চন্দ্রিল দা কাল আনন্দবাজার পত্রিকার উত্তর সম্পাদকীয়তে বিমান বাবু বা সিপিএম এর কোমায় চলে যাওয়া নিয়ে যা লিখেছিল, তাতে বহু দলীয় সদস্য কাঁচা খিস্তি শুরু করেছিল। হেব্বি সব চকচকে গাল দেওয়া হচ্ছিল ও কেন এই হরতাল ঠিক তার বিবরন দেওয়া হচ্ছিল। প্রবীণ নেতা কে খাস্তা করা তাদের অতি তাত্বিক মস্তিস্কে রক্তক্ষরনের সামিল ছিল।
আজ সর্বহারার মহান নেতা শ্রী বিমান বসু মেনে নিলেন যে হরতাল বিফল হয়েছে, খুব কম সময়ে ডাকা এই হরতাল সফল হয়নি। তাঁদের বিচার বিবেচনা করে দেখতে হবে এই নিয়ে। এটি একটি জটিল বিষয়। অত সহজ নয়।
সাবাস কমরেড! বিশাল এক বেড়াল ফোলালেন, ভাবলেন বাঘ হয়েছেন, লালন পালন করলেন তাকে, বিপ্লবী ভাষণ ছাড়লেন সর্বহারার প্রতিনিধি হয়ে ওঠার আর শেষমেষ ঘ্রোঁয়াও ক্রমাগত মিয়াওঁ এ বদলে গেল। তারপর ঢোঁক গিলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। সেই কবে জননেতা বুদ্ধ বাবু হাত জোর ক রেছিলেন, ব্যস হা রে রে করে মধ্যমেধা সব নামিলো ক্ষমা চাইতে। যাই হোক সরি দাদা।
বিশাল সব নেতা। পাড়ার মোড়ের বিপ্লবী। দল বলেছে হরতাল হবে, বেশ! চল শালা বিপ্লবের কল এসেছে। এই পবিত্র কাজ যদি না করতে পারি তবে মেম্বারশিপ নিয়ে কি হল এই অশান্ত সময়ে?
মনে করিয়ে দিই, কাল আনন্দবাজার এ প্রফেট চন্দ্রিল লিখেছিলেন যা ফাস্ট হুবহু তুলে দিলাম।
" কী বিপদে না পড়লাম! যারা মোদীর এই নোট বাতিলের যাত্রাপালার পক্ষে, তারা সব্বাই হয়ে গেল বিজেপি। আর যারা বিপক্ষে, সব্বাই হয়ে গেল তৃণমূল। আমরা পড়ে রইলাম মাঝামাঝি, ঝুলন্ত, ঝুল। একটু-আধটু চোপা করছি, ভান করছি যেন আমাদের ঘটেও বুদ্ধি খেলছে জিভে গজাচ্ছে চাড্ডি জ্বালাময়ী দড়াম, আমাদেরও আছে কর্মসূচি নেওয়ার ধক ও প্ল্যান। কিন্তু কী করব? মমতা আগেই এমন পালে হাওয়া লাগিয়ে বসে আছেন, এত দ্রুত উনি হইহইটা শুরু করে দিতে পারেন, তত দুদ্দাড়িয়ে আমাদের মিটিং-এর ঘরের তালা অবধি খোলা হয় না। কাজেই যত ক্ষণে উনি কোমর বেঁধে এটিএম-এর সামনে, তত ক্ষণে আমাদের ঢুলুন্তি মগজ সিধে হয়ে শুধু চোখ গোলগোলিয়ে দেখছে মাত্তর, লেনিনকে পেন্নাম ঠুকে প্রাথমিক গলা-খাঁকারিই শেষ হয়নি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আমরা ভেবে বের করলাম আশ্চর্য ঘনঘটা: বন্ধ ডাকব। লোকে শুনে শিউরে উঠল। আজি হতে শতবর্ষ আগেও এই পার্টি প্রতিবাদ করতে হলে সহস্র মাথা চুলকে সেই বন্ধই ডাকত, এখনও চিন্তা-দেওয়ালে মাথা কুটে সেই বন্ধই ডাকছে। কী ব্রেন-বিবর্তন!"
কি ভুল বলেছিল? আজ তো আপনি নিজেই বলে দিলেন ভুল ভুল সবই ভুল। পুঁজিবাদী আনন্দবাজার খঁক খঁক করে খিল্লি নিচ্ছে নিশ্চয়। টিএমসি তো কবেই দুদু ভাতু করে দিয়েছে আপনাদের, এখন সর্বহারার ও খিল্লি টপিক না হয়ে যান।
সবাইকে মিডিয়া ফ্রেন্ডলি হতেই হবে কেউ দিব্বি দেয়নি কিন্তু একই মানুষ যদি একই ভুল বারবার করে?
মশাই আপনারা নিজেরা একে কনফিউজড টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি, তার উপর স্থবির আর মিনিটে মিনিটে স্বীকার করেন নিজেদের ভুল। বুকে হাত রেখে বলুন তো ফিদেল বা লেনিন এরকম লিডার হলে বিপ্লব কি হত? জ্যোতি বাবু যদি সিদ্ধান্তহীন হতেন ২৫ বছরভর লাল পতাকা
থাকতো?
এরপর ও বন্ধু বলবেন মমতা কেন এত সফল? কেন মোদি হিট? লিডারশীপ বাওয়া!
দেওয়াল লিখন পরিস্কার! মায়োপিয়া থাকলে চশমা পাল্টান আর পারলে ধারনা। দুনিয়া বদলেছে, আম্বানিরা এখন অনেক ক্ষমতাশালী, আপনি রিপ ভ্যান উইংকিল। বাঁশি বাজাচ্ছেন যাচ্ছেতাই আর তাতেই ইদুঁরের দল পিল পিল করে গা এ গা ধা এ ধা মেলাচ্ছে। কেউ মাথা খাটাচ্ছে না। কেউ অন্য সুর এ কথা বলছে না।
ফিদেল আপনি ঘুমান। আমরা এই অবস্থা দেখবো বলে জেগে থাকি। স্বপ্ন দেখি।
পুনশ্চ: আমি শ্রেণিশত্রু, পাতিবুর্জোয়া, তিনোমূলি বা চাড্ডী নই। আরো খারাপ। আপনারা অযাচিত ভালো। হবেন না। প্লিজ।
----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ