাঝেমধ্যে ক্লাবে পান, চোঁয়াড়ে ঢেকুর তোলেন, বুক পকেটে নিজের প্রিয় বাবার ছবি রাখেন মোবাইল এর সাথে।
জজ সাহেবদের সাথে চোখে কাপড় বাঁধা ন্যায় মূর্তির কোন সাদৃশ্য নেই। পাওয়া যায় না। জজ সাহেব যাই বলুন না কেন তিনি সত্য। তিনি সুন্দর।
শেষবার বিস্ময় প্রকাশ করেছিলাম আদালত এর এক বিকট রায় শুনে। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো রোধ করতে হাইওয়ের পাশের সব মদের দোকান তুলে দিতে। "জুতো আবিষ্কার" কেস আরকি।
আমার ফ্ল্যাট মুম্বাই এর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে থেকে ২০০ মিটার দূরে। এই হাইওয়ে একদিকে যুক্ত করেছে মুম্বাই শহরকে আর অন্যদিকে চলে গেছে বরোদা, আমেদাবাদ অব্দি।
প্রায় ২০০০ লোক থাকে বিভিন্ন ফ্ল্যাট এ। এরা যদি মদ্যপান করে হাইওয়ে তে গাড়ি চালায় বা সোজা কোন গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় বা মাঝ রাস্তায় মাতলামি শুরু করে? আমার বিল্ডিং এ মদ্যপান নিষিদ্ধ হবে না?
জুতা আবিষ্কার এ গোটা পৃথিবী চামড়া দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা হয়েছিল। এই দেশ এ দেখছি হাইওয়ের পাশে পুলিশ ভ্যান, কড়া নজরদারি, ব্রেথ এনালাইজার এর বালাই নেই। তথ্য ও প্রমাণ বলেছে দোকান গুলোই দোষী তাই দাও তুলে।
কানুন আন্ধা হ্যা জানতাম এখন দেখছি যান্ত্রিক ভি হ্যা। ঠাণ্ডা ঘরে বসে, ঠাণ্ডা গাড়ি চড়ে, লাল বাতি হেঁকে বিচার আসে। একে প্রশ্ন করা যায় না। খাড়া নেমে আসে মানহানি ও অবমাননার।
অথচ এ দেশেই তো আদালতের দীর্ঘশ্বাস থেকে খবর তৈরি হয়। ১২ বছর সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে জেল খেটে বেকসুর খালাস হয়ে যাওয়া, এক প্রভাবশালীর খুন এর বোঝা নিজের ঘাড়েচাপা ও জেল এ পচতে থাকা, রাষ্ট্রকে দেশপ্রেম সুখ দিতে ফাঁসিতে ঝুলে পরা। এ দেশেই তো দেখেছি। তবে কোন প্রশ্ন করিনি।
এ কানুন আন্ধা হ্যা। এ কানুন যান্ত্রিক হ্যা। এ কানুন এর ঘুমের ব্যাঘাত ট্রামের শব্দে হলে, ট্রাম খারাপ হ্যা। এ কানুন এর মেয়ে বিলেত ফেরত ট্রামডিপো তে সেল্ফি নিয়ে বাবাকে ট্যাগ করলে ট্রাম হেরিটেজ হ্যা।
মার্সিডিজ চেপে আইনজীবি আসলে এম্বাসেডর চেপে আসা কানুন বিব্রত করবেই। কানুন আন্ধা হ্যা। চোখ বুজে অল্প টাকার বান্ডিল নিলে সংবিধান বদলে যাবে না।
ঠান্ডা ঘরে রোবোটদের রাখা হয়। এদের চোখের চিপে কাপড় বেঁধে দিলেও তারা দেখতে পায় মাদারবোর্ড দিয়ে। ভারতের সমস্ত আইপিসি, সিআরপিসি আপলোড করে ডেটাবন্দি করে দিলেই কেল্লা ফতে হবে।
সুতরাং অবসর নেওয়ার আগের দিন সরকারকে তুষ্ট করে একটু ওকালতি করাই যায় গরু যাতে জাতীয় পশু হয়। সাথে ময়ূর এর যৌন এনালজি। চোখের জলে বীর্যস্খলন। এক ফোঁটাতেই কেস!
হাইওয়ে তে গাড়ির মধ্যে মেয়েটা কে রেপ করলো যারা, সতেরো বছরের যোনিতে লিঙ্গ, পাথর কুচি, জলের বোতল দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করলো যারা তারা নিষিদ্ধ হবেনা? বা নিদেনপক্ষে তাদের লিঙ্গটি বা গাড়িখানা? নাকাবন্দিতে দু হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার কসম এরা মদ্যপায়ী।
কিংবা কার ফ্রিজে কি মাংস রাখা আছে সেই অপরাধ এ পিটিয়ে মারার সংস্কৃতি? গরুর সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে মেয়েগুলোর বিসর্জন দেওয়া জিন্দাবাদ।
যেই ভিনদেশী ট্রাক গুলো মানুষ পিষে কয়েক বছর জেল এর রুটি খেয়ে আসে, তারা বার এ বসে মদ্যপান করে না। তাদের জন্য হাইওয়ের পাশে লোক দাঁড়িয়ে থাকে। ঝোলা নিয়ে, মেয়ে নিয়ে, পুরিয়া নিয়ে। কানুন সব জানে। কারন পুলিশ জানে এদের। এদের ঘামের গন্ধ চেনে। তবে যে ছেলেটি মদ না খেয়েও, নিজের ভুল না থাকলেও পিষে মরে? কানুন অন্ধ কিন্তু বোবা হল কই?
বিবেক বুদ্ধি রক্ত মাংস বোধ ভাবনা- কানুন এর থাকতে নেই। থাকার মধ্যে রায় থাক। আইনরক্ষক, গাছ তলার মুহুরি, লক্ষ লক্ষ পেন্ডিং কেস সামলে রাখা কেরানির আয় আছে আর কনটেম্প এড়িয়ে চলা কিছু নিউজপ্রিন্ট।
--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment