কবির কদর নেই জীবদ্দশায়, কবির কবর দেয়া হয় না।
থাকলে,এপিটাফ কদর দিত/কোন নিষিদ্ধ প্রেমিকার মতো।

mayukh speaks

My photo
kolkata, west bengal, India
A media professional and a wanderer by passion. Blogger and social observer. loves to watch world films and hear different music genre.

Tuesday, October 30, 2018

উপহার

| উপহার |

---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

ওই যে ওই পাহাড়খানা দেখছেন, ওটা বোগলদাবা করে বাড়ি নিয়ে গেলে কেমন হয়? শিশিরভেজা ঘাস থাকবে, নরমমাটি থাকবে নিয়মিত ধসের অপেক্ষায়, পায়ের ছাপ থাকবে কোন বন্যপ্রাণীর বা বিষ্ঠা ও থাকতে পারে৷ আমার জামায় এসবের দাগ ও থাকতে পারে। ছাড়া জামা নজর এলে মেঘ জমতে পারে ওর মুখে।

পাহাড়টার ভালোবাসা ছিল শুনেছি এক নদীর সাথে। সেই কোন সুদূর হিমালয়ের থেকে নদীটা পাহাড়কে দেখবে বলে এসেছিল একবার৷ তারপর রোজ আসতো, প্রতি দিন, অনেক রাত ধরে আসতো।কত জন্ম ধরে ছাপ ছেড়ে যেত। শব্দ করতো গভীর কোন রাতে ছলাৎ ছল, ছলাৎ ছল। ওর শরীরে লেপে যেত আজন্ম পাহাড়ের মাটি, খুচরো অভিমানের পাথর, জ্যোৎস্না ভরা দাম্পত্য রাত, হতাশার কোন বৃদ্ধ গাছের ছাল- জন্মজন্মান্তর ধরে।

নদীটা পাহাড়ের জন্য রোজ একটা করে ভেসে যাওয়া ফুল রেখে যেত। ওই ফুলের কোন নাম নেই। হিমালয়ের কোন বরফের মাঝে নাকি বারো বছর অন্তর ফোটে। নদী যত্ন করে নিচে নিয়ে আসতো এরকমই কিছু ফুল। এভাবে অনেক অনেক ফুল জমতে জমতে একদিন গোটা পাহাড়টা মিষ্টি গন্ধ ছাড়তে শুরু করলো। পাখী আসতে লাগলো, প্রজাপতি, ঈগল, সাধু সন্তের দল, আমরা।

পাহাড় আর নদীর মিশে যাওয়া কোন ক্যানভাসে মেঘ জমেছিল সেদিন। আমরা আসার পর বৃষ্টি ও হল অল্প। আমাদের লাল ভারী পছন্দের রঙ। সেদিন ও লাল রঙ কেবল আমরা নিয়ে এসেছিলাম অনেক দূর থেকে। পাহাড় সেদিন জংলা সবুজ পড়েছিল আর নদী ধুসর গোধূলি। মেঘের ক্যানভাসের অনেকটা আমরা রঙিন করে দিয়েছিলাম। ওপরের ওই সাদাটুকু বাদে। সাদা অংশ ও বেরঙিন পাহাড় নদীর গল্পে সুগন্ধী ফুল এঁকে যায়। নদীতে পা ভেজাতে গেলে ফুল রেখে যায়, প্রেমিকার জন্য।

আমার আর পাহাড় নিয়ে ফেরা হয়নি৷ বৃষ্টি ভেজা পথের বাঁকে ওর হাত ধরতে গিয়ে দেখলাম একটা ভেজা ফুলের গন্ধ। আমার পকেটে কখন যেন নুড়িপাথর রেখে দিয়েছে কে।

©---- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ