কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Tuesday, May 31, 2016

| B A B A |

| B A B A |

As I learn more and more, I realize that you have always known more. Thanks for letting me learn it on my own. Thanking for letting me live my way.

Happy Birthday DrManas Ghosh!!! 

I was never a meritorious student. Rather was comfortable with the back benches. Singing, drama and debating was my forte in school.

My father wanted me to be another doctor staying in our house but never insisted. My mother did.

To study medicine, like my sister Moupi Ghosh is doing now, you need to be really good in Chemistry and Biology.

I was good in Biology, specially if you ask me to write
Reproductive and Digestive system with drawings, but Chemistry was as bad as Physics. Let’s not talk about Mathematics.

More than being a doctor, my father wanted to be part of Union Civil service. Poor Refugee family became a hindrance. RICE etc was in the womb of Samit Roy.

He insisted me also. My Dadu also tried that but couldn’t continue because of financial constraint. I preferred to follow the footmark of baba and dadu the other way round.

My parents invested hefty amount for my IAS/WBCS tuitions and mock tests, I failed. I never tried a second time as usual.

My father requested me to opt for science hence I did study. I did study because I had numbers that matter. Numbers do matter for admission.

While I was in my class 11, I was asked to sit for the mock-tests. I even cracked Joint entrance examination, I mean my rank was eligible for Dental studies, physiotherapy, homeopathy and I guess Pharmacy.

My father even went to a place called Katihar! Yes, there I was thought of sending. The way spoilt brats used to go in those days. Father also tried in China, Ukrain and Russia for studying medicine. Six lakhs, Seven lakhs were usually the package for studying there.

I shrugged off all options. I even attended dental classes at Panihati. It was more a Five star hotel and less a college. You can get burgers and coke delivered at your hostel door step, the specimen skeletons were costly, the environment was good. But I had other ambitions.

My father was ambitious regarding my prospects in Dental surgery. I deprived him from those fulfilling the dreams. I quit the classes, came to Kolkata and secretly joined South City Night College.

I refused to be someone whose basic work is to check the cavity, smell it, fill it. I DON’T INSULT THE PROFFESION. I humbly refuse not to be part of that league where I will be just another doctor earning some money and knowing average things about the subject.

One of my very close friend was very close to a dada called Papa Da. Both got admitted. I became a student of English honours (Night section).

My father fumed. He shouted and reacted and did whatever you see in films.

I was asked to withdraw my admission from South City and my father took me to the Principal of Dinabandu Andrews College and I got admitted to English Honours there.

Later I joined Mass communication, joined politics, joined drama group- My father listened to them, reacted when necessary, discussed when needed but mostly he supported – Silently of course.

The silence was powerful for me to grow. The silence is powerful for me to keep moving my way.

Its like learning how to cycle. Like swimming. You ride the cycle, get disbalanced but you alsways know there is someone standing behind you to hold the cycle and stop you from felling down.

Long Live the Spirit !

cheers!

| কবি |


কবির কদর ছিল না,
তার কবিতার খাতা আধময়লা ওর জামাটার মতোই ।
সেখানেই হিজিবিজি কাটা হত/
রাতে একটা লেখা লিখে ফেলতে হত।
রাত এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে।
ট্রেন তখন থেমেছিল/
ভিড়ের মধ্যে একটা হাত।
বেরিয়ে যাবার আগে তার হাত চেপে ধরলো,
যেরকম ভালো লাগে,
কাউকে শক্ত করে চেপে রাখতে বুকে ।
হাত গুনতে যে পারেনা, হাত গুটিয়ে নিতে সে পারেনি ।
আজ ট্রেনে কাটা পরলে জানবে না বাড়ির লোক,
সে সুখে, সোহাগে মারা গেছে ।
কবির কদর নেই জীবদ্দশায়,
কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,
কদর এপিটাফ দিত/
কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

-----ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| রাই- কানাইয়ার কাহন : সব চরিত্র কাল্পনিক |

রাত তিনটের সময় ঘুমানোর চেষ্টা করা হয়, ঘেমেচুমে এ পাশ ও পাশ হয়, ঘুম হয় না। সকাল সাতটায় উঠেছে শরীর, মন কোলবালিশ জাপ্টে তখনও।কানাইয়া উঠলো। বন্ধ চোখে, চেনা জায়গা হাতড়ে ফিটফাট হওয়া।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসবে, হঠাৎ পিছন থেকে একমুঠো আবীর মাখামাখি করে দিলো বোন, চেপে ধরে। আজ দোল। ওর যেতে হবে । রাই অপেক্ষায় আছে।
যেতে হবে শিয়ালদা স্টেশনে। আজ উবের ছুড়ি হাতে যাত্রী অপেক্ষায়। গলা কাটার জন্য ধন্যবাদ তাদের। রাই ফোনে ওলা app দেখে কোন গাড়ি নেই জানালো।
আজ দোল। আজ রাস্তা মাতাল ও বাইক আরোহীদের দখলে থাকে। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে, উবেরই ভালো। অগত্যা কানাইয়া চললো উবের চেপে।
রাই সেজেগুজে রেডি। আজ ট্রেনে বাড়ি ফিরবে ও। আয়ান, মানে ওর বর, যাকে আবার কানাইয়া prince charming বলে খ্যাপায় সে আছে রাজধানীতে, জরুরি কাজ আছে ওখানে। ওখান থেকে সোজা রাই এর বাড়ি। রাই এর মা খুব ভালো পোলাও আর কষা মাংস রান্না করে। মাংস মানে হাফিজ এর রেওয়াজি খাসি। রাইদের বাড়িতে মুরগি আজও নিষিদ্ধ। খেলে মাটিতে বসে খেতে হয়, গঙ্গা জলে ধুতে হয় মেঝে।
কানাইয়ার দাদু ওর নাম রেখেছিল কানাই ঘোষ। একে ঘোষ গোয়াল তার উপরে কানাই। স্কুল কলেজ এ চাট খেয়ে পাগলা হওয়ার জোগাড়। আজকাল কানাইয়া নামটা পাবলিক হেব্বি খাচ্ছে, কানাই হল কানাইয়া, যেরকম আফজল ও পায় শহীদ তকমা।
রাই এর দুটো গোপিনী উবের অব্দি রাইকে ছাড়তে এসেছিল। ঠান্ডা, শব্দহীন উবের এর ভিতরটা। দুজন দুজনকে দেখে প্রথম কিছু মিনিট কাটালো, তার পরের কিছু মিনিট হাবিজাবি কথা আর একে অপরের পিছনে লেগে, শেষ কয়েকটা মিনিট শক্ত করে একে অপরের আঙুল চেপে ধরে।
গৌর বঙ্গের ট্রেন আজ কম। হোলির কারনে বেশ কয়েকটি বাতিল ও হয়েছে। আজ যে ট্রেনে রাই যাবে, সেটি fast passenger। তবে প্রচুর ভিড় হয়। রুমাল ছুঁড়ে জায়গা দখল করতে হয়। বেশিরভাগই মফস্বলের দাপুটে মহিলা, কেউ কেউ রাই এর মত। নিষ্পাপ তবে তুখোড়।রাই এর চোখগুলো যেমন। মায়াবী অথচ ছোবল মারে যখন তখন।ছোবল খেয়েছে বহু, অবিচল রাই হেঁটে চলে গেছে। রাস্তাজোড়া হাফসোল, হাত কাটা।কানাইয়ার অবশ্য রাই এর টিকলো নাকটাও দারুণ লাগে। সে যাগ্গে!
সকাল দশটায় ট্রেন প্ল্যাটফম্ এ ঢোকার কথা ছিল, ভারতীয় রেলের কল্যাণে এল দশটা কুড়িতে। লেডিস্ এ একটা জায়গা কোনমতে পাওয়া গেছে কিন্তু রাই কিছুতেই ট্রেন না ছাড়া অবধি বসবে না। দরজার কাছে কানাইয়া ঠায় দাঁড়িয়ে। ট্রেন ছাড়ুক তার পর সে যাবে। আসলে বোধহয় আরো কিছুক্ষণ একসাথে থাকার বাহানা। বা জড়িয়ে ধরতে চাওয়ার। রাই নিজের থেকে জড়িয়ে ধরতে লজ্জা পায়, যেরকম লজ্জা লাগে ওর বেশকিছু কথা বলতে।
পাক্কা দশটা চল্লিশ এ ট্রেনটা নড়ে চড়ে উঠলো। আজ জানে কি জিদ্ না করো। আঃ হাঃ ফরিদা খানুমজী আর একবার প্লিজ গেয়ে দিন গানটা। ভিসা পেতে অসুবিধে না হলে এই শিয়ালদা তে আসুন না দিদি! কানাইয়ার মুখটা শুকিয়ে আছে। রাই ও দেখাতে চাইছে কিছু হয়নি তবে .......
অগোছালো ভাবে কানাইয়া রাইকে জড়িয়ে ধরে। গোয়াল বামুনের মিলন যেরকম হয় আরকি। কানাইয়া রাইকে প্রেম আর ভালোবাসার ফারাক বলেছিল একবার। প্রেমের প্রকার ও ব্যাখ্যা করেছিল। বাইপাসের ধারের বাতানুকূল ধাবাতে বসে হেসেছিল দুজনে, দুজনের দুঃসাহস ভেবে।
নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প তৈরি হয়েছে বহু ওদের দামাল মূহুর্তগুলো নিয়ে। প্রিন্সেপ ঘাটের বাগানে রাতে বাইক ঢুকিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছেন? হাওড়া ব্রিজের উপর থেকে নিচে তাকিয়ে থেকেছেন অনেকটা সময়?
ট্রেনটা এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে। কিছুক্ষন পর নতুন কোন স্টেশনে ঢুকবে। পূর্বরাগ কি বসন্তের মতো জাগ্রত দ্বারে?
রাই বোধহয় এখন বসে আছে ট্রেনে। কানাইয়া হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরার ট্রেনে চেপে বসলো। এই ট্রেন দেরিতে ছাড়েনি। কামরা গুলো যদিও পুরো ফাঁকা। জানালার ধারে হোলির দিন বসা ও মুশকিল। দুমদারাক্কা রঙ ভরা বেলুন ছুঁড়ে মারে রেল লাইনের ধারে বাচ্চাগুলো।
খুব জলতেষ্ঠা পেয়েছে। একটা ফট্ জলওয়ালা ওপেনার দিয়ে বোতল গুলোতে আওয়াজ করে নিজের জানান দিচ্ছে। ইস! রাই ট্রেনে ওঠার আগে বলছিল, তেষ্টা পেয়েছে। জলের বোতল কিনবে ভেবে ও কানাইয়া কিনে দিতে ভুলে গেছিলো। জল উঠেছিল কিনা কে জানে। একটা ফোন করে দেখলে হতো। কি ভেবে কানাইয়া ফোনটা করলো না। একটানা কানে ফোন ধরে রাখতে ভালো লাগে না ওর।
দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ফট্ জলওয়ালাকে ডেকে একটা বোতল দিতে বললো। উফ! কিরকম একটা করছে ভিতরে। গলায় কিছু আটকে আছে বোধহয়।
ফট্ জলওয়ালা একটা চাইনিজ মোবাইল এ হঠাৎ তারস্বরে একটা গান চালিয়ে দিয়েছে।
" তুমসে মিলনে কো দিল করতা হয়"
পরবর্তী স্টেশন সোনারপুর। ট্রেন দুটো দূদিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। নামতে হবে। কানাইয়া ফট্ জলে চুমুক দিলো।
 শেষ। বা শুরু ।

| অ- সামাজিক |

সেই সন্ধ্যার আবছায়ায়,
তুমি দাঁড়িয়ে নীল জানালায়/
আমি বিষাদসিন্ধু, পালাচ্ছে মহানগর।
সেই মলিন রাজপথে,
রাত মৃতদেহদের খোঁজে/
মরা মুখে আলো ফেলে ল্যম্পপোস্ট ।
একা রাতে শুতে লাগে ভয়,
এপাশ ওপাশ রক্তক্ষয়/
তবু নিথর মোবাইল জানায় ব্যকুলতা।
আজ ও চপারে শান্তি খুঁজি,
কালো ধান্দার সাদা রুজি/
শেষ ঘর হয় মর্গে কলকাতার।
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে / দায় সারছি এই পোস্টটা দিয়ে |

আর কোন দেহ উদ্ধার হয়নি। অর্থাৎ আর একটাও দেহ চাপা পড়ে নেই।
লাপ ডুপ শব্দ ও আর নেই। লাশকাটা ঘর সাক্ষী রেখে উদ্ধার কাজ এবারের মত শেষ।
ক্রেন গুলো সব বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওদের আপাতত আর লাগবে না কাজে। ক্রেনের ঠোঁটে লেগে থাকা রক্ত আর ধুলো যেরকম ধুয়ে মুছে সাফ।
পোস্তাতে ফের অটো চলবে। মিনিবাসে চিপটে, দম বন্ধ রেখে যেরকম অফিস যাত্রীরা চলে। চলতে চলতে আবার বেঘোরে চিপটে মরে, কাঁদে, মুখ চোখ মুছে ফেলে।
কলকাতা থেকে কলকাতা কোনদিন শিক্ষা নেয়নি। এতে কলকাতার অহংকার এ লাগে। যেরকম সেনাবাহিনীর আঁতে লেগে যায় পুলিশ কর্তার এক্তিয়ার সমঝানোতে।
একটি ফ্লাইওভার ভেঙে পরাতে জানা গেল কলকাতার ক্রিকেট প্রেম, সেই খেলায় হেরে গেলে কলকাতাবাসীর প্রতি ফেসবুকে জানান দেওয়া গভীর প্রেম।
একটু ফেসবুক এ, একটু ভাঙা কংক্রিটের পাশে সেলফি তুলে, একটু আন্তরিক রক্তদান শিবিরে - আমরা প্রত্যেকেই পাশে থাকতে চেয়েছি লাশকাটা ঘর এর বর্তমান বাসিন্দাদের।
কিছুক্ষন ভালো লাগে, যেরকম সস্তা ডিও-র গন্ধ থাকে। কিছুক্ষন। এরপরে শুরু হয় চিন্তা। যদি মুম্বইয়ের মতো একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় যেখানে বুলেট কথা বলে? সশব্দে!
আমরা ভাবা practice করতে করতে এত ভাবি যে reaction time দ্বিগুন করে ফেলি। তর্ক জুড়ে দিই চাপা পড়ে থাকা হৃদপিন্ডের উপর দাঁড়িয়ে। ভাবনচিন্তা, হুমরি খেয়ে পরা সহজাত।
আমরা আমাদেরই মতো। অনাবিল, গামবাট কিছু মানুষ হয়ে বুকনি ঝেড়ে বেড়াই। মাঝে মধ্যে LED তে গান চালিয়ে single malt খাই, বাকিটা সময় চিনি দিয়ে র চা।
রক্ত মাখা জামা কেচে দিয়েছে বউদি। রক্ত রাস্তার উপরে ও লেগে নেই। জল শোভনের অশোভন কিছু ভোতকা গাড়ি জল ঢেলে দিয়েছে। এখন পিচের উপর দগদগে ঘা। ঘা টা আসলে বোধহয় আমরা খেয়েছি।
নেকুপুসু জীবনের মধ্যে একটা jerk, একটা মৃত্যু ভয় আর অনেকগুলো বেঘোরে মরে যাওয়া লাশ যা নিয়তি, ভাগ্য শব্দ গুলোতে জোর দিতে বলে। বামমনস্ক বাঙালি লাল পতাকা ছেড়ে লাল তাগা বাঁধে, রোজ রাস্তার পাশে বটতলায় পয়সা ছোড়ে।
বাকিটা সময় বিশিল্পায়ন, অম্বল, বদহজম জনিত অসুস্থতা। আমি এই পোস্ট লিখে পোস্তার দায় ঝেড়ে ফেললাম, আপনারা ও ফেলুন। কাল থেকে ভোট শুরু। আসুন ভোট এ বাঁচি, ভয় এ বাঁচি।
চলুন নৈরাশ্য ছেড়ে নৈরাজ্য নিয়ে বাতেলা করি। পরবর্তী কম্পন অনুভূত না হওয়া পর্যন্ত।
----------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

Tuesday, May 24, 2016

| সকাল হলে সব বদলে যাবে? নাকি সব বদলে গেলে সকাল হবে? |


 এরপর আলো নিভিয়ে দেবে দোতলার বারান্দাতে সারা দিন ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল যে বৃদ্ধা।
লোকাল পুলিশ এর মেজোবাবু বাড়ি ফিরে গেলেন। রক্ত মাখা জামা কেচে দিয়েছে বউদি। কাল ফের ভোরবেলা পোস্তাতে ডিউটি।
যে সাংবাদিক সকাল থেকে শহর চোষে ফেলেছিল খবর খুঁজতে, কাল ভোর হতেই সে গিয়ে ভিরবে ধংসস্তুপ এ।
south কলকাতার যে সমস্ত মানুষের কেউ আহত বা মারা যায়নি, তারা সারা সন্ধ্যা খেলা দেখেছে, গলা ফাটিয়ে হতাশ হয়েছে ভারতের পরাজয়ে। সেখানেও আলো নিভে গেছে। ওরা ও শুতে যাবে।
দূরে কোন বাড়িতে সারাদিন miss করে যাওয়া খবর আর অর্ধমৃত ছবি গুলো দেখে নিতে বসেছে আপিসের বড়বাবু।
ডালহৌসি থেকে গিরীশ পার্কের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। যায়নি কারণ year ending এর জন্য খিস্তি মেরে ফাইল গুলো অফিসে পাঠিয়ে দিতে বলেছিল।
দুজন সরকার আর একজন বে-সরকার টানা দোষারোপ করে চলেছে। ফ্লাইওভার এর ঠিকুজি এদের মুখস্ত।
যারা অকুস্থল এর কাছাকাছি ছিল অথচ জীবিত ও ফেসবুক করতে সক্ষম সেইসব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এরা প্রতিদিন অনেক গুলো ফ্লাইওভার পেরিয়ে ফেসবুক করে। টানা ফেসবুক করে চলে।
রাতে অন্য কোন ফ্লাইওভার পেরিয়ে গিরীশ পার্ক এ disaster tourism করার সংখ্যা ও বাড়বে। যেরকম হাতে ব্যাগ, প্রান আর লিচি ড্রিঙ্ক খেতে খেতে শহরে ঘুরে বেড়ানো GDP -তে অন্তর্ভূত মানুষের সংখ্যা অনেক।
আজ রাতে বেশ্যা আর ভবঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শী। এদের আশেপাশে ভিড় আর চাওয়ালা জুটে যাবে। কেউ গল্প খাওয়াবে, কেউ চা আর লেড়ি।
মিলিটারি যারা দেখেছে কেবল টিভিতে, তারা আজ হুমড়ি খেয়ে সেনাবাহিনীর হাতুড়ি পেটা দেখছে।
বিশাল সব কংক্রিট এর গায়ে ধিপ ধিপ শব্দ/
সারারাত এখানে কাজ হবে। মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা লাপ ডুপ লাপ ডুপ লাপ ডুপ কিছু শব্দ।
হৃদপিন্ডের জন্য হৃদপিন্ড দিয়ে কাজ করার লড়াই আজ রাতে।
সকাল হলে সব বদলে যাবে?
নাকি সব বদলে গেলে সকাল হবে?
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
( ঋনস্বীকার: সকাল হলে সব বদলে যাবে......মৃনাল চক্রবর্তীর একটি নাটকের লাইন। )

| শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে |

 | শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে / দায় সারছি এই পোস্টটা দিয়ে |
আর কোন দেহ উদ্ধার হয়নি। অর্থাৎ আর একটাও দেহ চাপা পড়ে নেই।
লাপ ডুপ শব্দ ও আর নেই। লাশকাটা ঘর সাক্ষী রেখে উদ্ধার কাজ এবারের মত শেষ।
ক্রেন গুলো সব বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওদের আপাতত আর লাগবে না কাজে। ক্রেনের ঠোঁটে লেগে থাকা রক্ত আর ধুলো যেরকম ধুয়ে মুছে সাফ।
পোস্তাতে ফের অটো চলবে। মিনিবাসে চিপটে, দম বন্ধ রেখে যেরকম অফিস যাত্রীরা চলে। চলতে চলতে আবার বেঘোরে চিপটে মরে, কাঁদে, মুখ চোখ মুছে ফেলে।
কলকাতা থেকে কলকাতা কোনদিন শিক্ষা নেয়নি। এতে কলকাতার অহংকার এ লাগে। যেরকম সেনাবাহিনীর আঁতে লেগে যায় পুলিশ কর্তার এক্তিয়ার সমঝানোতে।
একটি ফ্লাইওভার ভেঙে পরাতে জানা গেল কলকাতার ক্রিকেট প্রেম, সেই খেলায় হেরে গেলে কলকাতাবাসীর প্রতি ফেসবুকে জানান দেওয়া গভীর প্রেম।
একটু ফেসবুক এ, একটু ভাঙা কংক্রিটের পাশে সেলফি তুলে, একটু আন্তরিক রক্তদান শিবিরে - আমরা প্রত্যেকেই পাশে থাকতে চেয়েছি লাশকাটা ঘর এর বর্তমান বাসিন্দাদের।
কিছুক্ষন ভালো লাগে, যেরকম সস্তা ডিও-র গন্ধ থাকে। কিছুক্ষন। এরপরে শুরু হয় চিন্তা। যদি মুম্বইয়ের মতো একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় যেখানে বুলেট কথা বলে? সশব্দে!
আমরা ভাবা practice করতে করতে এত ভাবি যে reaction time দ্বিগুন করে ফেলি। তর্ক জুড়ে দিই চাপা পড়ে থাকা হৃদপিন্ডের উপর দাঁড়িয়ে। ভাবনচিন্তা, হুমরি খেয়ে পরা সহজাত।
আমরা আমাদেরই মতো। অনাবিল, গামবাট কিছু মানুষ হয়ে বুকনি ঝেড়ে বেড়াই। মাঝে মধ্যে LED তে গান চালিয়ে single malt খাই, বাকিটা সময় চিনি দিয়ে র চা।
রক্ত মাখা জামা কেচে দিয়েছে বউদি। রক্ত রাস্তার উপরে ও লেগে নেই। জল শোভনের অশোভন কিছু ভোতকা গাড়ি জল ঢেলে দিয়েছে। এখন পিচের উপর দগদগে ঘা। ঘা টা আসলে বোধহয় আমরা খেয়েছি।
নেকুপুসু জীবনের মধ্যে একটা jerk, একটা মৃত্যু ভয় আর অনেকগুলো বেঘোরে মরে যাওয়া লাশ যা নিয়তি, ভাগ্য শব্দ গুলোতে জোর দিতে বলে। বামমনস্ক বাঙালি লাল পতাকা ছেড়ে লাল তাগা বাঁধে, রোজ রাস্তার পাশে বটতলায় পয়সা ছোড়ে।
বাকিটা সময় বিশিল্পায়ন, অম্বল, বদহজম জনিত অসুস্থতা। আমি এই পোস্ট লিখে পোস্তার দায় ঝেড়ে ফেললাম, আপনারা ও ফেলুন। কাল থেকে ভোট শুরু। আসুন ভোট এ বাঁচি, ভয় এ বাঁচি।
চলুন নৈরাশ্য ছেড়ে নৈরাজ্য নিয়ে বাতেলা করি। পরবর্তী কম্পন অনুভূত না হওয়া পর্যন্ত।
----------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ


| নববর্ষ |

পয়লা যা কিছু ছিল/ আগামীর রোমন্থন এ থাক।
নতুন বছর নতুন কিছু পাক!
ফ্লাইওভার এর নিচে চাপা পরা লাশগুলো উদ্ধার হওয়ার বেশ কিছুদিন অবধি নৈরাশ্য ছেড়ে নৈরাজ্য নিয়ে বাতেলা করছিলাম, পরবর্তী কম্পন অনুভূত না হওয়া অবধি। ধন্যবাদ নতুন টপিক এলো।
আজ যখন কম্পন অনুভূত হয় শেষ চৈত্র সন্ধ্যায়, তখন স্টুডিও থেকে নিচে হাজার বাঙালিকে দেখছিলাম। তারা সবাই কম্পন খুঁজে বের করতে চাইছিল। কেউ কেউ বোধ করেছে, বাকিরা মাস হিস্টিরিয়া-যাপন করেছে।
এরপরে আবার নতুন করে যারা কম্পন অনুভব করেছে তবে নিরাপদ তাদের সংখ্যা বাড়বে। বাড়ছে নোটিফিকেশন এর ওজন। নতুন করে আবার সবাই safe হবে।
পয়লা যা কিছু ছিল,আগামীর রোমন্থন এ থাক।
নতুন বছর নতুন প্রেম পাক!
পুরোনো শাড়ির আঁচলে নেপথোলিন এর গন্ধ ছিল। আজ রেস্তোরাঁ থেকে ঘুরে আসা গন্ধ থাকে। কারো শাড়ি তো কেবল স্মৃতি বেঁধে রাখে। মানুষটা কবেই ওপাশ ফিরে শুতে যায়। চাদর হিসাব রাখে চোখের জল।
যে ছেলেটা প্রতিবার প্রেমিকাকে ট্রেনে ছাড়তে গিয়ে ফ্যলফ্যল করে তাকিয়ে থাকে ট্রেনটা মিলিয়ে না যাওয়া অবধি, তার জীবনে একটা নতুন গল্প আসুক।
যে মেয়েটি রোজ রাতে অফিসের খাটনি শেষে ঘুমিয়ে কাদা হয়, কিন্তু গভীর রাতে বর বাড়ি ফেরার আগে সজাগ, তার জীবনে নতুন কিছু ঘটনা ঘটুক।
যে বিচ্ছিরি শব্দ গুলো রোজ হেডফোন ভেদ করে কানে ঢোকে দুষ্কৃতী সেজে, রাস্তার পিচে তাদের কবর দেয়া হোক। কবর দেওয়া হোক হেডলাইটের আলোর দেখানো নগ্ন, চিৎকার করতে থাকা নারী শরীর, কবর দেওয়া হোক বুক নিক্ষেপ করে টিপ্পনী কলেজ থেকে বের হলে। নতুন নীল সাদা ল্যাম্প পোস্টে জেগে থাক, নতুন শব্দ ব্রহ্ম সিগন্যাল এ সিগন্যাল এ।
নতুন কিছু চাইলেই নতুন করে তা পাওয়া যায় না। পুরোনো জিনিস নতুন মলাটে আসলে তাকেও আগুনে শোধন করা হয়। ভয় লাগে মাঝরাতে ছুঁতে।
পরে থাকে প্রতি বছর তৈরি হওয়া এক একটা বছর দিয়ে বানানো এক নৌকা। কাঠের জায়গায় বছর এ পেরেক ঠুকে তৈরি এক নৌকা।
কাঠের মতো বছর ও নষ্ট হয়, পচন ধরে, তখন আর একটা বছর তাকে বদলে দেয়। বছরের পিঠে নতুন বছর চেপে নৌকা বাওয়া। ভূমিকম্পে নৌকার ও ফাটল ধরে।
নতুন সূর্য নৌকার ভিতরে ঢুকে পড়ে। সকাল সব বদলে দেয়। ক্যলেন্ডার এর পাতার মত।
নববর্ষ জেগে থাকে সারারাত নিউজফিডে, নেশার গ্লাসে, সকালে কেরানি, রাতের কবির খালাসিটোলার ক্লাসে।

| নষ্ট রাত |

করাত বুকে চালালে, ধমনী বিদ্রুপ করে হাসে,
গাছের ডাল ও আঘাতের/
চিহ্ন ভালোবাসে।
পিঠে ক্যানভাস, আঁচড়ের দাগ,
ব্লেড অভিমান গেঁথে রাখে/
প্রেমিকা ও মেয়েমানুষি,
ব্ল্যাকমেল ভালোবাসে।
দীর্ঘশ্বাস জমা হয় গ্লাসে,
কে কার পুরুষ, আজ কি যায় বা আসে/
রাত জেগে থাকে অন্য ঠোঁটে,
বিচ্যুতি আশেপাশে।

-------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| বদলে দিন |

ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে, লেখা থাক কঞ্চি তে/
চাড়াম। চাড়াম।শব্দ।
এলাকাতে, এলাকাতে, শপথ হোক নিভৃতে/
সবকটা মুখ আজ বন্ধ।
কারো কোন কথা নেই, কাজ নেই, ক্লাব নেই/
সস্তার চাল সব মন্দ।
সাইকেল চড়া মানে,শিল্প স্থাপন নয়/
খয়রাত ঢাকেনা যে খন্দ।
দিন বদলের গান, বদলাতে অবসান/
মা-মাটির শপথটা ভন্ড।
মানুষই পাল্টে দেবে, মে মাষ্যা বলে দেবে/
অঘটনই বদলের খন্ড।
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

বুদ্ধং স্মরণং

বুদ্ধং স্মরণং গচ্ছামি/
বুড়ো নেতা, হেরো তবু/
আজও দামি।
মরিয়া ও মরে নাই /
দ্যাখাইছে craze,
বৈতরণী তারই নামে/
শিল্প থেকে SEZ।
এরই মাঝে ভোটদেবতা, মুচকাইয়া হাসে/
ভোটার-অভিমান শেষ হইলে,
তারে ফিরায়ে লইয়া আসে।'


---------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

Friday, May 20, 2016

| গনতন্ত্র |

নির্দলের ও দলীয় আকাঙ্খা থাকে/
সাক্ষর ভোটারের ও লাগে টিপ সই।
ব্যালটের কসম খেয়ে বুলেট পুষতে হয়/
লাশের বিনিময়ে পবিত্র ইভিএম-ই জয়ী।
-----ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| ভোটের আব্বুলিশ |

পুলিশ তুমি সামলে থেকো/
টেবিলের নিচে লুকিয়ে রেখো,
অসম্মানের ক্ষত।
যাদের হয়ে গর্জে উঠছো/
এ বুথ থেকে ও বুথ ছুটছো,
তাঁদেরই জন্য শহীদ হবে/
উর্দিধারী-বুলেটবিদ্ধ,
প্রকাশ ঝা এর হিন্দি ছবির মতো।

------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| টাকলু বুড়ি |

টাকলু বুড়ি তিন বছর হল পৃথিবীর বাসিন্দা। তৃতীয় বছরটাই ভয়াবহ।
এ বছরই বড়দের কি সব নির্বাচন এ তার দাদু, মামা কিসব কাগের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য তার মা কে থাপ্পড় মারে কিছু দুষ্টু লোক। মা নিজের যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দিতে চেয়েছিল।
বাড়িতে দুপুরের খাবার ও ছুঁড়ে ফেলে দেয় ওরা। টাকলু বুড়ি জাপটে ধরে ছিল ওর মা কে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল ও। তান্ডব চলছিল আশেপাশে। টাকলু বুড়ির মনে ও।
খান তিনেক ক্যাডবেরি হাতে, মুখে pulse চুষতে চুষতে তার হঠাৎ মা কে মনে পরলো। টিভির অফিসে কিছু কাকু, মামা, আন্টির আহ্লাদে সে ঘন্টা খানেক শান্ত ছিল নিজের সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া দাদার শাসনে। হঠাৎ বড় হয়ে যাওয়া দাদার আদরে।
তারপর ফের খোঁজ। মা কই?
মা তখন ভয়াবহ সেই দুপুরের কথা বলছে আর কাঁদছে। টাকলু বুড়ি angry bird এ মনোযোগী। ভাগ্যিস! টিভিতে মা কে কাঁদতে দেখলে কার বা ভালোলাগে? টাকলু বুড়িরা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদে। মাঝে মধ্যে ফোকলা দাঁতে হাসে।
ঘন্টা খানেক টাকলু বুড়ি গোটা টিভি অফিসের এ মাথা, ও মাথা চোষে ফেললো, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কাকুরা তার পিছনে পিছনে। তাদের ও দলা পাকানো রাগ গলায় আটকে আছে। দুষ্টু লোকগুলো যারা টাকলু বুড়িকে ধাক্কা মেরেছে, থাপ্পড় মেরেছে, হাত চেপে ধরেছে তাদের উপর রাগ।
রাগের রাজনীতি হয় না। যেরকম শাসক হলেই তাকে শিশু পিটিয়ে বিরোধী -মা বাবাকে সবক শেখাতে হয় না।
যে দুষ্টু লোকগুলো টাকলু বুড়িকে মারলো, তাদের বাড়িতে নিশ্চয়ই টাকলু বুড়ির কোন বন্ধু আছে। বা যে পুলিশ কাকু রিপোর্ট তৈরি করলো, তার ঘরে কোন টাকলু বুড়ির চেয়ে অল্প বয়সে বড় দিদিভাই। কিংবা সাংবাদিক কাকুরা। এদের প্রত্যেকের ঘরে থাকা টাকলু বুড়িরা টিভি দেখছে। পোগো চ্যানেল বা টাকলু বুড়ি পেটানো।
সব টাকলু বুড়িরা এক রাজনৈতিক দল করা বাড়ি থেকে বড় হয়না। তবে সব টাকলু বুড়ির মায়েরা তাদের আগলে রেখে জ্বলে ওঠে। ফোঁস করে।
কিন্তু টাকলু বুড়িরা হিসেব রাখে। ধুপ করে অনেকটা বড় হয়ে যেতে যেতে। তখন টাকলু বুড়িদের ঘন, লম্বা চুল, দগদগে স্মৃতি। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, ডাঁই করা সাইকেল, গলার চেন মাইল খানেক দূরে। অচ্ছুৎ!
---------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| যারা আগুন খেয়েছিল |

" চাঁদ উঠেছে ফুল ফুটেছে / গাছে ডাকছে পাখি, ভুলের কথা ভুলে গিয়ে/ আগুনে হাত রাখি।"
দুজনেই আগুন ভালোবাসতো। তবে ধর্ম ও লিঙ্গ এক ছিল না । একজন যুবক, ধর্মে দেশলাই আর একজন খাতুন, বারুদ সম্প্রদায়। বাড়ির লোকের চাপে যে কোনদিন খাতুন, বেগম হয়ে যাবে। বারুদ বেগম।গল্প সেখানেই বাঁক নেবে।
একজন blue blooded বারুদ ছিল, মামা কাকা, পিসির পরিবার এর সাথেই একটা বারুদ পাড়ায় পাশাপাশি থাকে দীর্ঘদিন আর অন্যজন দেশলাই কূল, বন্ধুদের সাথে গাদাগাদি করে থাকতে থাকতে গোষ্ঠিছাড়া, ভিড়ে একক।
ধরা যাক একজনের নাম অগ্নিস্নাত আর একজন অগ্নিমিতা। দেশলাই বারুদ সমাজে ওদের নামের গোঁড়ামি নেই। আগুন কে আগুন আর জলকে জল বলে। পানি ফল হয় আর চাপাতি মানে মোটা ছোট রুটি।
তবে ওরা জানে পানি হোক বা জল, এদের থেকে দূরে থাকতে হয়। দেশলাই এর নিজের একটা ডবকা, লক্ষ্মী শ্রী বারুদ আছে। একসাথে থাকে এরা। যেরকম বারুদের প্রেমিক আছে। ছিল।
বড় সোহাগ করে কাঠিতে বারুদ ডুবিয়ে মিলন ঘটে। তখন চারপাশে অনেকে আলো, সানাই, রাত জেগে খুনসুটি। বিদায় বেলায় কাঁদতে হয়, কান্নার জলে আগুন লাগে না। একসাথে অনেকগুলো বছর থাকার অঙ্গীকার করে দুজন। জল সরবরাহ নিস্প্রয়জন।
অগ্নিস্নাত আর অগ্নিমিতার দেখা অনেক পরে হবে। এই ছেলে মেয়ে দুজনেই খুব আগুন খেতে ভালবাসে। আগুন খেলে ওদের মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মাথায় মুখে আগুন লাগে, ঝলসে যায়, নতুন করে শুরু হয়, আগুন ধারন। এসবই কল্পনা অবশ্য।
দেশলাই বিবাহিত বেশকিছু দিন। তার বউয়ের আগুন ভালো লাগে না। আগুন জ্বলে কেবল কর্মরত থাকলে। কমিউন থেকে বেরিয়ে নিজেকে জ্বালিয়ে দেয়া। এদের এখনো সেই সুযোগ আসেনি। একইভাবে একইসাথে পাশাপাশি থাকতে থাকতে damp পরে যাচ্ছিল ওরা। বারুদকে দেশলাই আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু বারুদ ঝুরঝুরে হয়ে এদিকে সেদিকে ছিটিয়ে যাচ্ছিল। বেডরুমে চাদর গায়ে বুঝতে পারতো ওরা।
অগ্নিমিতা আবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যেতে চেয়েছিল ধুমা প্রেমে পড়ে। পারেনি কারণ সুযোগ পায়নি। চিৎকার, ঝগড়ার মাঝে দুম করে ঝাপিয়ে পড়ে চুমু খেতে চেয়েছিল, এর ওর ঠোঁটে বারুদ লেগে থাকুক চেয়েছিল। বারুদ হয়ে আগুন এ শুয়ে সোহাগ করতে চেয়েছিল।
অগ্নিস্নাত আর অগ্নিমিতা কোন এক দারুণ গরমে প্রেমে পড়ে গেছিলো। দুজনেই আগুনে পুড়ে প্রেম করতে চেয়েছিল।
আগুন না মেনে নেওয়া সম্পর্কের উত্তাপ, সামাজিক চাপ, অনেক কিছু জানতে পারার ভয় থেকে তৈরি করা হয়। নিষিদ্ধ বাতাস আগুনকে লালন করে।
একদিন অগ্নিস্নাত আর অগ্নিমিতা ব্যাগ গুছিয়ে ভোর বেলা দিঘার বাসে উঠে পড়লো। একসাথে অনেক নেশা করেছে, আজ আগুন খেতে যাবে। delux বাসে গান চলছে: একটা দেশলাই কাঠি জ্বালাও, তাতে আগুন পাবে। অগ্নিমিতা শক্ত করে অগ্নিস্নাত-র হাত চেপে ধরলো। বাস রামনগর পেরিয়েছে।
জায়গাটা তাজপুর। এসি ঘর, জলের জগ আছে, দরজা খুললে ঝাউ গাছ, পাশের জানালায় একটা নোনতা গামছা মেলা।
অগ্নিস্নাত আলতো করে কাছে টেনে নিলো অগ্নি কে। অগ্নির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ও। নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে। এসির শব্দ ছাড়া দূরে দুপুরে সমুদ্রের গর্জন।
পাথরে পাথর ঘষে আগুন লাগে। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে আয়োজন শুরু হয়, অগ্নিমিতা আগুন হতে পারে, অগ্নিস্নাত তা বুঝতে পারছে। বুঝতে পারছে ক্রমশ উত্তাপ বাড়ছে, যেকোন সময় দাবানল হবে।
অগ্নিমিতা এখন অসম্ভব সুন্দর লাগছে। চারদিক খুব উজ্জল আলোতে ভোরে উঠেছে। এখন সম্ভোগ হবে। অগ্নিস্নাত থরথর করে কাঁপছে। অগ্নিসংযোগ হবে এবার কিন্তু অগ্নি কাঁদছে কেন না চোখ কয়েক ফোঁটা জল সরবরাহ করছে শেষবেলা?
এখন দুটো শরীর যতটা সম্ভব জাপটে আছে, ঠোঁটে ঠোঁট রাখা, পিঠে আঙুলের আঁকিবুকি, শিহরণ শরীর জুড়ে।
হঠাৎ ফশ্ করে একটা শব্দ। আগুন লেগেছে। দুজনের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, মুখ মিলিয়ে গেল আগুনে। হাতে হাত ধরেই আগুন খেলো ওরা। পিঠে আঁকিবুকি খেলতে খেলতে।
-------------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ।
ঋনস্বীকার: " চাঁদ উঠেছে......" জয় গোস্বামীর কবিতার লাইন।

| ক্রাইম রিপোর্টার |

| ক্রাইম রিপোর্টার |

চশমার ফ্রেম এ দেখা অপরাধ-গল্প/
নোটবুক এ টুকে রাখা অল্প সল্প,
ঘড়ির হিসেব মেনে।
ঘড়ির হিসেব মেনে, বুলেট স্টোরি-কে চেনে/
বেলাশেষে মৃতদেহ ফিরে আসে ঘরে,
প্রতি গল্পের সাথে চরিত্র মরে।
জীবন যাপন চায়, খবর বদলে যায়/
রিপোর্টার খোঁজ রাখে স্টোরির নেশায়,
অন্ত্যমিল দরকারি 'ঘটনা-পেশায়'।
----------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

বৈশাখী

ঝড় ছিল বৈশাখী, জলে ভেজা চোখের বিস্ময়/
আমার ও প্রেম ছিল, বৃষ্টি ছিল ওষ্ঠে অক্ষয়।
------ ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| অসহিষ্ণু-পুর |

| অসহিষ্ণু-পুর |

নিষিদ্ধতার ধর্ম হয় না/
প্রতিস্পর্ধা নিষিদ্ধ হয়,
বিপ্লবী ও চাড্ডি সাজে/
ছবির ফ্রেমেই সমস্ত ভয়।
------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| গৌতম মুনি |

| গৌতম মুনি |

কিছু শতাংশ মিথ্যে পুষতে হয়/
সঙ্গোপনে দুজনেই ব্যভিচারী।
অহল্যার ও নতুন শরীর লাগে/
দাম্পত্যে নির্মোহ ছিলাম আমি।
---------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| হাফসোল |

| হাফসোল |

সব কবিতার অন্ত্যমিল হয়না,
যেরকম সব প্রেম পায় না প্রাপ্তি/
হাতে হাত ধরে স্থিরচিত্র মানেই, 
পাশে থাকার সৌভাগ্য নয়/
ছন্দোবদ্ধ হওয়ার তাগিদের ও ছিল ঘাটতি।
একটা বিশাল মাঠ ছিল, ছিল কয়েকশো গাছ/
পায়ের তলায় ভোরের শিশির ছিল,
ছিল বছর পাঁচেক বাদের আগাম দীর্ঘশ্বাস।
মাঠে প্রথম চুমু ছিল, আনকোরামি ছিল ভর্তি/
সকাল হলে লাফ্টার চর্চা ছিল,
রাত জেগে ফোন-কথাই ছিল ফুর্তি।
মাঠ সবজে ঘাসকে আগলে রেখেছিল,
যেভাবে করণিক আগলে রেখেছিল অষ্টাদশী/
বামুনের চাঁদে থাকার আর্তি বেঁচেছিল,
প্রেমিকা আর কবে বিয়ের কার্ড বিলির দায়ে দোষী।।
-----------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| ঠান্ডা গোস্ত্ |

| ঠান্ডা গোস্ত্ |
পিটিয়ে মারা ওই লাশটাকে দেখে, ঘুমের মধ্যে চমকাই/
দিদি আমরা যে ফের আখলাক হতে ভয় পাই।

------- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| গুজিয়া |

এক পেট খিদে আর মানিব্যাগ থেকে একশো টাকার একখানা নোট নিয়ে অফিস থেকে নেমে স্টেশনের পাশে ঝা চকচকে মিষ্টির দোকানে ঢুকলাম। রাধাবল্লবি আর আলুর দম অর্ডার দিলাম। চারপাশে হরেক মিষ্টি, আম দই, রসভরা, রসরাজ স্থবির হয়ে অপেক্ষায়।
এক বৃদ্ধ, ষাটের কাছাকাছি নোংরা জামা আর কাপড় এর ঝোলা কাঁধে ঢুকে একটা প্রাগৈতিহাসিক ফোন বার করলো। জটিল অঙ্ক কষে কোন একটা নাম্বার থেকে আসা কল ধরলো।
হ্যা, নিয়ে আসছি। সবার বাদ দাও। হ্যা দাদুভাই এর জন্যই শুধু।
মেপে মেপে কথা বলে, ফোন রাখলো এবং এক এক করে সমস্ত মিষ্টির দাম জিজ্ঞেস করলো।
সবকিছুই দশ করে। বৃদ্ধের মুখে চিন্তা জমাট বেঁধে আছে। আমি পরবর্তী মুহূর্তের অপেক্ষায়।
জরাজীর্ণ জামার বুক পকেট হাতরে দুটো দশটাকার নোট বের করলো। সযত্নে রক্ষিত দুটো ততোধিক জীর্ণ, ঘেমো, নোংরা নোট।
খুব আস্তে কুন্ঠিত কন্ঠে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলো, গুজিয়া আছে?
গুজিয়ার দাম দুটাকা এখানে। দশটা কুড়ি টাকা।
দোকানদার এক বাক্সে পুরে দিলো দশটা স্বপ্নের গুজিয়া। ভদ্রলোক গুজিয়া সযত্নে নিয়ে ট্রেনের জন্য রওনা হলো।
মিষ্টির দোকানে তখনও স্থবির হয়ে থাকা মিষ্টি, আমার আধখাওয়া রাধাবল্লবি প্লেটে। ওটার ও দাম দশটাকা।
গুজিয়াগুলো ছোট তবে মজার হয়। ওর আকর্ষণ অন্য মাত্রায়। ছোটবেলায় আমার নিম্নবিত্ত দাদু ও আমার জন্য গুজিয়া আনতো ঘেমেচুমে। প্যাকেট খুললেই একগুচ্ছ মজার মিষ্টি।
এখন স্বপ্নগুলো কয়েকশো গুন লম্বা, মিষ্টি ও হতে হয় ইয়া বড়। বাকিটা অনু পরিবারের আলাদা হাঁড়ি, রোজ উবের এ না জেতে পারা, নতুন সিরিজের আই ফোনটি না কিনতে পারার এক রাস দারিদ্র্য-নামা।
আজ আর গুজিয়া রোচেনা মুখে। যেরকম ওই বৃদ্ধের দাদুভাই ও আর কয়েকবছর পর একাই পঞ্চাশ টাকার রাধাবল্লবি, আলুর দম, রসমালাই আর শেষে মাজা খেয়ে উড়িয়ে দেবে।
পঞ্চাশ টাকা ঠিক কতটা আনন্দ কিনতে পারে?
ট্রেন এর দরজার পাশে ঝোলার মধ্যে গুজিয়া। ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে।
-------ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ