কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Wednesday, May 24, 2017

| সত্যজিৎ চুরি ও একটি জরুরি ঘোষনা |

| সত্যজিৎ চুরি ও একটি জরুরি ঘোষনা |

-- © ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

প্রতিপক্ষ বড় খতরনাক ছিল।দুধর্ষ দুশমন। কেউ জনপ্রিয় অভিনেতা বা জাঁদরেল পুলিশ। এরা সবাই ঘুমের ঘোরে কবি, লেখক। জ্ঞানত এরা সবাই লেখা ফরোয়ার্ড করে। লেখকের নাম ছাড়াই করে। যদি বাহবা আলগোছে জোটে ক্ষতি কি।

সত্যজিৎ রায় কে নিয়ে আমার বিপুল প্রচারিত একটি লেখা কিছু মানুষ নামাঙ্কিত অংশটি বাদ দিয়ে প্রচার করতে শুরু করে। কেউ অন্যের নাম বসিয়ে বাকিরা স্রেফ নিজের দেওয়াল এ সেঁটে দিয়ে।

এটা আমাদের অপমান।আমরা, এই যে আমার লেখাটা যারা পড়ছেন তাদের। যারা বাংলা ভালোবাসে, নস্টালজিয়ার ঠোঁঙা ফুঁ দিয়ে দুম করে ফাটাতে ভালোবাসে, ১টাকার পেপসি আর কুমিরডাঙা চড়তে ভালোবাসে।

অক্ষর, শব্দ নিয়ে খেলা কিরকম হয় পড়তে ভালোবাসে তাদের। আঘাত টা মুক্তমনা ব্লগামির, আঘাত টা পুচকি প্রোফাইল তবু চোখে চোখ রেখে প্রাতিষ্ঠানিক লেখার সাথে পাল্লা দেওয়ার সাহসে।

যে রাতজাগা তারা এপাশ ওপাশ করে কোলবালিশ চেপে, তার একটা ভালো কবিতা ঘুমপাড়ানি হয়। যে প্যাঁচা মাঝরাতে পায়চারি করে ঘরময়, আমার লেখা তার ধমনীতে আরাম দেয়। শব্দ মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। অক্ষর আলো বুজিয়ে দেয়। চাদর টেনে। চুপ।

ফেসবুকের অক্ষরই তো হাতে হাত ধরেছিল শাহবাগ এ। মশাল জ্বেলেছিল প্রথম প্রতিরোধ এর। শেয়ার বোতাম। চোখে চোখ রেখে।

অনেকের মধ্যে অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী ও বেমালুম টুকে দিয়েছে লেখাটা। ওনার পেজ এ এই পোস্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করুন। অন্যের লেখা বেমালুম নিজের নামে চালানোর জন্য। লেখাতে লেখকের নাম বা সংগৃহীত শব্দটুকু ও দেওয়ার সৌজন্য নেই। উল্টে নিজের দায়িত্বে বাংলাদেশ এর এক ওয়েব এ লেখা টা পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি অনুরোধ করেছিলাম, আমায় ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। কোন প্রশ্ন হয়। কোন প্রশ্ন হয়।

আমার খারাপ লেগেছিল। নিজের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে লেখা চিত্রনাট্য বেমালুম অন্য লোকে হলিউডে নিয়ে ইটি বানালে যেরকম খারাপ লাগে। বা প্রফেসর শংকুর নিজের ফর্মুলা জার্মান সাহেব চুরি করে সায়েন্স কনফারেন্স এ পাঠ করলে যেরকম লাগে আরকি।

ঠিক তখনই একটা মিরাকিউলাস এস্পারেকাস ঘটলো। আমার নিউটন নেই নয়তো ও বেচারা ও ঘাবড়ে যেত। আমার যাদের জন্য লেখা, সেই রাতজাগা, অফিসে ফেসবুক ঘাঁটা, দুপুরের অটোতে যাতায়াত করা পাঠক যখন ফোঁস করলো। আমার নামাঙ্কিত লেখা পালটা শেয়ার করে, যারা স্রেফ পোস্ট করে দিয়েছে তাদের সাবধান, অনুরোধ, হুমকি দিয়ে, নিজের দেওয়াল এ ঘোষনা করে, আমার হয়ে ফেসবুক ঘেঁটে চুরির তদন্ত করে।

এদের গল্প বলার জন্যই আমার লেখা। এদের চোঁয়ারে ঢেকুর, প্রথম চুমু, বৃষ্টিতে নাজেহাল মুহূর্ত নিয়েই আমি লিখে যাব। কারন ছোট ছোট প্রেম, মনভাঁঙার গল্প, ফুঁপিয়ে কাঁদা বড় স্ক্রিন, বিশাল কাগজ এ জায়গা পায় না।

আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি এই গল্পগুলো বাঁচিয়ে রাখবো। পিগি ব্যাংক এ, আঁচলের খুঁট এ, বালিশের তলায়। ঘুমের আগে, চোখ খুললে। যারা লিখছে তাদের ও বাঁচিয়ে রাখবো।

মহীনের ঘোড়াগুলির কোন কপিরাইট ছিল না। মানুষজন, এ শহর, পাড়ার দেওয়াল গান গুলো বাঁচিয়ে রেখেছিল। আমার গল্প গুলো ও আমাদের সবার। একে চুরি হতে দেবেন না। প্রতিদিন তো কত লোকের ভাত, কাজ, দিন বদলের স্বপ্ন চুরি যাচ্ছে। একে আগলে রাখুন।

রাস্তায় কাঁচের টুকরো ফেলে বা বিছানায় বিছে ছেড়ে দিয়ে যেরকম ফেলু মিত্তিরকে রোখা যায় নি, আমাকেও আপনাদের গল্প বলা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না। লেখা চুরি করে লেখা আটকানো যায় না। যায় না। যায় না।

আজ থেকে আমার সব লেখার উপরে ও নিচে আমার নাম লেখা থাকবে। লেখার হেডার বা হেডলাইন এর আগে ও পরে যথারিতি দুটো লম্বা দাগ দিয়ে হাইলাইট করা থাকবে। এবং অবশ্যই কিছু বানান ভুল থাকবে।

এবার ঘুমাই। সকাল হলে সব বদলে যাক।  জানি যাবেই। আমাদের টেলিপ্যাথির জোর আছে।

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

(লেখাটা ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। বাকিদের ও পড়ান)

| নিঁখোজ কথাগুলো |

| নিঁখোজ কথাগুলো |

©- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

ছোটবেলা থেকেই বেশি কথা বললে বাড়ির লোক বলতো কি পটর পটর কথা শিখেছে।

স্কুলে বেশি কথা বললে ম্যাডাম বলতো ডোন্ট বি সো টকেটিভ। আমার রাগ হতো। স্কুলের ব্যাগ খাটের পাশে ছুঁড়ে দিয়ে গেম খেলতাম। মা বারণ করতে এলে কথা শুনিয়ে দিতাম। বাবা ফিরলে নালিশ যেত, কি চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলে আজকাল।

কলেজে দাদাদের সামনে দু ইঞ্চি বেশি বলে ফেললে, ইউনিয়ান রুম থেকে দৈববানী আসতো, বাড়তি কথা নয়।

আমরা কথা বলা চালিয়ে যেতাম লুকিয়ে লুকিয়ে।  আয়নার সামনে, ঘুমের ঘোরে, নিজের মনে।

ওরা আমাদের বাচাল বলা থামাচ্ছিল  না। কিছু না কিছু করে ঠিক আমাদের থামিয়ে দিত। চুপ করো, কিচ্ছু জানো না!

আমরা বড় হচ্ছিলাম। কথাগুলো ছোট হচ্ছিল। মেপে মেপে, বেশির ভাগটা অভিব্যক্তি দিয়ে। হতে হতে নির্বাক হচ্ছিল চারপাশ। সামনে অন্ধকার।  কথা চেপে চেপে বলতে হবে। আমরা বাথরুম এ কথা বলতাম নিজের সাথে। বলতেই থাকতাম। মাথার মধ্যে।

এসবের মাঝে তোমরা সবাই গুম মেরে গেলে। কানে কানে কথা বলতে,চোখে চোখ রেখে কথা বলা ভুলে গেলে, ঠোঁট ফুলিয়ে কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঁঙে পরতে ভুলে গেলে।

এখন তোমাদের ঘুমোতে শব্দের প্রয়োজন হয়। বহু রাত অব্দি কথা বলতে চাও। এ দেওয়াল ও দেওয়াল এ ঢুঁ মারো। একটু কথা বলা যাবে?

ফোন জুরে হরেক চ্যাট এর জোগান। পয়সা দিয়ে বাচাল লোক রাখা। একটু যদি কথা বলা যায়।

আমরা কিন্তু কথা বলা ভুলিনি। আমরা কিন্তু আজ ও বাচাল প্রশ্ন করি। চাঁদের সাথে, রাতের সাথে তক্কো জুরি। গল্প মাথায় ঘুরে বেড়াই।

এখন তোমাদের ঘুমোতে শব্দের প্রয়োজন হয়। বহু রাত অব্দি কথা বলতে চাও। এ দেওয়াল ও দেওয়াল এ ঢুঁ মারো। এপাশ ওপাশ। একটু কথা বলা যাবে?

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| ছায়া মানুষ |

| ছায়া মানুষ  |

আমাদের চারপাশে চড়া আলো জ্বলে দিন রাত। নিওন আলো, ত্রিফলা, টিউবললাইট। এর মাঝে ছায়া যেসব পরে দেওয়ালে, খাটে, ছাদের কোনে, বাসের ভীড়ে, দাম্পত্যজীবনের বারান্দায় সেগুলো প্রায় সবই আমাদের চেনা।

আদর বোঝাই দিদা ঠাকুমার প্রাচীন ছায়া, ঘুম এসে যায় গাছের ছায়া, মাথায় হাত বোলানো মায়ের ছায়া, জাপ্টে ধরে প্রেমের ছায়া, কাঁধে হাত রাখা বাবার ছায়া, আলতো স্নেহের বোনের ছায়া।

এর সমস্ত ছায়ার মাঝে একটা ছায়া নিঁখোজ--- দাদুর ছায়া। আজ সাত বছর হল।  নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষনা দিয়েই চলেছি দাদুর ছায়ার খোঁজে।

যে ছায়া ডাকনাম ধরে ডাকতো, যে ছায়া হাত বুলিয়ে দিত পিঠে, যে ছায়া আপিস ফেরত লজেন্স নিয়ে ঢুকতো, প্রায় সমস্ত কিছুতে মুচকি হেসে প্রশয় দিত।

দারুন ব্যস্ত রাজপথে, ভীড়ে ঠাসা মেট্রোয়, নতুন কেনা গাড়ির পিছনের সিটে, আইফোনের পৃথিবীতে হাজার ওয়াটের জৌলুশ এর মাঝে এই ছায়া মানুষ,  আপনাদের জীবনে এই ছায়া মানুষদের দেখতে পেলে জানাবেন।

ব্যস্ত জীবনের ওঠা পরায় ছায়া মানুষগুলো ঘরের এক কোনে সেঁধিয়ে যায় বা বৃদ্ধাশ্রম এ বাগান সাজায়। দাদুর ছায়া বাড়ির দেওয়ালে, খাটে, ছাদের কোনে, জানালার গ্রিলে লেগে ছিল। সাত বছর হল নিখোঁজ।

এদের ছায়াতেই তো আগামীর পথ চলা। এই ছায়া গুলো যতদিন মাথায় আছে, এদের জড়িয়ে ধরুন।

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

এর পর সূর্য অস্ত যাবে।

এর পর সূর্য অস্ত যাবে। সূর্য ডুবতে ডুবতে নিকষ হবে। খুচরো যেটুকু বা রোদ্দুর গীটার এর গায়ে লেগে আছে তা সন্ধে নামার আগের গান।

এখন রোদ্দুর এসে পরেছে গিটার এ। স্ট্রিং এ, ফ্রেটবোর্ড এ, ভীষণ বন্ধুতার গান এ। রোদের তাপে প্রেম ছিল নিশ্চই। নয়তো বা বিচ্ছেদ এর রিদিম এল কই?

আমার ফ্ল্যাট  এ একটা বিয়ার বোতল এ রংবেরং এর কাগজ লাগানো পিন হুইল আছে। ওটা আমার ছেলেবেলার। ফ্যান ঘুড়লেই স্মৃতি ঘুরতে থাকে। আমাদের কাজে লাগবে স্মৃতি রোমন্থনে। গান বাঁধা হবে চাপাতি উপেক্ষা করে।

এর পর সূর্য আস্তে আস্তে যাবে। সূর্য ডুবতে ডুবতে নিকষ হবে। থেকে যাবে মধ্যরাত অবধি খবরের শিরোনাম।

আমার ফ্ল্যাট এর নতুন অতিথি জিন্দাবাদ। অনেক গন্ধ জমা আছে। দেওয়াল এ দরজায় দেখা হবে।

প্রতিবিম্ব সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে অব্দি হাসছিলো, মিষ্টি একটা স্মাইল। সূর্য ডুবতে ডুবতে নিকষ হবে। হাসি লেগে থাক চার দেওয়াল এ।

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

নিশিযাপন দিস

স্বেচ্ছায় সে বসেছিল পাশে/
ঈষৎ ঠোঁটে লাগিয়েছিল বিষ।

চোখের আঁচড়ে যে মৃত্যু পাওনা ছিল/
তার আদরের নাম নিশিযাপন দিস

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| অধিকার বুঝে নেওয়া প্রখর দুপুরবেলা |

| অধিকার বুঝে নেওয়া প্রখর দুপুরবেলা |

-- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

আপনাদের আম ডাল, পান্তা ভাত আর এসির ঘুম হয়ে গেলে টিভির সামনে আসুন। দেখুন ফলিত সত্য। ইসমাইল আর আনন্দ আজ দুজনেই আহত হয়েছে।

দেখুন রাজ শাসন, দেখুন রক্ত দেখতে লাগছে কিরকম বিরোধীর কপালে। দেখুন সাংবাদিক পেটায় কিরকম পুলিশ। ফুলিশ!

আবার প্রমাণিত হল, মোল্লার চাপাতি বা হনুমান বাঁদর এর অস্ত্র হাতে মিছিলের চেয়ে হাগোড়ে পিঠ ঠেকে যাওয়া, ঘামের গন্ধ মাখা, শক্ত চোয়াল এর জুলুস বা ক্যামেরা, কলম হাতে সাংবাদিক বেশি ভয়ানক মনে হয় বাংলার সরকার এর। ইনি ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলনকে জাতীয় স্থরে নেতৃত্ব দিতে চান। ইনি রোজ মা মানুষ এর কসম খান।

বাংলার পুলিশ আজ রাষ্ট্র সেজে যে প্রবীন লোকটার চোখে ঘুষি মেরে মনি বার করে আনলো বা যে ছেলেগুলোর মাথা ফাটলো ফসলের ন্যায্য দাম চেয়ে তারা খতরনাক। ছাত্রগুলো সাংঘাতিক যারা শিল্প চাইছিল।এদের চেয়ে ভালো যারা ধর্ম নিয়ে বেসাতি করে বাংলা অশান্ত করছে। যারা কলকাতায় বসে দেশের প্রধান মন্ত্রীর নামে ফতোয়া ঘোষনা করছে, মাথার দাম ঘোষনা করছে।

সাবাশ। এরপর রাত হোক। ছেঁড়া জামা বদলে ফেলুক গো হারা বিপ্লবী।  ইসমাইল আর আনন্দ আজ দুজনেই আহত হয়েছে। মলম লাগাক ক্ষতে। আজ ইসমাইল বিকেলের নামাজ সারতে পারেনি। আনন্দের বউ আজ সারা দুপুর টিভি চালিয়ে বসে ছিল। এক ঝলক যেন ওকে রক্তমাখা জামা পরে দেখা গেল। তখন থেকে টিভির সামনে বসে। সন্ধ্যা দেওয়া হয়নি। শাঁখ বাজেনি।

দ্রোহকাল কবেই বা আজান, আয়াত, মন্ত্রচ্চারন কে তোয়াক্কা করেছে? মন্ত্র তো একটাই। কেউ যদি বেশি খায়, খাওয়ার হিসেব নাও। কেননা অনেক লোক ভালো করে খায় না।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

| পুলিশ বড্ড অসহায়, ওর পাশে দাঁড়াও |

| পুলিশ বড্ড অসহায়, ওর পাশে দাঁড়াও |

---ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

বেশির ভাগ পুলিশই ইনসোমনিয়াতে ভোগে। পুলিশ উর্দি খুলে, দু পেগ মেরে এবার শুতে যাবেন। স্ত্রী অনেক আগেই মেয়েকে কে নিয়ে পাশের ঘরে শুয়ে পরেছে। রোজ যেরকম শোয় আরকি।

আজ বড্ড শান্তিতে ঘুমোবে পুলিশ। প্রান খুলে খিস্তিয়েছে, হাত খুলে মেরেছে।

সচারচর সম্ভব হয় না। টেবিলের তলায় লুকোতে হয় বেশিরভাগ। ভেউ ভেউ করে ক্যামেরার সামনে কাঁদতে হয় থানা জ্বালিয়ে দিলে। বাকিটা সময় মেটিয়াবুরুজ এ মিউমিউ বা রাজপথ এ ফ্যালফ্যাল করে ত্রিশূল হাতে মিছিল দেখা।

পুলিশ বড্ড অসহায়। ওর পাশে দাঁড়াও। ওর ডি.এ নেই, নপুংসক এর রাষ্ট্রগত ছায়া থেকে বেরোনোর উপায় নেই, সেনার মত সম্মান নেই, আল্লা হু আকবর বা জয় শ্রী রামের আড়ালে লুম্পেনবাজি হলে লাঠি চালানোর মুরোদ নেই।

পুলিশ বড্ড অসহায়। ওর পাশে দাঁড়াও। সাংবাদিক ও বোধহয় আংশিক। ফাটিয়ে লিখতে ইচ্ছে করলেও থেমে যেতে হবে। হাত নিশপিশ করলেও রিপোর্ট  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে প্রশ্ন থেকে বিরত থাকতে হবে, অনেক প্রশ্ন ঢোঁক গিলে নিতে হবে। সবার উপরে কি যেন কি সত্য সেলুকাস।

পুলিশ বড্ড অসহায়। ওর পাশে দাঁড়াও। ৩৬৪ দিন তোষামোদি, ডিসি সাহেবের বাচ্চাকে স্কুল ছেড়ে দেওয়া, দাপুটে নেত্রীর চাপকানোর হুমকি শোনা, হেলমেট না পরেও নির্দিষ্ট কিছু পাড়া দিয়ে বাইক জুলুস এ কিছু না বলতে পারার হতাশার মাঝে এক দিনের খুশি। প্রবল প্রভাবশালী সাংবাদিকদের মেরে হাত সুখ। সাউন্ড স্লিপ।

পুনশ্চ, মহারাষ্ট্রতে ভাই ও বীরপুরুষদের দাপাদাপিতে আক্রান্ত সাংবাদিকদের বাঁচাতে বিল আনা হয়েছে। কড়া সাজা হবে সাংবাদিক পেটালে।  আর গোটা মুম্বাই এ হেলমেট ফেজ টুপির উপরে হলেও পড়তে হবে। হবেই তা সে যতই বড় দাড়ি হোক। যেমন মাল খেয়ে শিবাজী মহারাজ এর স্টিকার গাড়িতে থাকলেও ফাইন দিতে হবে। হবেই।

এই অসহায়তা আমাদের। বেকার ফুলিশদের দোষ দিয়ে কি লাভ! একদিন না হয় পুলিশের মেয়ে আনন্দ করুক- মাই ড্যাডি স্ট্রংগেস্ট।

©--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

Tuesday, May 2, 2017

| সত্যজিৎ |

| সত্যজিৎ |

- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

মুকুল এর আজ ও হাসি পায়না। তপেশরঞ্জন মিত্র ও সেই কবেই লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। জটায়ুর সবুজ এম্বাসেডর  বাতিল। ১০০, গড়পার রোডের বাড়িটা শুনেছি প্রোমোটারদের কবলে চলে গেছে। রজনী সেন রোড আছে এখনো?

ফেলুদা এখন বাতের ব্যাথার তেল এর মডেল। তোপসে নামী বাঙালি হেঁসেল এর মালিক। দুষ্টু লোকেরা অমিত শাহকে মগনলাল মেঘরাজ বলে গুলিয়ে ফেলে।

গুপি শেষ বয়সে গড়িয়া অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে ঘাম মুছতো। বাঘা ও মৃত। মন্দার বোস বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। খুচরো ভেল্কি বা গ্লোবট্রটার, কেউই খুব একটা সাহায্য করেনি শেষ দিকে।

যেভাবে অরিন্দম মুখার্জী কে টাকার চোরাবালি থেকে তুলতে কেউ সাহায্য করেনি। তবে অত টাকা প্রথমবার চোখে দেখে দিব্যি লেগেছিল। যেরকম দিব্যি লেগেছিল চারমিনার, চা এর সাথে নিউ মার্কেট থেকে কেনা ডালমুট।

তালি দিয়ে আনানো ভূতের রাজার ভোজ এর ওই ইয়া বড় রাজভোগ বা মাছের মুড়োটা আর পাতে পরেনা। কুকুর ও পায় না। ভূতেও খায় না।

ভূত যে নাচে, তখন জেনেছিলাম। যখন ছোট ছিলাম। তখনি প্ল্যানচেট শেখা। এলকেমি জানা। ইয়েতি, সোনা তৈরির ফর্মুলা, দড়ি ধরে টান মারার প্রতিস্পর্ধা, বোমযাত্রীর ডাইরি, বিনেপয়সার ভ্রমণ। সোনার কেল্লা।

তারপর কখন যেন সব বড় হয়ে গেলাম। ইন্দির ঠাকুরান বা দুর্গার গল্প কিরকম অবাস্তব লাগতে শুরু করলো। এত গরীর কেউ হয়? আমার তখন হতাশা নতুন সিরিজের আই ফোন না পাওয়ার। আমার দারিদ্র্য রোজ উবের না চড়তে পারার। সৌখিন পানশালাতে মেহেফিল নেই এর পাঁচালি।

আমি তখন বোমকেশ, আমি তখন কর্নেল, কিরীটী। প্রখর রুদ্রের থেকে ও দ্রুত দৌড়। উচ্চাশার ইমারত।

কখন যেন পিকু দেখতে দেখতে পিকুর মা বা রোজ দুপুরে আসা কাকুটার বয়সি হয়ে গেল। এখন রোজ দুপুরবেলা পিকুকে পোকেমন চালিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করি। দুজনে।

আমরাও তো কখন যেন বড় হয়ে উঠলাম। সোমনাথ এর মত। মিডিলম্যান হয়ে। বস কে খুশি করে। ক্লায়েন্ট কে পছন্দসই 'মাল' সাপ্লাই করে। প্রাক্তন প্রেমিকার বিয়ের নিমন্ত্রন পেয়ে। বড় হলাম।

না ভান করলাম হওয়ার? আদপে কৈশোর পুষে রাখা কোটের পকেটে। ফর্মাল শার্ট এর কলার এ। আপিসের ফাইলের ভাজে। হাই হিল এ।

ধন্যবাদ সত্যজিৎ বারবার টাইম মেশিন এ চাপিয়ে আমার ফেলে আসা রংপেন্সিল, গরমের ছুটির ১টাকার পেপসি, দূরদর্শন এ ছুটি ছুটি, পাড়ার লাইব্রেরি, খেলার মাঠ, তিন বর পাইয়ে দেওয়ার জন্য।

জন-অরন্যে আশা আকাঙ্ক্ষার না পাওয়া অনেক কিছুর মাঝেও সব পেয়েছির নাম, সত্যজিৎ। শুভ জন্মদিন।

--- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ