কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Tuesday, February 18, 2020

তাপস পাল

| তাপস পাল |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ 

নার্গিস বেগমকে মনে আছে? নার্গিস দত্ত না, বেগম। মনে পড়ছে? না? বেশ! নার্গিস বেগম তৃণমূলের বিধায়ক। বিধানসভায় প্রকাশ্যে বাম বিধায়ককে ধর্ষণের হুমকি দেন এই জনপ্রতিনিধি। 'তোমার ধর্ষণ হবে'।

আপনার অবশ্য নার্গিস বেগম নামটা মনে থাকবে না বেশীদিন। নার্গিস, তাপস পাল না। কিন্তু পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদরা সত্যি সত্যি কিন্তু ছেলে ঢুকিয়ে দিতে পারে ঘরে। বউ-মেয়েকে ধর্ষণ করে চলে যায় বিরোধী দলের দাদার ছেলেরা। ওটা ও গ্রাম দখলের লড়াইয়ের অংশ। পুলিশ ধর্ষণের মামলার থেকে বেশী জোর দেয় "রাজনৈতিক বিবাদ দীর্ঘদিন ছিল অভিযুক্ত ও নির্যাতিরার পরিবারের" - এই কয়েকটি শব্দে। পুলিশ তাপস পাল না। আপনার মনে থাকে না ওই বাইটের অংশ।

তাপসের পালের দেহ ছাই হয়ে গেলে ও গমগম করে তার "ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেবো" বাজবে। "চরণ ও ধরিতে দিও গো আমারে" সেখানে কই? ঠিক সেইভাবে সঞ্জয় দত্ত যতই 'সঞ্জু' বানাক, পাবলিকের কাছে ও টেরেরিস্ট। অমিতাভ বচ্চন মারা গেলে ও দেখবেন বোফর্স কামান আর রেখা ট্রেন্ড করবে। কারণ এরা তারকা। নার্গিস বেগম বা তাদের মতো সাধারণ না। এদের কৈফিয়ত দিতে হয় না রোজ, সমালোচিত হতে হয় না আজীবন। একবার করা কোন উক্তি যুগের পর যুগ হন্ট করে না। 

তাপস পাল মারা যাওয়ার পরে তার যৌবনের ছবিই মনে রাখতে চাইছে দেখি লোকে। তা কী হয়? সুমন চাটুজ্যেকে স্রেফ মনে রাখবেন আর কবীরকে বাদ দেবেন? ভূমি সংস্কারকে মনে রাখবেন, নন্দীগ্রামকে বাদ দেবেন? বিধানসভার ভাষন মনে রাখবেন, বিধানসভা ভাংচুরের ঘটনা বাদ দেবেন?

তাপস পাল বোকা ছিল। বেশীরভাগ হিরোরা যেমনটা হয়ে যায়। রাজেশ খন্না যেমন ছিল, মনোজ তিওয়ারি যেমন। তারা রুপোলী জগতের সংলাপ নির্বাচনী এলাকায় বলে আসেন। তাপস পাল ও সস্তা হাততালি পেতে বলেছিলেন। আমার ভয় লাগে সেই মানুষগুলোকে যারা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিল সেদিন তাপস পালের 'ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেবো " শুনে। ওরা আমাদের চারপাশেই ঘুরছে। 

মারা যাওয়ার দিনটা সিনেমার শেষ সিনের মতো। ভিলেন শুয়ে আছে। কোন সংলাপ নেই। কোন বন্দুক নেই। আক্রমণ করবে না। আপনি নায়ক হিসেবে চাইবেন এরকম একটা সিনে টানা গুলি মেরে যেতে ওই শরীর লক্ষ্য করে? ওটা তো কাপুরুষেরা করে। আজ না হয় ক্ষমা করে দিলাম চন্দননগরের ছেলেকে। এই ক্ষমার রাজনীতি, ভালোবাসার রাজনীতিগুলোই জিতবে। এগুলো জিতলেই বুঝবেন ফের কোন এক সাহেব নিজের ক্যারিয়ার ভুলে নিঃস্বার্থভাবে নিজের কিডনিদান করে দিয়ে চলে আসবে৷ আগামীর জন্য সবচেয়ে আগে এই ঘৃণা বর্জনটা জরুরি। বিদায় তাপস পাল। হাসিটা মনে থাকবে। 

©------ ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

No comments:

Post a Comment