| বম্বাই মেরি জান |
আমি মুম্বাই নিবাসী এক সাংবাদিক। এ শহর এ আসার পর থেকেই ভাবি আবার যদি একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়? কি হবে? কি করবো?
আমাকে আপিস ঢোকার আগে রিসেপশেন এ রোজ যে মহিলা গুড মর্নিং বলে, বা যে ভাডাপাও ব্যাপারী হেসে বলে দেয় কাল খুচরো দেনা, বা যে হাহাহিহি করা পাব থেকে বেড়িয়ে আসা রাত গুলো বা আমার মধ্যরাতের একলা গান শুনতে শুনতে বাড়ি ফেরা? আট বছর আগে এ সবই তো এক ছিল।
এ শহর আমার কাছে লড়াকু মধ্যবিত্ত মানুষগুলো যারা প্রতিদিন ট্রেন এ চেপে আপিস যায় আর প্রতি রাতে নতুন স্বপ্ন বোঁনে উচ্চাশার।
এ শহর বোধহয় এমন একটি মাত্র শহর যার সমস্ত শিরা উপশিরা জুরে বাস করে যৌবন। জৌলুশ। প্রমাণ করার তাগিদ।
আজ এই এলাকা জুড়ে আর পাঁচটা দিনের মতই ব্যস্ততা। কিছু কৌতূহল। লিওপল্ট কাফে এখন পর্যটন কেন্দ্র। এখানে দাম দিয়ে লোকে গুলির চিহ্ন দেখতে ঢোকে।
মুম্বাই পুলিশ রোজ রাতে নেশাখোর ড্রাইভার ধরার ছকে নজর রাখে প্রতি গাড়িতে। সব চেয়ে কঠিন কাজটা বোধহয় ওদেরই।
বাকি থাকলো যে ভবঘুরে রা তারা আমার মত চুপচাপ তাজ এর দিকে তাকিয়ে মানুষ দেখতে থাকে ছুটির শনিবার। ছাব্বিশ এগারোর আট বছর যে শনিবার।
কে কত বেশি গড়ুভক্ত আর কে কত বেশি গড়ুখেকো, এ শহর বোধহয় তা ভাবেও না। ভাবনা যেটুকু তা ওই ব্যাগটা নিয়ে যা আধ ঘন্টার উপর পরে রয়েছে। বা ওই চকলেট বোম এর আচমকা আওয়াজ বা খবরের চ্যানেল এ দেখানো সন্দেহভাজন দের সমুদ্রপারে ঘুরঘুর করতে দেখা। বা কোন উর্দু তে লেখা নৌকো।
ভয় লাগে। যে মানুষ টা আমার পাশে ট্রেন এ গান শুনতে শুনতে যাচ্ছে তার, যে বার এ বন্ধুর সাথে গল্প করছে তার, যে কাজে অকাজে নিজের প্রিয়জন কে ফোন করে জানে কোথায় আছো তার।
একেই বোধহয় ত্রাস বলে। কিন্তু যে শহর মায়াজাল বুঁনতে শেখায়, কান্না পেলে সমুদ্রকে ফিসফিস করে অনুযোগ করতে শেখায় আর অচেনা মানুষ কে বন্ধু হতে তার কি ভয়? সে তো বুক চিতিয়ে বাঁচবে, দারুণ বম্বের বৃষ্টি ভালোবাসবে আর দুম করে রাম এর নেশায় কোলাবা তে দাঁড়িয়ে বলবে:
সালাম বম্বে!
mayukhrghosh.blogspot.com
No comments:
Post a Comment