| নিঁখোজ কথাগুলো |
©- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
ছোটবেলা থেকেই বেশি কথা বললে বাড়ির লোক বলতো কি পটর পটর কথা শিখেছে।
স্কুলে বেশি কথা বললে ম্যাডাম বলতো ডোন্ট বি সো টকেটিভ। আমার রাগ হতো। স্কুলের ব্যাগ খাটের পাশে ছুঁড়ে দিয়ে গেম খেলতাম। মা বারণ করতে এলে কথা শুনিয়ে দিতাম। বাবা ফিরলে নালিশ যেত, কি চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলে আজকাল।
কলেজে দাদাদের সামনে দু ইঞ্চি বেশি বলে ফেললে, ইউনিয়ান রুম থেকে দৈববানী আসতো, বাড়তি কথা নয়।
আমরা কথা বলা চালিয়ে যেতাম লুকিয়ে লুকিয়ে। আয়নার সামনে, ঘুমের ঘোরে, নিজের মনে।
ওরা আমাদের বাচাল বলা থামাচ্ছিল না। কিছু না কিছু করে ঠিক আমাদের থামিয়ে দিত। চুপ করো, কিচ্ছু জানো না!
আমরা বড় হচ্ছিলাম। কথাগুলো ছোট হচ্ছিল। মেপে মেপে, বেশির ভাগটা অভিব্যক্তি দিয়ে। হতে হতে নির্বাক হচ্ছিল চারপাশ। সামনে অন্ধকার। কথা চেপে চেপে বলতে হবে। আমরা বাথরুম এ কথা বলতাম নিজের সাথে। বলতেই থাকতাম। মাথার মধ্যে।
এসবের মাঝে তোমরা সবাই গুম মেরে গেলে। কানে কানে কথা বলতে,চোখে চোখ রেখে কথা বলা ভুলে গেলে, ঠোঁট ফুলিয়ে কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঁঙে পরতে ভুলে গেলে।
এখন তোমাদের ঘুমোতে শব্দের প্রয়োজন হয়। বহু রাত অব্দি কথা বলতে চাও। এ দেওয়াল ও দেওয়াল এ ঢুঁ মারো। একটু কথা বলা যাবে?
ফোন জুরে হরেক চ্যাট এর জোগান। পয়সা দিয়ে বাচাল লোক রাখা। একটু যদি কথা বলা যায়।
আমরা কিন্তু কথা বলা ভুলিনি। আমরা কিন্তু আজ ও বাচাল প্রশ্ন করি। চাঁদের সাথে, রাতের সাথে তক্কো জুরি। গল্প মাথায় ঘুরে বেড়াই।
এখন তোমাদের ঘুমোতে শব্দের প্রয়োজন হয়। বহু রাত অব্দি কথা বলতে চাও। এ দেওয়াল ও দেওয়াল এ ঢুঁ মারো। এপাশ ওপাশ। একটু কথা বলা যাবে?
---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment