কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Saturday, October 1, 2016

| বঙযাত্রীর বোম্বে ডাইরি -৫ |

| ম্যাজিক- রিয়ালিটি |

ম্যাজিক হয় হয়। চারপাশেই হয়। বাথরুম, বারান্দা এমন কি দেবী পক্ষেও হয়। যারা জানার তারা জানে। আমি জানি। কিন্তু ম্যাজিক রিয়ালিসম এর ল্যাজ ধরেই থাকে। তাই হয়তো সব ম্যাজিক এ জাপ্টে থাকে বাস্তব এর কিছু ভাগ।

প্রভাদেবী এলাকাতে সকালবেলা যে বাজার টা বসে তা হুবহু গড়িয়া বাজার এর মত হয়ে যায় আমি গেলেই। কত মাছ, সব্জি। কেবল মাছ গুলো বেশিরভাগ চালানি আর চাপাতি দিয়ে পিস পিস করে। আমাদের রথতলা বাজার এর স্বপন কেও বোধহয় এক আধবার দেখা যায়।

গোরেগাঁও স্টেশন এর সামনের রাস্তাঘাট পুরো যেন যাদবপুর স্টেশন রোড আমি যখনি যাতায়াত  করি। কি গ্যাঞ্জাম, কাদা, হকার এর ভিড়। কেবল হাজার পাক লাগালেও ইউনিভার্সিটি এক নম্বর গেট লাগোয়া ঝুপড়ি দোকানের মত দারুন মটন ঘুগনি আর পোঁড়া পাঁউরুটি মেলে না।

আর কোলাবা তে তাজ এর পিছনের যে বাজার টা। সেটাও তো অনেকটা এসপ্ল্যানেড। বাদিক ঘুরলেই শ' বার। আমি যেতাম।

এরকম বহু ম্যাজিক ঘটে যায় এখানে। রাতে বা কাঠ ফাটা দুপুরবেলা। সবচেয়ে গা ছমছম ম্যাজিক টা ঘটালো সোহম। মহালয়ার ভোররাত এ।

সোহম আমার ভাই ই বটে। প্রাক্তন কলিগ। বহু 'কান্ডের' সহযোগি।

সেদিন রাতে প্রায় দুটো বেজে গেছিল অফিস থেকে বেরতে। আমি একটা পিজি তে থাকি অফিসের পাশেই। বাকিরা কেউ ব্যাঙক বা বেসরকারি অফিস এ কাজ করে। সন্ধে সাতটায় বাড়ি এসে দাড়ি কামানোর সময় পায়। আমি রাতে ফিসফিসিয়ে ঢুকি। ফোনে কথা বলি না। বাকিরা বিরক্ত হয় ভোররাতে আমার আড্ডায়।

মহালয়ার ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার ইচ্ছে থাকলেও আমার রেডিও নেই ফোনে, নেট সেদিনই স্লো আর হেডফোন কেউ ঝেপে দিয়েছে।

আমার মতোই প্যাঁচা দের সাথে চ্যাট এ কথা বলতে বলতে সোহম শুনলো আমার ব্যাথা। আর তার কিছু পরেই ঘটিয়ে দিলো এক গা ছম ছম ম্যাজিক। 

মহিষাসুরমর্দিনী সবে শুরু হবে বোধহয়, আমার ফোন টানা বেজে চলেছে। সোহম।  কি হল রে?

সোহম : কথা বলতে হবে না, চুপচাপ কানে ফোন ধরে থাকো।

১২৩ আর ম্যাজিক। মুম্বাই এর সেই ঘরে যার একটা জানালা দিয়ে সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির আর দূরে সমুদ্র দেখা যায়, সেখানে ভোরের আলো ফুটছে। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র জানালা, দেওয়াল, বিছানার চাদরে। আমার গড়িয়ার বাড়ির দেওয়াল, দেওয়াল এ ঝোলানো ছবি, আমার বই এর আলমারি, আমার ল্যাধ খাওয়ার খাটের কোনা সবকিছু আমার চারপাশ জুরে।

আমার ঘরের গন্ধতে রাতের গরম ভাত, মাছ, বউ এর পারফিউম, আমার সেভিং ক্রিম লেপ্টে। মুম্বাই অব্দি চলে এসেছে। আমায় না জানিয়ে।

পুজো চলে এলো। আর সাতদিন। ওই শহর আমার সমস্ত কিছু জানে। আমায় মন খারাপ গুলো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে। আমায় যেতে হবে সব ম্যাজিক গুলো রিয়ালিটিতে বদলে ফেলতে।

----ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment