কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Monday, August 20, 2018

পরশী দেশের পাক ইরাদা, নাপাক করবে বিগ ব্রাদার

| পরশী দেশের পাক ইরাদা, নাপাক করবে বিগ ব্রাদার |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভাষন শুনছিলাম লাইভ স্ট্রিমিং এ৷ পুরুষমানুষ নাকি গ্রেসফুলি বৃদ্ধ হলে তার আকর্ষণ দ্বিগুণ বাড়ে। ইনি  তো বাইশ গজের মতোই এখানে এই রতিভূবনের ও ক্যাপ্টেন। কত যে পাকিস্তানি আম্মির বুকে চিনচিন ব্যাথা বাড়লো আজ টিভিতে ওকে দেখে। ছেষট্টি বছর বয়সে হাফ রিম চশমা পরে বসলেন কাগজ হাতে।

মেপে মেপে একঘন্টার ভাসন। তার মূল প্রতিপাদ্য নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন। আগেই বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ব্যবহার করবেন না। আজ বললেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত করবেন৷

ওর বক্তৃতা শুনে জানলাম, ওদেশে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ৫২৪জন মানুষ কর্মরত। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের জন্য ৮০টি গাড়ি বরাদ্দ আর ৩৩টি বুলেট প্রুফ ভ্যান মজুত ছিল। কাপ্তান সাহাব প্রথমদিনেই সিক্সার মেরে ঘোষণা করলেন, দুটো বুলেট প্রুফ গাড়ি আর দুজন কর্মী রাখবেন নিজের ব্যবহারের জন্য৷ বাকি সব নিলাম করে বিক্রি করবেন। সেই টাকা শিক্ষাখাতে ব্যবহার হবে৷

এমনিতে এদেশে ও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সাংসদ, মন্ত্রীদের পাল্লায় সব প্রাসাদ বা সরকারি বাংলো। পাঁচ কামরা ছয় কামরার সব লুট্যিয়ান স্থাপত্য।  এরপর আছে রাজ্যে রাজ্যে রাজভবন। পাখা, আলো, জল, গাড়ি, প্রজা, প্রহরী সবকিছু ট্যাক্স এর টাকায়। উঠিয়ে দেওয়া যায় কিনা জানা নেই কিন্তু একবার নাকি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সব সাংসদ বাংলো মেরামত করে আরো ঘর বানানোর। যাতে আরো সাংসদের থাকার জায়গা হয়। হোটেলে রাখতে না হয়। অবশ্যই মানা হয়নি৷

খান সাহেব আরো বললেন, দেশের মাদ্রাসাগুলোকে আধুনিক করে তুলবেন। ওখান থেকে যাতে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার উঠে আসতে পারে। এ সূত্রে জানিয়ে রাখি, ২৬/১১ র কাসাব ও অন্যান্যদের মাথা খাওয়া শুরু হয় এক মাদ্রাসা থেকেই। হাফিজ সঈদ ও মাদ্রাসায় মাদ্রাসায় জ্ঞান বিতরণ করে বেড়ান৷ তবে বলছি না সব মাদ্রাসাই সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘর। এসব বললে এ দেশের অনেকে গোঁসা করবে। নাগপুরে চলে যাওয়ার ও দাওয়াই দিতে পারে৷

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাকিস্তানিদের কাছে ইমরান সরকার আপিল করবে পাকিস্তানের জন্য ডলার দিয়ে সাহায্য করতে৷ অর্থনীতি মজবুত করতে।

আর একটা কাজ ইমরান করবেন বলে বলেছেন, তা হলো পর্যটন শিল্পের উন্নতিসাধন। বিদেশীদের আশ্বস্ত করবেন, রিসোর্ট বানাবেন গোটা দেশ জুরে। এটা সত্যি পাকিস্তানের ভৌগলিক সৌন্দর্য্য বিশ্ব কেবল একভাগ দেখেছে৷ গিলগিট, বালটিস্থান, বালুচ, সিন্ধ, পাক অধিকৃত কাশ্মিরের অনেক জায়গা বিশ্বমানের টুরিস্ট স্পট হতে পারে সন্ত্রাসের ভয় না থাকলে।

এসবই পাক প্রস্তাব৷ স্বাধীনতার ৭৩ বছর বাদে যদি কোন রাষ্ট্রপ্রধান এগুলোর মন দেন, ভালো লাগবেই৷ কেজরিওয়ালকে নিয়ে ও অনেকে এরকম স্বপ্ন দেখেছিল৷ প্রথম দিন এসেই বলেছিলেন বিদ্যুৎ এর বিল হাফ করে দেবেন। করে ও ছিল। এ ও দুম করে করে দিতে পারে।

তবে টেনশনে আছি।একজন ম্যাভারিক শো ম্যান প্রধানমন্ত্রী যার পকেটে পরমানু বোমা রাখা আর চোখে উচ্চাশা৷ ক্ষমতায় এসেছে সেনার কাঁধে ভর করে আর তালিবানদের পিঠে চড়ে৷ এরকম একটা কম্বিনেশন প্রথমদিনেই একটা সমাজতান্ত্রিক আর জাতীয়তাবাদী মেশানো তেলচুপচুপে দেশত্ববোধ খাইয়ে দিয়েছে পাকিস্তানিদের৷ এর পর কি করবে তা আল্লাই জানে।

কিন্তু আমার ভয় অন্য। ইমরান যে গতিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এসব নিয়ে, খোদা না খাস্তা যদি সত্যি নয়া পাকিস্তান টাইপ কিছু বানিয়ে ফেলেন যেখানে শান্তির দূতই কেবল পতাকা নাড়াবে আর ফরিস্তারা আঙুল, তবে এ পারে আমাদের কপালে দুঃখ আছে৷ অবিলম্বে চায়না, জাপান, বাংলাদেশ বা নিদেনপক্ষে ভুটানকে প্রধান শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। রাবন মরলে কি আর রামের বীরগাঁথা জমে? রাম সাজতে হলে রাবন সাজাতে পারা দরকারি। না পারলে সব কিছু ঝোলা থেকে বেরিয়ে যাবে।

তখন কথায় কথায় পাকিস্তানের চক্রান্ত বলা যাবেনা। পাড়ার কলে জল না এলে ও পাকিস্তানের দোহাই দেওয়া যাবে না। দেশে মুদ্রাস্ফীতি হলে ও পাক সন্ত্রাস বলা যাবেনা। বিরোধী প্রশ্ন করলেও থামানো যাবেনা সীমান্তের সেন্টিমেন্ট দিয়ে৷ সে বড় অস্বস্তি হবে। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা না খেললে আর কি বা খেললাম। কুড়িয়ে বাড়িয়ে কিছু হিন্দু-মুসলিম খেলা আর ওই কাস্ট কাস্ট দ্বন্দ্ব।

অবশ্য জাঙ্গিয়ার যেরকম বুক পকেট হয়না, তৃতীয় বিশ্বের দেশের ও বিসামরিকীকরণের বিলাসিতা মানায় না। এতে বিগ ব্রাদারেরা রেগে যায়। আপনার শিক্ষার বাজেট যদি ফ্রান্স থেকে যুদ্ধবিমান কেনার বাজেটের বেশি হয়, বুঝতে হবে আপনি অপদার্থ। অবিলম্বে অস্ত্র বর্ষণ করে সরকার ফেলে দেওয়া শ্রেয়। ইজরাইল থেকে কেনা অস্ত্রের থেকে আপনি যদি বেশি উত্তেজিত হন, দেশের সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সমৃদ্ধি নিয়ে, সিরিয়াস রাষ্ট্রীয় প্রবলেম বাওয়া।

সুতরাং পেট্রো ডলার আর কালাশনিকভ চমকালেই ভারত পাক ঝলমলাবে৷ এ দুই দেশের ঝামেলা শেষ হওয়া মানে বৃহত্তর ক্ষতি। অস্ত্র বাজারে খাঁ খাঁ শূন্যতা। মুক্ত বাজারে তা কি করে বরদাস্ত করা যায় মিঁঞা!পরশী দেশের পাক ইরাদা থাকতেই পারে, নাপাক করবে বিগ ব্রাদার৷ আংকেল স্যামের দিব্বি লেকে রহেংগে পাকিস্তান।

অগত্যা কোক স্টুডিও দূর হাটাও। পুষে রাখা ঘৃণার দুশমনি যতাও। মাথায় রাখবেন,  আপনি যতই মনে মনে স্বপ্ন দেখেন না কেন শচীন আর শোয়েব আখতার একদিন একটিমে খেলবে আর সব বিশ্বকাপ অবিভক্ত ভারত জিতে নেবে, র‍্যাডক্লিফ সাহেব অন্যত্র ভেবেছিলেন ও সে মতো ৪৭ সালে পিচ ও বানিয়ে গেছিলেন। এবার আজীবন শত্রু শত্রু খেলুন।

©------ ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

কেরলকে বেঁচে ফেরাতে ওদের পাশে কেন থাকবেন?

| কেরলকে বেঁচে ফেরাতে ওদের পাশে কেন থাকবেন?|

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

১). রিজার্ভ ব্যাংকের একজন ডিরেক্টারের মতে, সবরিমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ করতে দেওয়াতেই নাকি কেরালায় ভয়াবহ বন্যা!

২). ডানপন্থীদের মন্তব্য, গরু কাটতে কাটতে পাপের ঘড়া ভরে গেছিল৷ তাই কেরালায় ভয়াবহ বন্যা!এসূত্রে জানিয়ে রাখি, কেরালার বিফ ডবল ফ্রাই মালাবার পরোটা দিয়ে যারা খাননি, তারা এখনো পৃথিবীতে আছেন। স্বর্গ কি তা চেখে দেখেন নি তারা।

৩). বিশাল হৃদয় সম্রাটদের বক্তব্য, কেরালা লাল পতাকা, দেশদ্রোহীদের ভিড়ে ভরে গেছিল। ভীড় কম করছে ভগবান।

৪)৷ টুইটার এ অনেকে বলছে, সব যদি কেন্দ্র করে, রাজ্য কি করবে? হেলিকপ্টার থেকে নৌকো সব যদি কেন্দ্র পাঠায়, রাজ্য সরকার কি কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়ে শোনাবে?

এক এক করে মাধ্যমিকের প্রশ্নবিচিত্রার উত্তরমালা পাবে৷ এসব সময় মাথা ঠান্ডা রাখাটাই মূখ্য। মোটা চামড়া হওয়াটাই শ্রেয়। কারণ পথে ঘাটে কৌটো ঝাকাতে হবে৷ পতাকা বিছিয়ে টাকা তুলতে হবে। রবিবার সকালবেলা লুচি আলুরদম পরিত্যাগ করে বেরিয়ে পরতে হবে কাপড় জামা, ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন জড়ো করতে। এসব দিনে ভুলে ও রাগ পুষবেন না। ভাববেন না, আমাকে তো ভোট দেয়নি৷ কেন করবো! 

পতাঞ্জলীর চবনব্রাশ খেলে নাকি মন ও ঠান্ডা হয়। শান্ত হন। মাথায় রাখুন, ঠিক এই কারনেই আপনি লালচে রঙের যা কিছু আজ ও পছন্দ করেন। দলমত নির্বিশেষে। শক্তি চাটুজ্যে বলে গেছেন। মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।

এবার উত্তরমালা :

১).অনেক কট্টরপন্থী পক্ষের অনেক কথা উপেক্ষা করে মন্দির মসজিদ নিজের দরজা খুলে দিয়েছে৷ ধর্মের জন্য মানুষ না মানুষের জন্য ধর্ম। তাই ত্রিভাঙ্কুর দেবসম, যারা সবরীমালা সহ ১২০০ মন্দির নিয়ন্ত্রণ করে কেরালাতে, তারা অর্থসাহায্য করে ও মন্দিরের প্রধান ফটক খুলে বানভাসি মানুষের মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করে দিয়েছে৷ গির্জাতেও তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২). ঋগ্বেদের যুগে আর্যদের কাছে গাই মানে মহিলা গরু ছিল খুব মূল্যবান অর্থনৈতিক সম্পদ। তাই পুরুষ গরুকেই ভক্ষণ করা শ্রেয় ছিল। বেদে ‘অঘ্ন’ লেখা সত্ত্বেও সেযুগে গরুকে যজ্ঞে উৎসর্গ বা বলি দেওয়ার চল ছিল ও তার মাংসও খাওয়া হত, এমনকি গরুর চামড়ারও প্রচুর ব্যবহার ছিল। ঋগ্বেদে মুখ্য দেবতা অগ্নিকে ঘিয়ের সাথে যেসব মাংস আহুতি দেওয়া হতো তার মধ্যে আছে ‘অশ্ব, ঋষভ অর্থাৎ বলদ, উক্ষ্ণ অর্থাৎ ষাঁড়, মেষ এবং ‘ভশা’। সে বড় সুস্বাদু ছিল। কিন্তু ততদিনে কাস্ট সিস্টেম এসে গেছে। নরম মাংস ব্রাহ্মণ খাবেন। ইদানীংকালে যা ভক্ষন করেন, তা পুরুষ গরু বা মোষ। মানে বাফ!

৩). কেরলে মানুষের গড় আয়ু এখন ৬৮। প্রতি হাজারে শিশু মৃত্যুর হার ২৩জন। ভারতের গড় ৩৭। শিক্ষার হার ৯৫% মানে বোধবুদ্ধিহীনতার হার ৫% শতাংশ। সুতরাং কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, তারা বোঝে। ভোট ও সেভাবে দেয়। পাঁচ বছর বামফ্রন্ট, পাঁচবছর কংগ্রেস জোট। বাংলার মতোই ওখানে ও একটা চাড্ডি এলার্জিন বাতাসে ঘোরে। কিছু বেগড়বাই দেখলেই সবাই একজোট হয়ে যায়। এখানে লাল পতাকা মানে হক কথা সোচ্চারে বলবার পতাকা। না বললে, সে পতাকা বর্জন করে লোকে। এখানে লাল পতাকা লড়াই এর। খেটে খাওয়া মানুষের পাশে থাকার। বানভাসি মানুষের পাশে থাকার৷ একে নামিয়ে দেওয়া কঠিন।

৪). অনেকে বলছে বটে যে সব কাজ কেন্দ্র করলে, রাজ্য কি করবে। ইগনোর করুন। তারা একদম গবেট টাইপ ফেসবুকে লাইক পেতে এসব করছে। যাদের নূন্যতম যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো সম্পর্কে ধারনা আছে, তারা জানবে। হেলিকপ্টার নৌসেনার নৌকো, স্পিড বোট এসব কেনা হয় আমার আপনার, রাজ্যের টাকা দিয়ে। কিন্তু দরকার পরলে এগুলোকে ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রের পারমিশন লাগে৷ সেনাবাহিনী বা নৌসেনা ও একদিনে কেরালার ম্যাপ হৃদয়াঙ্গম করে ফেলে নি। রাজ্য সরকার, জেলার প্রশাসনের সাথে প্রতি মুহূর্তে কথা বলে, কাজ করছে। রোজ সকাল বিকেল বৈঠক হচ্ছে কেন্দ্র রাজ্যের। বাজার গরম করতে এসব বলা। খোঁজ নিয়ে দেখুন, যারা এসব প্রশ্ন করছে, তারা একটাকা ও ডোনেট করেনি। বরং নাথুরাম গোডসের মূর্তি বসাতে ডোনেট করতে আগ্রহী হতে পারে। যতসব!

ছোটবেলায় দেখতাম বন্যা, ভূমিকম্প জাতীয় কিছু হলেই একদিনের বেতন দান করা দস্তুর ছিল। তারপর থাকতো চালা ডাল দান করা ভারত সেবাশ্রমকে। কাপড় অর্থ দান করা লাল পতাকা বিছিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পাজামা ফতুয়াকে। ওরাই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতো।

এখন ওসব দেখা যায় না বিশেষ। পেটিম এ চোখের পলকে ট্রান্সফার হয়ে যায় দান। জাগো জাগো সর্বহারা উচ্চারণ করার ও আগে। তবু ওই যে রামকৃষ্ণদেব আউড়ে ছিলেন না, পাদপদ্ম-তত্ত্ব-বোধ-শান্তি-সৌখ্য-দায়কম্ সক্ত- চিত্ত ভক্ত-সূনু নিত্য-বিত্ত-বর্ধকম্। যে সব্জি বেচে, যে রিক্সা টানে, যে মুটে, যে মজদুর, যে ক্ষেতচাষী, যে মাথায় একতাল গু নিয়ে ম্যাথরের কাজ করে, একবার কান পেতে শুনুন। তার ও দান করতে মন চায়। সে ও একদিনের বেতন দিয়ে দেবে ঠিক করে ফেলে। সে ও গলার কাছে দলা পাকানো কি যেন সামলে বলে ফেলে, পাশে আছি।

শুনলাম অনেক সাংসদ,  বিধায়ক একদিনের বেতন দান করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। আরাভাকুরুচির চাষী ও শপথ করেছে। রোহতাকের ম্যাথর ও ঠিক করেছে। গুঁড়্গাও এর শ্রমিক ও ঠিক করেছে। নিতান্তই অল্প হবে সে টাকা কিন্তু শোনা যায় এসব দানে নাকি আত্মীয়তার পরশ লেগে থাকে। মৃতপ্রায় ও জীবন্ত হয়। এবার বলো কে জিতলো তবে?

©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

তখন বাজপেয়ী ছিল, বসু ও ছিল : অটল ছিল সৌজন্য

| তখন বাজপেয়ী ছিল, বসু ও ছিল : অটল ছিল সৌজন্য |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

'পাতালঘর' ছবিতে একটা গান ছিল, "অসতর্ অসতর্ অসতর্ / পৃথিবীটা চালাবার একটাই মনতর্।" আর তা পারমানবিক অস্ত্র হলে তো কথাই নেই। আমেরিকার মতো বিগ ব্রাদার ও তখন সমঝে চলে৷ পাকিস্তান তো মেনি। অটল বিহারী বাজপেয়ী  মন্দির বানাক ছাই না বানাক ভারতবর্ষকে পরমাণু শক্তিধর বানিয়ে গেছে। তাকে নিয়ে মাথায় তুলে নাচুন, ঘেন্নায় ছবিতে কালি মাখান কিন্ত তাকে উপেক্ষা করতে পারবেন না।

অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতে কী কী মাথায় আসে আপনার?

১৩দিনের প্রধানমন্ত্রী, পোখরানে পারমানবিক অস্ত্র পরিক্ষা, কার্গিলে যুদ্ধ জয়, ভারত-পাকিস্থান বাস পরিসেবা, সোনালী চতুর্ভূজ সড়কপথ, হাঁটুর অস্ত্রোপচার প্রথম পাতার হেডলাইন হওয়া, অনেকটা কথা বলে মাঝে দীর্ঘ বিরতি, শেখর সুমনের হুবহু মিমিক্রি, বাবরি মসজিদ ভাঙার আগের রাতে রক্তগরম বক্তৃতা?

এর একটা শব্দ ও আপনার জুমলা শব্দটার সমার্থক মনে হয়? জুমলা মানে ভাঁওতা। মানে প্রতারণা বা প্রবঞ্চনা। এটি বিশেষ্য পদ। ইদানীং রাজনৈতিক কটাক্ষ করতে ব্যবহার করা হয়।

অটল বিহারী কে নিয়ে পেপারে চ্যানেলে নিত্যদিনের খিল্লি করা, মিমিক্রি করা, কার্টুন, কটাক্ষ লেগেই থাকতো। বাজপেয়ী তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন পলিটিকাল স্যাটায়ার। ফোনে সম্পাদককে জানাতেন ও সে কথা। রেগে একটা ও চ্যানেল বন্ধ করার বা সাংবাদিককে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে শোনা যায় নি। উল্টে ডেকে পরের দিনের হেডলাইন দিতেন। সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতেন, হিন্দি কবিতার বই উপহার দিতেন। এই ব্র্যান্ড বিল্ডিংয়ের জন্য ৪০০০ কোটি টাকা খরচা করতে হয়নি৷ ওটা সপ্রতিভ ছিল।

অটল বিহারী সেই মানুষ যে তদানিন্তন মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে গুজরাট দাঙ্গার পরে রাজধর্ম পালনের পরামর্শ দেন। রাজার কাছে প্রজায় প্রজায় ভেদাভেদ রাখতে নেই। ধর্ম জাত নির্বিশেষে তারা সমান। গোটা দেশের সাংবাদিক সেদিন অপ্রস্তুত ফ্যাকাশে হাসির ছবি তুলে রেখেছিল৷ মাঝে মাঝেই অভিব্যক্তি বদলে যাওয়া তুলে রেখেছিল তার। দমবন্ধ করা স্তব্ধতা কথার মাঝে।

অটল বিহারী সেই মানুষ যে কট্টর হিন্দুত্বকে স্রেফ নিজের ক্যারিশ্মাতে আম ভারতীয়দের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলে। মানুষ ভুলে যায় গোডসে কে। তাদের সামনে ধর্ম বলতে তখন রাম আর রাজা বলতে বাজপেয়ী। আমি তখনকার কথা বলছি যখন গান্ধী পরিবারের প্রতি মানুষের সহানুভূতি তুঙ্গে। বিজেপির একটা সাংসদ আর প্রবল জনবিচ্ছিন্ন। এরকম সময় জন্ম নিলো এক হৃদয় সম্রাট যে হিন্দিতে কবিতা লেখে, আবৃত্তি করে, গো বলয়ের প্রান জয় করে আবার চরম দেশভক্ত। অটলবিহারীর হিন্দুত্ব মডেলে ফ্রিজ খুলে গরুর মাংস খোঁজার অজুহাত ছিল না। সংখ্যালঘুকে পিটিয়ে মারার প্রয়োজন ছিল না।

অটল বিহারী সেই মানুষ যে রাজদীপ সারদেসাই এর মতো সাংবাদিককে কোন জায়গায় ভালো স্টেক রাঁধা হয় তার উপদেশ দিতে পারেন। আরএসএস এর থেকে নিজের মন্ত্রীত্ব আলাদা রাখতে পারেন। জর্জ ফার্নান্ডেজ, অরুন শৌরীর মতো মানুষদের সামনের সারিতে আনতে পারেন যাদের আরএসএস যোগ নেই।

আরএসএস এর কট্টর সমর্থক হয়ে ও নেহেরুর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করতে চলে যেতে পারেন। ইন্দিরার পাশে দাঁড়িয়ে বলতে পারেন, "ভারতমাতা আজ তার সবচেয়ে উজ্জ্বলতম সন্তানটিকে হারালো"৷

আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি, সেই প্রজন্মের অনেকগুলো ঘটনাবহুল জিনিসের সাথে অটল বিহারী বাজপেয়ী জড়িয়ে। এ দেশের আধুনিক ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে। এই ধরুন বাবরি মসজিদ ভাঙা না পরলে ভারতের রাজনৈতিক কম্পাসটাই অন্য দিক নির্দেশ করতো। ভারতের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতার প্রথম বিষবৃক্ষ তো বাজপেয়ীজীর প্রশ্রয়েই। যেমন ২০০২ সালে দাঙ্গার জন্য বকা লাগানোর পরে ও যদি প্রশ্রয় না পেত তদানিন্তন মুখ্যমন্ত্রী, আজ কি সে এই বিরাট শাখা প্রশাখা বিস্তার করতে পারতো দেশের  মানচিত্রে? প্রশ্রয় বড় লাগামছাড়া জিনিস। আদবানীজী জানেন।

কিছু বিপ্লবী আজ বাজপেয়ীর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই তেড়ে খিস্তি করছে। লক্ষ্য করে দেখবেন, এরাই জ্যোতি বসুকে বুড়ো ভাম বিদায় নিয়েছে বললে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। বুদ্ধবাবুর দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন হয়ে যাওয়াকে পাপের ফল বললে উত্ত্যক্ত হয়। এরা সংসদীয় গণতন্ত্রে আস্থা রেখে ভোট রাজনীতি করবেন কিন্তু বাঁ হাতে ফুলটুকু ও দিতে যাবেন না। পাছে লাইনচ্যূত হয়ে যায় শেষতম দেউলটি। এদিকে ১৯৮৮তে ভিপি সিংকে সামনে রেখে কলকাতার শহিদ মিনারে  বাজপেয়ী ও জ্যোতি বসু জনমোর্চার সভা করলে, ভীরেন শাহ এর ঘরে গোপন মিটিং করলে ক্ষতি নেই। ওটা রাজনৈতিক কৌশল।

অটল বিহারী বাজপেয়ী সেই যুগের শেষ কিংবদন্তি  যারা বিরুদ্ধমত শুনতে পছন্দ করতেন। যারা কথায় কথায় সেনাবাহিনীর সাথে আম নাগরিকের তুলনা করতেন না, যারা সমালোচনা অপছন্দ হলেই দেশদ্রোহী বলে দেগে দিতেন না।

অটল বিহারী বাজপেয়ী, করুনানীধি, জ্যোতি বসু,  সোমনাথ চাটুজ্জে সেই প্রজন্ম যারা সৌজন্য শব্দটার মানে প্রজাতন্ত্রে বুঝতেন। যারা রাজনীতির উপরে স্টেটসম্যানশিপকে রাখতেন৷

এখন শেক্সপিয়র থাকলে বলতেন,  Something is wrong in the state of India। আমরা বোধহয় ক্রমশ পিছোনের দিকে হাঁটা লাগিয়েছি।

জ্যোতি বসু তাঁর ভাষণে খোলাখুলিই বিজেপি দলকে ‘অসভ্য ও বর্বর’ বলে গালমন্দ করতেন। একবার বাজপেয়ী অনুযোগের সুরে জ্যোতি বসুকে বলেছিলেন, আপনি আমাকে কেন ‘অসভ্য বর্বর’ বলে জনসমক্ষে গালমন্দ করেন বলুন তো? বসু তাঁকে উত্তর দিয়েছিলেন, আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে ওই কথা বলি, তা তো নয়। আমি আপনাদের দলকে এই কথা বলি। বাজপেয়ী বলেছিলেন, কেন ? উত্তরে বসু বলেছিলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে আপনাদের দল যে অন্যায় করেছে, তারপর ‘অসভ্য ও বর্বর’ ছাড়া আর কোন কথা আপনাদের দল সম্পর্কে খাটে বলুন তো? যদি অন্য কোনো শব্দ আমাকে জানাতে পারেন, জানাবেন।

মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জ্যোতি বসু সভা-সমাবেশে এই ঘটনাটি পুরোটা বলতেন, ঘটনাটি বলে শেষে বলতেন, ‘আজ পর্যন্ত বাজপেয়ী কিন্তু আমাকে জানাননি যে ‘অসভ্য ও বর্বর’ ছাড়া আর কোন শব্দ তাদের দলের জন্য ব্যবহার করা যায়’! বাজপেয়ী চুপ করেই থেকেছেন।

হয়তো তখন sensibility বলে কোন শব্দ ছিল। রাজনৈতিক সৌজন্য, যুক্তিবাদ বেঁচে ছিল। ব্যক্তি ও দলের ফারাক বোঝার মস্তিষ্ক ছিল। আধা বিপ্লবী আর পুরো অর্ধশিক্ষিতের সংখ্যা দু দলেই কম ছিল। তখন বাজপেয়ী ছিল৷ বসু ও ছিল। আর অটল ছিল সৌজন্য।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

দুধ মাংগোগে তো ক্ষীর দেংগে: ছুট্টা মাংগোগে তো চিড় দেংগে

| দুধ মাংগোগে তো ক্ষীর দেংগে: ছুট্টা মাংগোগে তো চিড় দেংগে |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

মে দিবস আর স্বাধীনতা দিবসে আমি যেন তেন প্রকারে ছুটি নিই। এদিনগুলোতে কাজ করলেই একটা সর্বহারা কমপ্লেক্স কাজ করে। তখন শৃঙ্খল ফিঙ্খল ভেঙে খিস্তি করে দিই উচ্চনেতৃত্বকে৷ ইয়ে মানে আপিসে। হঠাৎ লেবার ল' জেগে ওঠে প্রানে। আদপে হিনমন্নতা আর চিত্তব্রত মজুমদারের রাজ্য থেকে আসার দাপট।

তো এ বছর ও বার্ষিক ভারতমাতা পুজোয় ছুটি নিয়েছিলাম। চাঁদবদনে আগে পাড়ার পতাকা উত্তোলনে যেতাম। জিলিপি ও সিঙ্গারা আজাদির থেকে ও লোভনীয় ছিল৷ একবার শেষ মুহুর্তে চিফ গেস্ট ধোকা দিয়ে দাওয়ায় আমার মাকে পতাকা উত্তোলনে অনুরোধ করা হয়। অবশ্যই পরিচয় দেওয়া হয় এলাকার বিশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবে৷ তখন কে দেখে আমার ছাপান্ন ইঞ্চির ছাতি। বাড়ি থেকে উষার মাঠ ২০০মিটার। মাকে স্বসম্মানে আনতে ১০০টাকা রিক্সা ভাড়ার খরচ আমাকে দেওয়া হয়৷ ভাড়া ২০, বাকি আমার কাটমানি। উপরি হিসেবে আমার টিমের তিন বন্ধু ও আমাকে স্পেশাল গেস্ট প্যাকেট ও দেওয়া হয়। তখন রে ও মারটিন ভরসা। অক্সফোর্ড ইংরেজি ডিকশনারিতে নেপোটিজমের মানে থোড়াই জানি। সে প্রাগৈতিহাসিক কাল। কলকাতায় লোডশেডিং হতো।

আজ সকাল সকাল বাজারে গেছিলাম। হারুনের দোকানে মাংস কিনলাম৷ সে ব্যাটা অন্যদিন ফেজ টুপি পরে মাংস কাটে, আজ গোটা দোকান চেন ফ্ল্যাগে মুরে দিয়েছে। বাড়তি মেটে ও গিলে ফ্রি এক কেজির ওপর মুরগি কিনলে।

সব্জি বেচে যে সৈফুল সে দিনাজপুরের।  যদিও মাঝে মধ্যেই নয়ডা পুলিশ  বাংলাদেশী বলে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায় ওকে৷ ওর একটা মিষ্টি বউ আছে। ঘোমটা পরে বাঙাল ভাষায় সব্জি বেচে। ওদের এনআরসি হয়নি এখনো। তাই হুমকি আসে বা টাকা যায়। এসব তখনই হয় যখন তোলা কম পরে।

সৈফুল আজ গাজর আর লংকার মাঝে রসুন রেখে জাতীয় সব্জির পতাকা বানিয়েছিল৷ যদিও বেটাচ্ছেলে ২০টাকার আলু নিলো ২৫। আর ক্যাপসিকাম পচা দিলো।আমি ও অবাঙালি ক্রেতা একসাথে প্রতিবাদ করায় বলে "আজাদি কা জশন মে"। আমরা চুপ৷ আজাদি ওর ও বটে৷

বন্ধুবর সোহমের সাহায্য নিয়ে তরল স্টক করে রেখেছি আগেই৷ এসব দিনেই তো গ্যালন গ্যালন গিলতে হয় আর মুতে পাকিস্তানিদের পগার পাড় করতে হয়৷ পিছনে হাই ভলিইউমে চলবে রহমান। আর রাত নটায় নেশন যা জানতে চায়। হিক! কেনার মধ্যে সোডা, গিন্নির জন্য মিষ্টি দই, চিপস, একটা দুধের প্যাকেট। ফুল ক্রিম।

মোদি সাহেবের দৌলতে আজ সবাই ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহার করে। ক্যাশ পকেটে থাকেই না। তবু আজ বার্ষিক ভারতমাতা পুজো। আজ পাছা মোটা মানি ব্যাগ নিয়ে গেলাম মেগাস্টোরে। ওখানে আলপিন টু আমলকি সব পাওয়া যায়।

নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট জিনিস কেনা হয়ে গেলে ও ওখানে একটা লম্বা লাইন দিতে হয়৷ ওই সময় আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে নেওয়া যায়। এই যেমন ডিসকাউন্ট এ ডিওস্প্রে,স্টক ক্লিয়ারেন্স চকোলেট, বাক্সবন্দি লজেন্স, দশটাকার রেজার ইত্যাদি।

আমার সামনেই যে লাইনে, ওর হাতে একটা দুধ আর একটা ডালের প্যাকেট ছিল। আর একটা একশো টাকার নোট। ক্যাশ কাউন্টারে সারি সারি পতাকা৷ ওর ভারী শখ হল একটা পতাকা কিনবে। পাঁচটাকা দাম৷ একশো চারটাকা বোধহয় হয়েছিল। ছুট্টা নেই৷ কাউন্টারের কর্মচারী চারটাকা দিতে বলে৷ নেই।

আমার কৌতূহল জাগলো এরপরের ঘটনা নিয়ে৷ কি হবে? তবে কি জাতীয় পতাকা রেখেই ওকে চলে যেতে হবে? জাতীয়তাবাদী ক্রেতা পুঁজিবাদের কাছে হেরে যাবে ইত্যাদি। আমার এঁদো পচা মনকে শান্ত করে কর্মচারী বললো ওকে, যান পরে দিয়ে যাবেন। চারিদিক থেকে বিউগলের শব্দ। গলার কাছে দলা পাকানো দেশত্ববোধ। এই তো চাই কাকা।

এবার আমার পালা। সোডা, দই, চিপস, দুধের প্যাকেট রাখলাম৷ চোখে এক অদ্ভুত সানি দেওলের উজ্জ্বলতা৷ কাউন্টার থেকে উঠে এলো বানী : স্যার ১৯৪ টাকা। গান্ধীজী রেডি৷ দুটো নোট এগিয়ে দিলাম।

অফিসে তিরঙ্গা ব্যাজ পেয়েছি। লোকাল নেতার থেকে গাড়িতে লাগানোর পতাকা। বাড়িতেও সৌখিন ফ্ল্যাগ আছে৷ ফ্ল্যাটে ঢোকার মুখে ও। জাতীয়তাবাদে কমতি নেই৷

কাউন্টারের কর্মচারী ২০০ টাকা নিয়ে অম্লানবদনে একটা ফ্ল্যাগ ও একটা ক্লোরমিন্ট ফেরত দিলো। ফ্ল্যাগের দাম বাজার ঠিক করেছে পাঁচটাকা। আর একটাকার মাউথফ্রেশনার।

জিজ্ঞেস করেছিলাম, ছুট্টা নেহি হে? রাগত চোখে ভাই আমার বললো, নেহি। ইসিলিয়ে তিরঙ্গা দিয়া।

আমার স্বাধীনচেতা অর্থে কেনা পাঁচটাকার তিরঙ্গা। ছুট্টার বদলে৷ বাজারনিয়ন্ত্রিত দেশত্ববোধ। ক্রেতার বা বিক্রেতার ছুট্টা না থাকলে। ওটা ফ্রিই।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ