কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Wednesday, May 24, 2017

| সত্যজিৎ চুরি ও একটি জরুরি ঘোষনা |

| সত্যজিৎ চুরি ও একটি জরুরি ঘোষনা |

-- © ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

প্রতিপক্ষ বড় খতরনাক ছিল।দুধর্ষ দুশমন। কেউ জনপ্রিয় অভিনেতা বা জাঁদরেল পুলিশ। এরা সবাই ঘুমের ঘোরে কবি, লেখক। জ্ঞানত এরা সবাই লেখা ফরোয়ার্ড করে। লেখকের নাম ছাড়াই করে। যদি বাহবা আলগোছে জোটে ক্ষতি কি।

সত্যজিৎ রায় কে নিয়ে আমার বিপুল প্রচারিত একটি লেখা কিছু মানুষ নামাঙ্কিত অংশটি বাদ দিয়ে প্রচার করতে শুরু করে। কেউ অন্যের নাম বসিয়ে বাকিরা স্রেফ নিজের দেওয়াল এ সেঁটে দিয়ে।

এটা আমাদের অপমান।আমরা, এই যে আমার লেখাটা যারা পড়ছেন তাদের। যারা বাংলা ভালোবাসে, নস্টালজিয়ার ঠোঁঙা ফুঁ দিয়ে দুম করে ফাটাতে ভালোবাসে, ১টাকার পেপসি আর কুমিরডাঙা চড়তে ভালোবাসে।

অক্ষর, শব্দ নিয়ে খেলা কিরকম হয় পড়তে ভালোবাসে তাদের। আঘাত টা মুক্তমনা ব্লগামির, আঘাত টা পুচকি প্রোফাইল তবু চোখে চোখ রেখে প্রাতিষ্ঠানিক লেখার সাথে পাল্লা দেওয়ার সাহসে।

যে রাতজাগা তারা এপাশ ওপাশ করে কোলবালিশ চেপে, তার একটা ভালো কবিতা ঘুমপাড়ানি হয়। যে প্যাঁচা মাঝরাতে পায়চারি করে ঘরময়, আমার লেখা তার ধমনীতে আরাম দেয়। শব্দ মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। অক্ষর আলো বুজিয়ে দেয়। চাদর টেনে। চুপ।

ফেসবুকের অক্ষরই তো হাতে হাত ধরেছিল শাহবাগ এ। মশাল জ্বেলেছিল প্রথম প্রতিরোধ এর। শেয়ার বোতাম। চোখে চোখ রেখে।

অনেকের মধ্যে অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী ও বেমালুম টুকে দিয়েছে লেখাটা। ওনার পেজ এ এই পোস্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করুন। অন্যের লেখা বেমালুম নিজের নামে চালানোর জন্য। লেখাতে লেখকের নাম বা সংগৃহীত শব্দটুকু ও দেওয়ার সৌজন্য নেই। উল্টে নিজের দায়িত্বে বাংলাদেশ এর এক ওয়েব এ লেখা টা পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি অনুরোধ করেছিলাম, আমায় ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। কোন প্রশ্ন হয়। কোন প্রশ্ন হয়।

আমার খারাপ লেগেছিল। নিজের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে লেখা চিত্রনাট্য বেমালুম অন্য লোকে হলিউডে নিয়ে ইটি বানালে যেরকম খারাপ লাগে। বা প্রফেসর শংকুর নিজের ফর্মুলা জার্মান সাহেব চুরি করে সায়েন্স কনফারেন্স এ পাঠ করলে যেরকম লাগে আরকি।

ঠিক তখনই একটা মিরাকিউলাস এস্পারেকাস ঘটলো। আমার নিউটন নেই নয়তো ও বেচারা ও ঘাবড়ে যেত। আমার যাদের জন্য লেখা, সেই রাতজাগা, অফিসে ফেসবুক ঘাঁটা, দুপুরের অটোতে যাতায়াত করা পাঠক যখন ফোঁস করলো। আমার নামাঙ্কিত লেখা পালটা শেয়ার করে, যারা স্রেফ পোস্ট করে দিয়েছে তাদের সাবধান, অনুরোধ, হুমকি দিয়ে, নিজের দেওয়াল এ ঘোষনা করে, আমার হয়ে ফেসবুক ঘেঁটে চুরির তদন্ত করে।

এদের গল্প বলার জন্যই আমার লেখা। এদের চোঁয়ারে ঢেকুর, প্রথম চুমু, বৃষ্টিতে নাজেহাল মুহূর্ত নিয়েই আমি লিখে যাব। কারন ছোট ছোট প্রেম, মনভাঁঙার গল্প, ফুঁপিয়ে কাঁদা বড় স্ক্রিন, বিশাল কাগজ এ জায়গা পায় না।

আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি এই গল্পগুলো বাঁচিয়ে রাখবো। পিগি ব্যাংক এ, আঁচলের খুঁট এ, বালিশের তলায়। ঘুমের আগে, চোখ খুললে। যারা লিখছে তাদের ও বাঁচিয়ে রাখবো।

মহীনের ঘোড়াগুলির কোন কপিরাইট ছিল না। মানুষজন, এ শহর, পাড়ার দেওয়াল গান গুলো বাঁচিয়ে রেখেছিল। আমার গল্প গুলো ও আমাদের সবার। একে চুরি হতে দেবেন না। প্রতিদিন তো কত লোকের ভাত, কাজ, দিন বদলের স্বপ্ন চুরি যাচ্ছে। একে আগলে রাখুন।

রাস্তায় কাঁচের টুকরো ফেলে বা বিছানায় বিছে ছেড়ে দিয়ে যেরকম ফেলু মিত্তিরকে রোখা যায় নি, আমাকেও আপনাদের গল্প বলা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না। লেখা চুরি করে লেখা আটকানো যায় না। যায় না। যায় না।

আজ থেকে আমার সব লেখার উপরে ও নিচে আমার নাম লেখা থাকবে। লেখার হেডার বা হেডলাইন এর আগে ও পরে যথারিতি দুটো লম্বা দাগ দিয়ে হাইলাইট করা থাকবে। এবং অবশ্যই কিছু বানান ভুল থাকবে।

এবার ঘুমাই। সকাল হলে সব বদলে যাক।  জানি যাবেই। আমাদের টেলিপ্যাথির জোর আছে।

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

(লেখাটা ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। বাকিদের ও পড়ান)

No comments:

Post a Comment